Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১২ই বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

বৈশাখ উদযাপনে ভিনদেশীদের উচ্ছাস, সাজুগুজু

প্রকাশিত: ১৫ এপ্রিল ২০১৭, ০১:৪৬


আব্দুল্লাহ মজুমদার : আমরাও কুছু কুছু বাংলা পারে। শুভ নববর্ষ। তোমাকে জানাই। হ্যাপি বাংলা নিউ বর্ষ। তোমরা ভালতো! সবে গুড আছেন। এভাবেই বাংলা আর ইংরেজির সংমিশ্রনে কথা বলছিলেন বৃটিশ নাগরিক রিসর্ন পার্ড।

তিনি একটি বিদেশী মিশনে কর্মরত আছেন। বৈশাখী আমেজ তার পুরো গায়ে। সেজেছেন বাংলার তামাল-দামাল তরুণীদের মতো। রিসর্ন পার্ড তার অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে ক্যাম্পাসলাইভকে বললেন, এটা যেন হাজারো বছরের চেনা একটি ঐতিহ্য। রমনা বটমূলে বেশাখী উদযাপনে আসেন তিনি। তার সফ কথা আমাদের দেশেও বর্ষ বরণ হয়। তবে এতো ঘটা করে নয়। এ এক ভিন্ন স্বাদ, ভিন্ন অনুভূতি।

এটা বলে কয়ে শেষ করবার নয়। পয়লা বৈশাখ উদযাপনে নগরীতে ঢল নামে লাখো মানুষের। ছোট-বড় সবাই মিলিত হয়ে উদযাপন করছেন বাঙালির প্রাণের এ উৎসব। বৈশাখী উৎসবে একাত্মতা পোষণ করে যোগ দিয়েছেন বিদেশি নাগরিকরাও। তারা খুব হাসি আর খুশিতে উদযাপন করেছেন এই বিশেষ দিনটি।

রমনা বটমূল, চারুকলা, শাহবাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় লাখো বাঙালির মতো রঙিন পোশাকে নতুন বছর উদযাপন করছেন অনেক বিদেশি। শুধু এ উৎসবে যোগ দিতেই বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশ এসেছেন তাঁরা। অনেকে ব্যবসায়িক কাজে বাংলাদেশে আসার পর পয়লা বৈশাখের আনন্দ উপভোগ করছেন।

 

বাঙালি নারীদের মতো করে শাড়ি পরে, খোঁপায় ফুল, শুভ নববর্ষ লেখা আলপনা দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বিদেশি নারীরা। বিদেশিদের সঙ্গে আনন্দ করতে ও সেলফি নিতে দেখা যায় বাঙালি তরুণ-তরুণীদেরও।


সুইডেনের নাগরিক মিলান স্টুয়ার্ড ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, ‘আমি রাত থেকে উদগ্রীব ছিলাম যে এই উৎসবে যোগদানের জন্যে। মনটা যেন অস্থির ছিল। খুব আগ্রহ নিয়ে এখানে এসেছি। পয়লা বৈশাখ, মঙ্গল শোভাযাত্রা, রবীন্দ্রনাথ-নজরুল এসব সম্পর্কে আমি ইন্টারনেটে অনেক পড়েছি। এখন এসব দেখে ভালো লাগছে।’ মনে হয়েছে এদেশে সংস্কৃতির চর্চা খুর ঘটা করেই হয়।

স্টুয়ার্ড আরো বলেন, ‘আমি অনেক দেশের ঐতিহ্যবাহী উৎসবে অংশ নিয়েছি। কিন্তু এত কালারফুল, কালচার্ড এবং আবেগী উৎসব খুব কমই দেখেছি। এখানের মানুষগুলো খুব আবেগপ্রবণ। তারা খুবই সহজ সরল।

জুলিয়া ফ্রঁসেস নামের ফ্রান্সের এক নাগরিক এসেছেন ব্যবসায়িক কাজে। উঠেছেন গুলশানে। স্বামী ও ছোট একটি মেয়ে নিয়ে উদযাপন করতে এসেছেন পয়লা বৈশাখ। দোভাষীর মাধ্যমে এনটিভি অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের পয়লা বৈশাখের উদযাপন অসাধারণ লেগেছে। কারণ, ইংরেজি নববর্ষ পালনে আমাদের খাবার বা পোশাক নিয়ে কোনো মাথাব্যথা থাকে না। এখানকার মানুষ পোশাক, খাবার, সংস্কৃতি সবকিছু উজাড় করেই দিনটি পালন করে। পোশাক, খাবার ও সংস্কৃতি বৈশাখী আনন্দতে ভিন্নমাত্রা যোগ হয়েছে।’

জুলিয়ার স্বামী ড্যানিয়েল ফ্রঁসেস বলেন, ‘পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমে বাংলাদেশ সম্পর্কে অনেক খারাপ প্রচারণা রয়েছে। আমরা জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতার ঘটনা সম্পর্কে জেনেছি। কিন্তু পয়লা বৈশাখের মতো অসাম্প্রদায়িক উৎসব এ দেশে উদযাপিত হয়, জানতে পারলে পশ্চিমারা সংবাদমাধ্যমের প্রচারণা বিশ্বাস করত না। পয়লা বৈশাখ আলাদা ধরনের একটি উৎসব। এটা পালন করতে পেরে আমি খুশি।’ আমরা আমাদের দেশে এই সংস্কৃতির পক্ষে প্রচারণা চালাবো।

বাংলাদেশে নিরাপত্তাজনিত কোনো শঙ্কা অনুভব করছেন কি না, জানতে চাইলে ড্যানিয়েল জানান, যে নিরাপত্তা চোখে পড়ছে তা দেখে মনে হচ্ছে না কারো নিরাপত্তা শঙ্কা অনুভব করা উচিত। এমন নিরাপত্তা ব্যবস্থা সত্যিই প্রশংসনীয়। এটা ভাল লাগছে পুলিশ বিভিন্ন ও পানীয় সরবরাহ করছে।

এ ছাড়া সুইডেন থেকে আসা মিলান স্টুয়ার্ড ক্যম্পাসলাইভকে বলেন, ‘আমি রাত থেকে উদগ্রীব ছিলাম যে এই উৎসবে শামিল হব। খুব আগ্রহ নিয়ে এখানে এসেছি। পয়লা বৈশাখ, মঙ্গল শোভাযাত্রা, রবীন্দ্রনাথ-নজরুল এসব সম্পর্কে আমি ইন্টারনেটে অনেক পড়েছি। এখন এসব দেখে যাব। ভালো লাগছে।’ আমি এখন খুবই বিশ্বাসী। এদেশের তরুণ-তরুণীরা অনেক কিছুই করতে পারবে বলে বিশ্বাস লাগছে।

স্টুয়ার্ড আরো বলেন, ‘আমি অনেক দেশের ঐতিহ্যবাহী উৎসবে অংশ নিয়েছি। কিন্তু এত কালারফুল, কালচার্ড এবং আবেগী উৎসব খুব কমই দেখেছি। এখানের মানুষগুলো খুব আবেগপ্রবণ। কোন ভয় ভীতি লাগছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, নো প্রবলেশ, উই আর ওকে।
আমরা ইনজয় করছি। এক পর্যায়ে বললেন শুভ নাববর্ষ তোমাকে।

দিরাস মালা এসেছেন সিঙ্গাপুর থেকে। তিনি উন্নয়ন কর্মী। তার অনূভূতি জানতে চাইলে তিনি ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, উই আর ইনজইং, শুভ বাংলা নব বর্ষ। তোমরা ভাল। ক্যামন আছ! এজাতীয় ভাঙ্গা ভাঙ্গা বাংলা বলে অনেককেই তিনি হাসালেন।

রিসিক মার্ক। তিনি এসছেন মা বাবার সঙ্গে। বয়স ১৬/১৭। তিনি মেলায় এস বটমূলের কাছে ঘোড়ায় চড়ে বেশ মজা করেছেন। অত্যন্ত আনন্দ আর ফুর্তিতেই তারা ২ থেকে ৩ ঘন্টা কাটান। দুই একটা বাংলা বলে তরণি-তরুণীদের হাসিয়েছেন। নিজেও হেসেছেন।

 

ঢাকা, ১৪ এপ্রিল (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এজেড


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ