
সাতক্ষীরা সলাইভ: এই দৃশ্য আসলেই জাতির বিবেককে নাড়া দেয়। কিন্তু প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করছে। এগিয়ে আসছে না কেউ। ঘটনাটি সাতক্ষীরার। ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজিতে কোচিং না করায় ল্যাব বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. সোলাইমানকে শারীরিক নির্যাতন করেছে সংশ্লিস্টরা। এই অভিযোগ উঠেছে সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার নলতায় অবস্থিত ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির বিরুদ্ধে ।
এলাকাবাসী জানান, শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টায় ইনস্টিটিউটের ছাত্র হোস্টেলের ৪০৭ নম্বর রুমে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এসময় ওই শিক্ষার্থীর শরীরের বিভিন্ন অংশে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে থেঁতলে দেওয়া হয়। একই সাথে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় রাতেই তাকে দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে বলে সংশ্লিস্টরা জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে আহত শিক্ষার্থী সোলাইমান হোসেন জানান আমার অপরাধ আমি কোচিং এ যাইনি। তার গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী জেলা বাউফল উপজেলার দাসপাড়া ইউনিয়নের খেজুবাড়িয়া। তার পিতার নাম মো. হানিফ।
এ বিষয়ে রেডিওলজি বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী রিপনসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির রেডিওলজি বিভাগের গেস্ট টিচার সাঈদ হাসান ভাইভায় ফেল করিয়ে দেওয়া ও পরীক্ষার খাতায় লিখতে না দেওয়াসহ বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের তার কাছে কোচিং করতে বাধ্য করেন। তারা তার কোচিং এ না গেলে তিনি নানান ভাবে হেনস্তা করেন শিক্ষার্থীদেরকে। তার এসব কারণে অনেকেই কোচিং এ যেত না।
এদিকে আহত শিক্ষার্থী সোলাইমান তার কাছে কোচিং না করায় শুক্রবার রাতে রেডিওলজি বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান ও একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের রশিদ খান, ম্যাটসের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আবু বক্কর রানাসহ কয়েকজনকে দিয়ে তাকে ছাত্র হোস্টেলের ৪০৭নং রুমে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়।
আহত সোলাইমান জানান, এসময় নাহিদ হাসান ও রশিদ খানসহ আরও কয়েকজন সোলাইমানের হাত পা মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে লোহার রড দিয়ে উপর্যুপরি পিটিয়ে থেঁতলে দেয়। ব্যথায় সোলায়মান কথাও ঠিক মতো বলতে পারছিলো না।
আহত শিক্ষার্থী সোলাইমান আরো জানান, ছুটির পর গতকালই তিনি হোস্টেলে আসেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে ৪০৭নং রুমে ডেকে নিয়ে ভয়াবহ নির্যাতন করা হয়। তিনি অভিযোগ করে বলেন, রেডিওলজি বিভাগের গেস্ট টিচার সাঈদ হাসান ভাইভায় ফেল করিয়ে দেওয়া ও পরীক্ষার খাতায় লিখতে না দেওয়াসহ বিভিন্ন ভয় ভীতি দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের তার কাছে কোচিং করতে বাধ্য করেন।
এছাড়া আরো অনেক শিক্ষার্থী জানান, পরীক্ষার সময় তাকে নগদ অর্থও দেওয়া লাগে শিক্ষার্থীদের। তিনি (সোলাইমান) তার কাছে কোচিং না করায় তাকে এ নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। তিনি জানান, এ ঘটনায় তিনি তার কলেজের অধ্যক্ষের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেছেন।
এদিকে তাকে দেখতে শনিবার সকালে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আফম রুহুল হক দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। তিনিও তাকে আশ্বস্ত করেছেন এ ব্যাপারে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোন অন্যায় করে থাকলে তাকে ছাড় দেয়া হবে না। শাস্তি তাকে পেতেই হবে।
ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির অধ্যক্ষ ফারুকুজ্জামান এ বিষয়ে জানান, নির্যাতনের ঘটনাটি সত্য। এজন্য দ্রুতই তদন্ত কমিটি গঠন পূর্বক পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের অভিযোগগুলোও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যেই অন্যায় করুক তাকে কোন অবস্থাতেই ছেড়ে দেয়া হবে না। শাস্তি পেতেই হবে।
ঢাকা, ১৪ মে (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিআইটি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: