Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | রবিবার, ২৮শে এপ্রিল ২০২৪, ১৫ই বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

পদ্মা সেতু প্রকল্পের নামফলক উন্মোচন করলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১৫ অক্টোবার ২০১৮, ০০:৩৯

লাইভ প্রতিবেদক: পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের নাম ফলক উম্মোচন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার সুইচটিপে এ প্রকল্পের নাম ফলক উম্মোচন করেন তিনি। একই সময়ে আরও কয়েকটি প্রকল্পেরও উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা। এরপর দোয়া এবং মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে সোয়া ১১টায় তিনি মূল মঞ্চে পৌঁছান। তিনি যে কয়েকটি প্রকল্প উদ্বোধন করেন তার মডেলগুলো ঘুরে ঘুরে দেখেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছি। দেশ সেবার সুযোগ পেয়ে বঙ্গবন্ধুর ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়ার অসমাপ্ত কাজে হাত নিয়েছি। এলাকাবাসীর কাছে দোয়া চেয়ে তিনি বলেন, এই পদ্মা সেতু নির্মাণে যারা বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল, যারা এই সেতু বন্ধ করার ষড়যন্ত্র করেছে সেতু বাস্তবায়নের মধ্যে দিয়ে তাদের যেন উপযুক্ত জবাব দিতে পারি।

শেখ হাসিনা বলেন, এই পদ্মা সেতুর কারণে আমার ছেলে-মেয়ে, আমার ছোট বোন রেহানার ছেলে-মেয়েসহ গোটা পরিবারকে মিথ্যা অপবাদ দেয়ায় মানসিক যন্ত্রণা পোহাতে হয়েছে। সবাই একটা অশান্তির মধ্যে দিন কাটিয়েছে। আমাদের জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে হেয় করা হয়েছে। ড. ইউনূসের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, যারা গরীবের ওপর জুলুম নির্যাতন করে সেই সুদখোর কখনও দেশকে ভালোবাসতে পারে না। তারা দেশের উন্নতি চায় না।

এরআগে প্রধানমন্ত্রী সকাল ১০টায় তেজগাঁও বিমানবন্দরে পৌঁছে তেজগাঁও এয়ার মুভমেন্ট ফ্লাইটের নবনির্মিত ‘ভিভিআইপি কমপ্লেক্স’ এর উদ্বোধন করেন। এর পর তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারে সাড়ে ১০টায় মুন্সীগঞ্জ জেলার মাওয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। সেখানে পৌঁছে তিনি পদ্মা সেতুর নামফলক উম্মোচন করেন।

এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী এন-৮ মহাসড়কের ঢাকা-মাওয়া এবং পাঁচ্চর-ভাঙ্গা অংশের অগ্রগতি পরিদর্শন (মাওয়া প্রান্ত), পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন (মাওয়া প্রান্ত), মূল নদীশাসন কাজ সংলগ্ন স্থায়ী নদীতীর প্রতিরক্ষামূলক কাজের উদ্বোধন ও মোনাজাত এবংপদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি পরিদর্শন করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ড. ইউনুস বেআইনিভাবে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদে ছিলেন। তাকে বলার পরও তিনি সরলেন না। উল্টো সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলা করলেন। মামলায় হেরে আমেরিকায় যান। সেখানে তার প্ররোচণায় তখনকার বিশ্বব্যাংক প্রধান এ প্রকল্পের অর্থ বন্ধে অর্ডার দিয়ে যান।

রবিবার মুন্সিগঞ্জের মাওয়াপ্রান্তে পদ্মাসেতুর নাম ফলক উন্মোচনকালে এক সুধী সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘গ্রামীণ ব্যাংকের আইনে আছে, ৬০ বছর পর্যন্ত ব্যাংকের এমডি থাকতে পারবেন। কিন্তু ড. ইউনুস কোনো অনুমোদন ছাড়াই ৭০ বছর পর্যন্ত অর্থাৎ ১০ বছর বেশি এমডির পদে থাকেন। সব সুযোগ সুবিধাও ভোগ করেন। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তাকে একটি চিঠি দেওয়া হয়। অর্থমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী- এই দুইজন ড. ইউনুসের সঙ্গে দেখা করেন এবং তাকে বলা হয়, আপনি ব্যাংকের এমিরেটাস অ্যাডভাইজার হিসেবে থাকেন।’

‘কিন্তু তিনি আমাদের কথা শুনলেন না। তিনি দুটি মামলা করলেন। কোর্ট তাকে বললো, আপনার এমডি থাকা আইন অনুমোদন করে না। আপনি এ পদে থাকতে পারবেন না।’

তিনি বলেন, ওই সময় হিলারি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি আমায় ফোন করলেন। টনি ব্লেয়ার যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে তার স্ত্রী শেরি ব্লেয়ারও আমাকে ফোন করলেন। আমি তাদের বললাম- এটা তো আইনে পড়ে না। আমরা তাকে সম্মানজনক প্রস্তাব দিয়েছিলাম, কিন্তু তিনি রাখলেন না। এটা কোর্টের বিষয়, সরকারের পক্ষ থেকে সেখানে কিছু বলাও হয়নি। তিনিই মামলা করে হেরেছেন।

‘আমাকে বলা হয়, গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদ থেকে ইউনুসকে সরালে পদ্মাসেতু হবে না। নোবেল পেয়ে গেছেন কিন্তু গ্রামীণ ব্যাংকের এমডির পদের লোভ ছাড়তে পারেন না তিনি। এরপর একটি পত্রিকার সম্পাদক ও ইউনুস আমেরিকায় যান এবং হিলারি ক্লিনটনকে অনুরোধ করেন। তখন বিশ্বব্যাংকের প্রধান তার শেষ সময়ে পদ্মাসেতু প্রকল্পের অর্থায়ন বন্ধের অর্ডার দিয়ে যান।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মাসেতুর অর্থায়ন বন্ধের পেছনে ছিলেন ড. ইউনুস। তার মধ্যে যদি দেশপ্রেম থাকতো তাহলে কী করে তিনি দেশের এত বড় ক্ষতি করেন?

‘কিন্তু অর্থায়ন বন্ধ করে তারা দুর্নীতির ধোঁয়া তুললো। তাদের একজন অফিসার বাংলাদেশে এসে বলে গেলেন, পদ্মাসেতুতে দুর্নীতি হয়েছে। আমরা প্রমাণ চাইলাম। কিন্তু তারা তা দেখাতে ব্যর্থ হয়। ঘোষণা দিলাম নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, এই প্রকল্প নিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে নানা দুর্নাম রটানোর চেষ্টা করা হয়েছে। আমার ছেলে জয়কে আমেরিকার তদন্ত সংস্থা ডেকে নিয়েছে। জয় বলেছে- আপনারা দেখেন কোথায় কি হয়েছে? রেহানার দিকেও আঙুল তোলা হয়েছে। কিন্তু তারা কোথায়ও কিছু পেলো না।

‘এরপর সব কিছু ভুল প্রমাণিত করে কানাডার ফেডারেল কোর্ট বলে দিয়েছে, এ প্রকল্পে কোনো দুর্নীতি হয়নি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মাসেতু প্রকল্পের অর্থায়ন বন্ধের পেছনে যে অপমান করা হয়েছে, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে হেয় করা হয়েছে অথচ এর পেছনে উসকানিদাতা আমার দেশেরই লোক।

‘এদের কোনো দেশ প্রেম থাকতে পারে না। গরিবের টাকায় সুদ খেয়ে যারা বড় লোক হয় তারা দেশের মানুষকে কখনও ভালোবাসতে পারে না।’

শেখ হাসিনা বলেন, নিজেদের অর্থায়নে পদ্মাসেতু করার ঘোষণা দেওয়ার পর দেশের মানুষ আমাকে সাহায্য করেছে। অনেকেই মনে করতো বাংলাদেশ একটি দুর্যোগের দেশ, তাদের পক্ষে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন ছাড়া পদ্মাসেতু করা সম্ভব নয়।

‘আমি একটা কথা বিশ্বাস করি- বাংলার জনগণের ওপর আমার ভরসা ছিলো। সেটা নিয়েই আমি এ প্রকল্পের কাজ শুরু করেছি। এখন পদ্মাসেতুর ৬০ শতাংশ কাজ হয়েছে। নদী শাসন করে সেতুকে ছোট করতে চাইনি। যতটুকু আছে সেটাই করা হচ্ছে। এখন ৭৫০ মিটার সেতু দৃশ্যমান হয়েছে। এটা কঠিন কাজ। যারা এর সঙ্গে সম্পৃক্ত তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

 

 

 

ঢাকা, ১৪ অক্টোবর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ