লাইভ প্রতিবেদক: অবশেষে মুখ খুললেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম। তিনি যাবার বেলায় দুলাইন কথা বলে চমক দেখিয়ে গেলেন। বললেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে জোরপূর্বক গুম ও নিখোঁজদের বিষয়ে যেসব অভিযোগ আছে তা সরকারকে খতিয়ে দেখা উচিত। এ ব্যাপারে কোন ছাড় দেয়া ঠিক নয়। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের বিদায়ী চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম মনে করেন জোরপূর্বক গুম ও নিখোঁজদের বিষয়ে তদন্ত না হলে আশকারা পেয়ে অনেকেই বড় কোন অপরাধ ঘটাতে পরে। তাঁর মতে, কমিশন যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ স্বপ্রণোদিত হয়ে তদন্ত করতে পারে, সে ক্ষেত্রে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির আরও উন্নতি হবে। ভাল হবে।
রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে বিদায়ী কমিশনের তিন বছর কার্যক্রমের সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ সব কথা বলেন তিনি। তিন বছরমেয়াদি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আজ। নাছিমা বেগম বলেন, গুমের অভিযোগ আসলে খুঁজে বের করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের।
কমিশনকে আরও শক্তিশালী করা হোক। এর জন্য পৃথক কোনো কমিশন গঠনের প্রয়োজন নেই। তিনি বলেন, গত তিন বছরে মানবাধিকার কমিশনে যেসব কাজ করেছি তার প্রমাণ রেখে গেলাম। আগামী কমিশন এখান থেকে কিছু দিকনির্দেশনা পাবে। পঞ্চম কমিশনের তিন বছরের কার্যক্রমের সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরে চেয়ারম্যান বলেন, আমরা একটি ধারা তৈরি করেছি। আগে সরকারকে প্রতিবেদন দিতে বললেও তারা অনেক ক্ষেত্রেই সেটা দিত না। এখন সরকারকে বলেছি প্রতিবেদন দিতে, যদি না দেয় তখন কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।
নাছিমা বেগম বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে সারাদেশে একটি জাগরণ তৈরি করতে চেয়েছিলাম। এ ছাড়া মানবাধিকারকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে চেয়েছি, এজন্য কাজও করেছি; কিন্তু বাস্তবায়ন করতে পারিনি। রাজনৈতিক দলগুলো কর্মসূচি পালনে হামলা ও নির্যাতনের শিকার হলে মানবাধিকারের লঙ্ঘন কিনা জানতে চাইলে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সবার রয়েছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক রাজনৈতিক সহায়তা প্রয়োজন। এসব হামলার বিষয়ে ভুক্তভোগীর অভিযোগ না নেওয়া হলে সেটি নিশ্চয়ই মানবাধিকার লঙ্ঘন। সবার বিচার চাওয়া ও পাওয়ার অধিকার আছে। ২০১২ থেকে এখন পর্যন্ত ১১৯টি গুমের অভিযোগ কমিশনে এসেছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এর মধ্যে নিখোঁজ বা গুম থেকে ফেরত এসেছেন ২৮ জন ও গ্রেপ্তার হয়েছেন ৩৩ জন। ৬২টি অভিযোগ সরাসরি দাখিল হয়েছে।
বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন থেকে ৪৮টি অভিযোগ এসেছে। আর নিজেরা স্বপ্রণোদিত হয়ে ৯টি অভিযোগ গ্রহণ করেছি। আইনের সীমাবদ্ধতা, সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রতিবেদন না পাওয়াকে নিজেদের কাজের বড় বাধা হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।
এ সময় মানবাধিকার কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, সদস্য অ্যাডভোকেট তৌফিকা করিম, জেসমিন আরা বেগম, চিংকিউ রোয়াজাসহ কমিশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তবে তারা সরকারের বিরুদ্ধে আকারে ইঙ্গিতে কথা বলেছেন। সরাসরি কোন কথা বলেননি।
ঢাকা, ২৩ সেপ্টেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিএসসি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: