Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | রবিবার, ৫ই মে ২০২৪, ২১শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

শতভাগ পেনশন সমর্পণের দাবি সরকারি চাকরিজীবীদের

প্রকাশিত: ১২ জুলাই ২০১৮, ২১:০৬

লাইভ প্রতিবেদক: চাকরি শেষে শতভাগ পেনশন সুবিধা ফেরতের দাবি সরকারি চাকরিজীবীদের। সরকারি চাকরিজীবীরা সরকারের কোষাগারে পেনশনের ৫০ শতাংশ সংরক্ষণের বিধান মানতে অস্বিকৃতি জানিয়েছেন। জানা গেছে, এই দাবির মধ্যে সরকারি চাকরিজীবী কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সর্বোচ্চ পদধারী সচিবরাও রয়েছেন।

সরকারি চাকরিজীবীরা জানান, আগের নিয়মে সরকারি চাকরিজীবী অবসর নেয়ার পর ইচ্ছা করলে তার পেনশনের শতভাগ বিক্রি বা সমর্পণ করতে পারতেন। অথবা অর্ধেক সমর্পণ করে বাকি অর্ধেক পেনশন হিসেবে মাসে মাসে গ্রহণ করতে পারতেন। কিন্তু গত বছর থেকে এ সুবিধা বাতিল করে দিয়ে পেনশনের ৫০ ভাগ সমর্পণ এবং বাকি ৫০ ভাগ পেনশন সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক করে মাসে মাসে নেয়ার বিধান করা হয়।

রকারি চাকরিজীবীরা যুক্তি হিসেবে বলছেন, যারা সততার সঙ্গে কর্মজীবন পার করেছেন, চাকরিজীবনে তাদের অনেকে ফ্ল্যাট কিংবা পরিবারের জন্য আবাসস্থল নির্মাণ করতে পারেননি। পুরো কর্মজীবন পার করেন সরকারি বাসায়। অনেকের ছেলে-মেয়ে লেখাপড়া শেষও করতে পারেননি। চাকরি শেষ করে পেনশনের টাকা দিয়ে একটি মাথা গোঁজার ঠাঁই তথা বাড়ি নির্মাণ করতে চান তারা। কিন্তু পেনশনের ৫০ ভাগ সরকারের কোষাগারে সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক করায় অর্ধেক টাকা দিয়ে তারা কিছুই করতে পারছেন না। তাই তারা পেনশনের ক্ষেত্রে আগের নিয়ম চালুর জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে দাবি জানিয়েছেন। মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র থেকে জানা গেছে, সরকারের বেশ কয়েকজন সচিব ইতোমধ্যে অবসরের পর শতভাগ পেনশন সমর্পণের সুযোগ পুনর্বহালের জন্য সম্প্রতি অর্থমন্ত্রীর নিকট আবেদন করেছেন। এছাড়া অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে এক প্রাক-বাজেট আলোচনায় কর্মরত সরকারের কয়েকজন সচিবও এ সুবিধা ফেরত চেয়েছেন।

এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী জানান, ‘পেনশনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সারা জীবনের নিরাপত্তা। বর্তমানে পেনশনের ক্ষেত্রে যে নিয়ম চালু রয়েছে সেটা অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য। দেশের জনগণের গড় আয়ু এখন অনেক বেড়েছে। আগে একজন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী অবসরে গেলে একেবারে বুড়ো হয়ে যেতেন। কিন্তু বর্তমানে অবসরের পরও একজন সরকারি চাকরিজীবী অনেক দিন বেঁচে থাকার মতো অবস্থায় থাকেন। এমনও হয় একসঙ্গে পেনশনের সব অর্থ তুলে নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কোনো খাতে বিনিয়োগ করে অনেকেই নিঃস্ব হয়ে যান। ফলে জীবনের শেষ বছরগুলোতে তাদের জীবনে নেমে আসে দুর্বিষহ কষ্ট।’

এসময় তিনি আরো জানান, ‘১০০ ভাগ পেনশন সমর্পণ করা এমন সরকারের সাবেক উচ্চপর্যায়ের অনেক কর্মকর্তা শেষ বয়সে নি:স্ব হয়েছেন। মানবিক দিক বিবেচনায় তারা পুনরায় তাদের পেনশন সুবিধা চালুর জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন। ফলে সরকার সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে নতুন নিয়ম চালু করেছে।’

চাকরি শেষ করে অবসরে যাওয়ার সময় তিনি পেনশনের অর্ধেক অর্থাৎ চার হাজার ৫০০ গুণন ২৩০ তথা ১০ লাখ ৩৫ হাজার টাকা একত্রে উঠাতে পারেন। পরবর্তী জীবনে প্রতি মাসে চার হাজার ৫০০ টাকা করে পেনশন হিসাবে পাবেন। এর সঙ্গে প্রতি বছর পাঁচ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্টও পাবেন। পেনশনভোগী মারা গেলে তার স্ত্রী যতদিন বাঁচবেন ততদিন একই সুবিধা পাবেন। স্বামী-স্ত্রী দুজনই মারা গেলে তাদের ছেলের বয়স ২১ বছর হওয়া পর্যন্ত এবং মেয়ের বয়স ২৫ হওয়া পর্যন্ত (অবিবাহিত) একই সুবিধা পাবেন। তবে ছেলে-মেয়ে যদি প্রতিবন্ধী হন, তারা আজীবন এ সুবিধা পাবেন।

গত বছরের (২০১৭) ৯ জানুয়ারি অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ১০০ ভাগ পেনশন সমর্পণ সুবিধা বাতিল করা হয়। ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘সরকারি কর্মচারীদের (বেসামরিক/সামরিক) গ্রস পেনশনের শতকরা ১০০ ভাগ সমর্পণের সুবিধা বাতিল করা হলো। এর পরিবর্তে শতকরা ৫০ ভাগ বাধ্যতামূলক সমর্পণ এবং অবশিষ্ট শতকরা ৫০ ভাগের জন্য নির্ধারিত হারে মাসিক পেনশনের বিধান প্রবর্তন করা হলো। এ বিধান ১ জুলাই ২০১৭ সাল থেকে কার্যকর হবে। ’

এর আগে, পুরাতন বিধানে অবসরে যাওয়া যেকোনো সরকারি চাকরিজীবী তার পেনশনের শতভাগ সরকারের কাছে সমর্পণ বা বিক্রি করে দিতে পারতেন। ফলে তিনি একবারে অনেকগুলো টাকা পেতেন। কিন্তু নতুন নিয়মে পেনশনের ৫০ ভাগের বেশি সমর্পণ করা যাবে না। পেনশনের শতভাগ সমর্পণ বিধান বাতিলের পক্ষে ও বিপক্ষে মতামত রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে দু’দফায় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবদের সঙ্গে অর্থমন্ত্রীর বৈঠক হয়। সেখানে বিভিন্ন বিষয়ের সঙ্গে পেনশন নিয়ে কথা হয়। সে সময় বেশ কয়েকজন সচিব শতভাগ পেনশন সুবিধা সমর্পণ পুনর্বহালের জন্য অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন।

অনেকে আছেন যাদের স্বামী-স্ত্রী দুজনই সরকারি চাকরি করেন। পেনশনের আগের সুবিধা বহাল থাকলে স্বামী-স্ত্রী যেকোনো একজন তার পুরো পেনশন সমর্পণ করতে পারতেন। অন্যজন ৫০ ভাগ সমর্পণ আর বাকি ৫০ ভাগের জন্য মাসে মাসে পেনশন সুবিধা গ্রহণ করতে পারতেন। শুধু তাদের ক্ষেত্রেই নয়, অনেক সরকারি চাকরিজীবী অবিবাহিত। তাই পেনশনের আগের ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা হোক।

 

ঢাকা, ১২ জুলাই (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই

 


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ