শাহেদুর রহমান রনি : বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর ছেলেমেয়ের জীবনটা বেশ বদলে যায়। বাস্তবতার সাথে মানিয়ে নিতে গিয়ে তারা কেমন যেন যান্ত্রিক হয়ে উঠে। তারা শিখে যায় বাবা-মাকে ছেড়ে নতুন একটি শহরে, নতুন অপরিচিত জায়গায়, অপরিচিত মুখগুলোর সাথে মানিয়ে নিতে।
.
যে ছেলেটা বা মেয়েটা আগে মাছ, মাংসের বড় বড় টুকরা ছাড়া ভাত খেতো না, সে এখন ভার্সিটির হলের অতিক্ষুদ্র টুকরো দিয়ে খেতে শিখে গেছে। যে আগে খাবারে ৩/৪ আইটেম ছাড়া খেতো না, তাকে এখন মাঝে মাঝে শুধুমাত্র হলের ডালের পানি দিয়ে খেয়ে থাকতে হয়। যে আগে মা খাইয়ে না দিলে খেত না, সে এখন একা খেতে শিখে গেছে।
.
যে কোনদিন ঘরের কোন কাজ করে নি, যার নিজের জামাটা সবসময় কাজের লোকটি ধুয়ে দিত, সে এখন নিজের কাপড় নিজে ধুতে শিখে গেছে, সে এখন নিজের রুমটা গুছিয়ে রাখতে শিখে গেছে, রুম পরিষ্কার করতে শিখে গেছে।
.
যে ছেলেটা বা মেয়েটা আগে বাবার দামী গাড়ি ছাড়া কোথাও যেত না, সে এখন লোকাল বাসে এবং পায়ে হেঁটে চলতে শিখে গেছে।
.
যে আগে অসুস্হ হলেই ভেঙ্গে পড়তো, বিছানা থেকেই উঠতে চাইতো না, মা-বাবার উপর নির্ভরশীল ছিল, সে এখন নিজের যত্ন নিজে নিতে শিখে গেছে। বুঝে গেছে অসুস্থ হলেও দোকান থেকে ওষুধটা আমাকেই আনতে হবে, কালকের ক্লাস টেস্ট এর পড়া, ল্যাব রিপোর্ট আমাকেই শেষ করতে হবে।
যাকে আগে মা-বাবার জোর করে ক্লাসে পাঠানো লাগতো, সে এখন নিজেই ক্লাসে দৌড়ায় এটেনডেন্স এর জন্য।
.
ভার্সিটি জীবন বড়ই রসে ভরা প্যারাদায়ক জীবন। এজীবনে এসে যাদের বিবেকবোধ রয়েছে কীভাবে বিবেকহীন দের সাথে মানিয়ে চলতে হয় তাও শিখতে হয়। এজীবনে চরম খারাপ থাকলেও, মুখে হাসি নিয়ে ভালো আছি বলতে জানতে হয়, অলরাউন্ডার হতে জানতে হয়, নিজের কাজগুলো নিজেই করতে শিখতে হয়। হতাশ হলেও, বারবার হোচঁট খেয়ে পড়ে গেলেও হাসি দিয়ে উঠে দাঁড়াতে হয়। জোর করে ভালো থাকতে শিখতে হয়। আর না হয় ভালো থাকার অভিনয় করতে হয়।
লেখক, শাহেদুর রহমান রনি
১ম বর্ষ, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
ঢাকা, ১৬ নভেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//জেএন
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: