ইব্রাহিম খলিল, সাতক্ষীরা: বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে আশাশুনি শ্রীউলা ও প্রতাপনগর ইউনিয়ন। নদীর পানির তোড়ে ভেসে গেছে গোটা ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চল। ৩ মাস পরে পুুরনো প্লাবিত এলাকাকে ছাড়িয়ে নতুন এলাকায় পানি ঢুকে হাজার হাজার ঘরবাড়ি ও মৎস্য ঘের প্লাবন শুরু হয়েছে।
এ ইউনিয়নের ২২গ্রাম, খেলার মাঠ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদ্রাসা, বসতবাড়িসহ ফসলের জমি, হাট-বাজার সামাজিক-সাংস্কৃতিকপ্রতিষ্ঠান। আম্ফানের তান্ডবে প্রবল স্রোত আর ঢেউয়ের কারণে নদীর পাড় এলাকায় ভাঙনেরতীব্রতা আরও বেড়ে গেছে।
জানা গেছে, আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা ও প্রতাপনর ইউনিয়নের হাজার হাজারঘরবাড়ি গত ২০ মে থেকে ড়ী বাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয়েছে গ্রাম অঞ্চল।
বাঁধ সংস্কারে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এগিয়ে আসলেও গত ঈদ-উল আযহার পূর্বে তারা এলাকা ছেড়েচলে গেছেন। চেয়ারম্যান মেম্বারের নেতৃত্বে হাজার হাজার মানুষ বাঁধ রক্ষার্থে আপ্রাণ চেষ্টাকরে আসছেন। এতে ৩টি ইউনিয়নের কিছু অংশের মানুষ প্রাথমিক ভাবে রক্ষা পেয়েছিল। কিন্তু গতকয়েক দিনে নদীর পানি ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পাওয়া এবং মুষুল ধারা বৃষ্টিপাতের ফলে এলাকারসব রাস্তা গুলো ভেঙ্গে জোয়ারের পানি শ্রীউলার ২২টা গ্রামের মানুষ
হাবুডুবু খাচ্ছে।
যার ফলে মেইন সড়কের শ্রীউলা অংশের উপর দিয়ে পানি অপর পাশে প্রবেশ করায় সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা হুমকীতে পড়েছে। এতে নতুন করে গ্রামে পানি প্রবেশ করছে। যার ফলে পানিতে দিন কাটছেহাজার হাজার মানুষের। শ্রীউলা ইউনিয়নের ২০ মে’র পর থেকে বাঁধ রক্ষার আপ্রাণ চেষ্টা করেওশেষ রক্ষা করা যায়নি। বাংলাদেশ সেনা বাহিনীও এলাকা ত্যাগ করেছেন। তারা শীত মৌসুমেবাঁধ নির্মানের জন্য আবার ফিরবেন বলে জানাগেছ।
গত ২ দিনের নদীর পানির চাপ এতটা বেড়েছে যে, আগের তুলনায় বেশী গতিতে পানি ভিতরে ঢুকে ইতিমধ্যে শ্রীউলার ২২টা গ্রামেই পানি ঢুকেছে। ফলে ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ চরম বিপাকে পড়েছেন। দুইদিন ধরে নেই বিদুৎ সংযোগ। যার ফলে অনেক পরিবারের না খেয়ে জীবন যাপন করছে।
লাঙ্গলদাড়িয়া গ্রামের শহিদুল ইসলাম ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, আমার ঘরের ভিতরে পানি। রান্নার কোন জায়গা নেই। এতো দিন রাইসকুকারে কোন ভাবে রান্না করে খাচ্ছিলাম। বিদুৎ না থাকায় আমরা দুইদিন ধরে শুকনা খাবার খাচ্ছি।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা পল্লী বিদুৎ এর আশাশুনিজোনাল অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নৃপেন্দ্র কুমার ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, কিছু ঘর ভেঙ্গে যাওয়ায় আশাশুনি উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও এর অনুমতিক্রমে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বিদুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে। কত দিনের মধ্যে সংযোগ চালু হবে এ বিষয়ে তিনি বলতে পারেন নি।
বাংলাদেশ মানবাধিকার ফাউন্ডেশন (বিএমএফ) জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফুজ্জামান আপন ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, শ্রীউলার নদীর বাঁধ নির্মান নিয়ে কর্তৃপক্ষের কোন তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। দ্রুত বাধঁ নির্মাণ না করলে নদী গর্ভে হারিয়ে যাওয়ার সম্ভবনা হচ্ছে এ ইউনিয়ন।
এখানে মানবাধিকার ক্ষুন্ন হচ্ছে। পল্লী বিদুৎ সমিতির উদ্ধতন কর্মকর্তার দৃষ্টিআর্কষন করছি। দূরত বাধঁ নির্মাণ ও জরুরি বিদুৎ সংযোগ চালু করার আকুল অনুরোধ এলাকাবাসীর।
আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর আলিফ রেজা ক্যাম্পাসলরাইভকে জানান, কিছু ঘর ভেঙ্গে যাওয়ায় বিদুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সাথে কথা বলে যেসব এলাকায় বিদুৎ দেওয়া সম্ভব দ্রুত বিদুৎ দেওয়ার কথা বলছি। বিদুৎ নাই চুুলার মধ্যে পানি শুকনা খাবারে দিন কাটাচ্ছে শ্রীউলা ও প্রতাপ নগরের মানুষ।
এলাকা বাসীর দাবি জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল স্যারের নির্দেশে যারা পানি বন্দি আছে তাদের দ্রুত আশ্রায় কেন্দ্রে নেওয়ার কথা বলেছেন।এবং খাবারের ব্যবস্থা করতে বলছে।
ঢাকা, ২৩ আগস্ট (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: