Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | শুক্রবার, ১৭ই মে ২০২৪, ৩রা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com
‘অর্থনৈতিক উত্তরণ ও ভবিষ্যৎ পথপরিক্রমা’

শিক্ষায় বরাদ্দ: আরো ৫ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা...

প্রকাশিত: ১২ জুন ২০২০, ০২:৫৪

লাইভ প্রতিবেদক: সবার জন্যে শিক্ষা। এই স্লোগানকে সামনে রেখে নীতিগত কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে শিক্ষাবিদরা বলেছেন, কেবল বাজেট পেশ করলেই হবে না এর যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে। অন্যতারয় সরকারের ভাল উদ্যেগ ভেস্তে যাবে। জনগণের সকল দিক বিবেচনায় এবারের বাজেটে নতুন অর্থবছরে (২০২০-২১) প্রাথমিক এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় মিলে এবার ৬৬ হাজার ৪০১ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। চলতি ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৬১ হাজার ১১৪ কোটি টাকা। সেই হিসেবে গত বছরের বরাদ্দের চেয়ে এবার ৫ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা বেশি প্রস্তাব করা হয়। আসলেই এটি একটি সাহসি উদ্যোগ।

বৃহস্পতিবার ‘অর্থনৈতিক উত্তরণ ও ভবিষ্যৎ পথপরিক্রমা’ শিরোনামে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে এ প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে প্রাথমিক ও গণশিক্ষায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২৪ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। যা ২০১৯-২০ অর্থবছরে ছিল ২৪ হাজার ৪০ কোটি টাকা। গত বছরের বাজেটের চেয়ে এবার ৯০০ কোটি টাকা বেশি প্রস্তাব করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষায় বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩৩ হাজার ১১৭ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ছিল ২৯ হাজার ৬২৪ কোটি টাকা। আর এবার ৩ হাজার ৪৯৩ কোটি টাকা বেশি প্রস্তাব করা হয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষায় বাজেট বরাদ্দের তথ্য তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষার জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৮ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবছরের ছিল ৭ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা। আর এবার ৮৮৪ কোটি টাকা বেশি প্রস্তাব করা হয়েছে। সবার জন্য গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের বিপরীতে অনেক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

মানসম্পন্ন প্রাথমিক শিক্ষা:

অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার প্রসারে আমরা ইতোমধ্যে অনেকটা অগ্রসর হয়েছি। এখন আমরা মনোযোগ দিতে চাই জীবনমানে মৌলিক পরিবর্তন আনার উপযোগী শিক্ষা এবং বিদ্যালয়ে শিক্ষার উন্নত পরিবেশের দিকে। আমরা মনে করি জীবনের শুরুতে একটি শিশু যদি ব্যক্তিগত ও পারিপার্শ্বিক পরিচ্ছন্নতা, নৈতিকতা, শৃঙ্খলা ও দায়িত্ববোধ, কর্মনৈপুণ্য ও পারস্পরিক সহমর্মিতার বোধ নিয়ে বেড়ে উঠে সে শিশু হয়ে উঠতে পারে উন্নত, সুখী ও সমৃদ্ধ দেশ গঠনের রূপকার। শিশুদের উপযোগী করে এসব মৌলিক শিক্ষা প্রদানের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রমের উন্নয়ন প্রয়োজন।

তিনি বলেন, বর্ধিত চাহিদার নিরিখে আমরা আমাদের চলমান কার্যক্রম-যেমন উপবৃত্তি, পাঠ্যপুস্তক ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, স্কুল ফিডিং কার্যক্রম ইত্যাদির পরিধি বাড়াবো। পাশাপাশি, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উন্নত শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে ছেলে ও মেয়েদের জন্য পৃথক ওয়াশব্লকসহ নতুন নতুন প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ, শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষক কক্ষ, বিদ্যালয়ে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ ও খেলার সামগ্রী বিতরণ করা হবে। আগের ধারাবাহিকতায় বিদ্যালয়বিহীন এলাকায় আরও প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করবো

অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সব ইউনিয়ন ও কয়েকটি শহরে আইসিটি নির্ভর কমিউনিটি লার্নিং সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হবে। জেলায় জীবিকায়ন ও জীবনব্যাপী শিখনকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা আছে। আমরা শিক্ষকদের জন্য চলমান প্রশিক্ষণের বাইরে ইংরেজি ভাষায় দক্ষতামূলক প্রশিক্ষণ এবং ছাত্রদের জন্য গণিত অলিম্পিয়াডের কৌশল প্রয়োগ করে গণিত ভীতি দূর করার উদ্যোগ নিয়েছি।

মানসম্মত মাধ্যমিক শিক্ষা:

অর্থমন্ত্রী বলেন, মাধ্যমিক পর্যায়ে মেধা-মূল্যায়ন, শিক্ষা কার্যক্রমে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার, বিজ্ঞান শিক্ষার সুযোগ প্রসার এবং শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নের বিষয়টি বর্তমানে প্রাধান্য পাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও পেতে থাকবে। বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় মাল্টিমিডিয়াসহ শ্রেণিকক্ষ, ল্যাংগুয়েজ-কাম-আইসিটি ল্যাব, হোস্টেল নির্মাণ ও প্রয়োজনীয় আসবাব ও সরঞ্জামাদি সরবরাহ করা হবে। মহাবিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসাসহ স্বল্প সময়-ব্যয়-যাতায়াতের মাধ্যমে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সেবা প্রদানের উদ্ভাবনমূলক ধারণার পাইলটিং করা হচ্ছে। প্রশ্নপত্র প্রণয়নে গোপনীয়তা নিশ্চিত করতে সব বোর্ডের সমন্বিত উদ্যোগে প্রশ্নব্যাংক তৈরির চেষ্টা করছি।

কর্মসংস্থানবান্ধব কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা:

দেশে প্রতি বছর আনুমানিক ২০ লাখ লোক শ্রমবাজারে প্রবেশ করছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, শ্রমবাজারে আসা সব কর্মী দক্ষ নয়। ফলে দেশে বিপুল শ্রমশক্তি থাকা সত্ত্বেও দেশিয় শিল্পে দক্ষ শ্রমিকের জন্য আমাদের প্রতিবেশী দেশের কর্মীদের ওপর নির্ভর করতে হয়। অন্যদিকে, দক্ষতার ঘাটতির কারণে প্রবাসে বাংলাদেশি কর্মীরা যথাযথ মজুরি পায় না। অভিবাসী শ্রমিকদের সংখ্যানুপাতে বাংলাদেশে প্রবাস আয় প্রবাহ তুলনামূলকভাবে কম। বস্তুত, আধুনিক ও বস্তুনিষ্ঠ মাদ্রাসা শিক্ষাও দীর্ঘমেয়াদে মধ্যপ্রাচ্যসহ আরব দেশগুলোতে মানসম্মত কর্মসংস্থানের সুযোগ লাভের ক্ষেত্রে অনুঘটক হিসেবে কাজ করতে পারে। এসব দিকে লক্ষ্য রেখে কর্মসংস্থানবান্ধব কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার সুযোগ বাড়ানো, এ ধরনের শিক্ষার প্রতি আগ্রহ তৈরি করা এবং মাদ্রাসা শিক্ষার আধুনিকায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে।

ঢাকা, ১১ জুন (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিএসসি

 


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ