Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | শুক্রবার, ৩রা মে ২০২৪, ১৯শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

ঢাবি: কষ্ট লাগে যখন বলে, চলছে কুকুরের কামড়াকামড়ি!

প্রকাশিত: ২৬ জানুয়ারী ২০১৮, ০৪:৩৩

মো: মোতাছিমুল করিম: ঢাবির স্থির চিত্র এটি। যাকে বেদম মারধর করা হচ্ছে সে কোন মায়ের কলিজা ছেড়া ধন, নয়তো কোন বাবার দু-চোখের আলো। নয়তো কোন পরিবারের স্বপ্ন সারথি। অথবা তিনি কোন না কোন পরিবারের একমাত্র সাম্মান। তাকে ঘিরেই যতসব।
 
আর যারা প্রহার করছেন তারাও নিজ পরিবারের কাছে এক একজন জীবন্ত নায়ক। প্রহৃত ছাত্রটির মতই নিজ বাবা মায়ের সম স্বপ্নের ভবিষ্যৎ বাস্তবায়নকারী। কারো সন্তান কারো ভাই।
 
প্রহারকারীরা ঢাবিতে চান্স পেয়েছেন নিশ্চয়ই মেধার জোরেই। অতএব বিবেক বুদ্ধি আছে সে ব্যাপারে সন্দেহের অবকাশ কোথায়! প্রহারকারী এ মেধাবিরা নিজ নিজ এলাকার ছোট ভাইদের নিকট এক একজন আদর্শিক বড় ভাই। অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব।
 
ভেবে দেখবেন কি! আপনার ছোট্ট বোনটি অথবা ভাইটি আপনার সেই ডিসুম ডুসুম যদি টিভিতে লাইভ দেখে তবে আপনার ব্যাপারে কেমন ধারণা হবে!
 
প্রহারকারী আর প্রহৃত ছাড়াও সম্মানিত শিক্ষক মহোদয়রাও এ যজ্ঞের অন্যতম পুরোধা, এখানে তাদেরকেও এড়িয়ে যাওয়ার সাধ্য কোথায়!
 
সাবেক প্রোভিসির সাথে রশি টানাটানি করতে গিয়েই তো সদ্য সাবেক হওয়া ভিসি (ঢাকা কলেজের ছাত্র) সাত কলেজ টেনে এনে ঢাবির অধিভুক্ত করে আগুন জ্বালিয়ে গেছেন। আরেকজন আগুন থামাতে গিয়ে পেশি শক্তির দ্বারস্ত হয়ে গেছেন একটু বেশিই। তাতে আগুন বেড়েছে বৈকি কমেনি।
 
ইতিহাস লিখা হওয়ায় বিজেতাদের পক্ষেই, তাই প্রহৃতদের পক্ষে ফোনের বাটনে আঙ্গুল না হয় নাই চাপলাম। প্রহারকারীদের রঙ্গলীলাই না হয় আজকের বচনের উদ্দেশ্য।
 
একদল আরেক দলকে পেটায়, নারীদের লাঞ্ছনা করে আবার পরস্পর পরস্পরকে দোষ দেয়। ভেবে দেখবেন কি লাঞ্ছনার শিকার যে বোনগুলো আপনাদের শিকার হয়েছে সে বোনগুলো তো আমাদের ঢাবির নিজেদের বোন তাই নয় কি! আর যদি খামচা খামচি করে লালসা মেটানো পারিবারিক শিক্ষা হয়ে থেকে থাকে তাহলে নিজ ঘরে গিয়েই না হয় চালান।
 
ওহে বীরদর্পে ছাত্র পেটানো ছাত্রলীগের (পরিচিত) ভাইয়েরা, ভেবে দেখবেন কি তথাকথিত আদর্শিক বড় গুরুদের আহবানে নিজেদের অধিকার আদায়ে যারা কথা বলছিল (বাড়াবাড়িও বামদের চির সস্বভাব) তাদের গায়ে হাত তুললেন! আপনারা যে এলাকার প্রেরণার বাতিঘর, এলাকার ছোট ভাইদের আদর্শ, আপনাদের হাতে এমন নারী লাঞ্ছনা তাদের কোন প্রেরণা দেবে একটু ভেবে দেখবেন কি! কোন লাজে এলাকায় সুবোধ চুরতে চেহারা প্রদর্শন করবেন!
 
পিতৃ সমতুল্য হে শিক্ষকেরা, পিতামাতা ভরসা করেই আপনাদের কাছে আমাদেরকে সমর্পণ করেছেন। অথচ আপনারা সেই সন্তানদেরকে একজনের বিরুদ্ধে অন্যজনকে লেলিয়ে দেন। নেকড়ের মত ছিড়ে ছিড়ে খায় আপনার সন্তান সমতুল্য একছাত্র অন্য ছাত্রকে। যার দু এক ঘা আপনাদের গায়েও ইচ্ছায় অনিচ্ছায় লেগে যায়! পত্রিকায় হেডলাইন করে শিস্য কর্তৃক প্রহৃত গুরু! কি সেলুকাস!
 
হে মহান শিক্ষা গুরু, যারা আমাদেরকে ঢাবিতে অনেক কিছু শিক্ষা দেয়ার প্রতিভু তাদেরকে বলছি, শিক্ষক হয়ে শিক্ষকদের কলার ধরে টানাটানি, বুকে ফ্লায়িং কিক সবই তো আপনাদের শিখানো পন্থা। এবার যদি একটু আত্মোপলুব্ধি হয় তা কিন্তু মন্দ নয়।
 
শিক্ষকদের গোয়ার্তুমি আর লেজুরভিত্তিক ছাত্র অপরাজনীতির ফল এটি। যার বলি সাধারণ ছাত্রছাত্রী, লাঞ্ছনার শিকার আমাদের বোনেরা, আর শিক্ষকদের গায়ে হাত তুলার মত দু:সাহসিক কাজ। যা গর্হিত নিন্দিত ক্ষমাযোগ্য নয়।
 
ছাত্ররাজনীতির হে মহান প্রতিভুরা, ছাত্রদের অধিকার আদায়ে সচেষ্ট না হয়ে এমন লেজুরভিত্তিক বেহায়াপনা যতদিন না ছাড়তে পারবেন যতদিন স্ব অধিকারে সচেষ্ট না হয়ে রাজনৈতিক পা চাটা গোলাম হয়ে থাকবেন ততদিন এভাবেই কামড়াকামড়ি চলবে।
 
সেই কামড়াকামড়িত আজকে যার শিকার হয়তো অন্য কেহ, নিকট ভবিষ্যতে এই কামড়া কামড়ি আর খামচা খামচির শিকার যে হবে না আমার বোন , অথবা আমার সন্তান অথবা শিক্ষক আপনারা তার নিশ্চয়তা কে দেবে!
 
শুভ বুদ্ধির উদয় হউক। স্ব অধিকার আদায়ে ভেঙ্গে যাক লেজুরবৃত্তি। আত্মমর্যাদা ফিরে আসুক ছাত্র শিক্ষক সকলের মননে।
 
 
লেখক: মো: মোতাছিমুল করিম
শিক্ষার্থী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
 
 
 
ঢাকা, ২৫ জানুয়ারি (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ