লাইভ প্রতিবেদক: সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি পর্যালোচনা, সংস্কার বা বাতিলে সরকার গঠিত কমিটি ৮ জুলাই প্রথম বৈঠকে বসতে যাচ্ছে। ওই বৈঠকে কাজের ধরন ঠিক করা হবে বলে জানা যায়।
কমিটি বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি পর্যালোচনা, সংস্কার বা বাতিলের বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করে কোটা পদ্ধতি সংস্কার বা বাতিলের প্রয়োজন হলে তার যৌক্তিকতাসহ সুপারিশ করবে। ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে সুপারিশসহ সরকারের কাছে প্রতিবেদন দিতে হবে বলেও জান গেছে।
সরকারের বিভিন্ন সূত্র বলছে, কোটা সংস্কারে কমিটি করা হলেও সরকার এই আন্দোলনের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা আছে বলে মনে করছে। বিশেষ করে, বিএনপি-জামায়াত নেপথ্যে থেকে এই আন্দোলনে উসকানি দিচ্ছে এমন অভিযোগে ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বাধা দিচ্ছে। যদিও কোটা সংস্কার আন্দোলনে জড়িত ব্যক্তিরা বলে আসছেন, তাঁদের আন্দোলনে কোনো রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নেই।
সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি পর্যালোচনা, সংস্কার বা বাতিলে গত সোমবার রাতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করে সরকার। তবে কমিটি প্রয়োজন মনে করলে যেকোনো বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিকে সদস্য হিসেবে নিতে পারবে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তার জানিয়েছেন, কোটা পদ্ধতি পর্যালোচনা, সংস্কার বা বাতিলের বিষয়টি পুরোপুরি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়। তাঁরা এই কমিটির মাধ্যমে বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করে তা সরকারের কাছে তুলে ধরবেন।
এরপর সরকার যে সিদ্ধান্ত দেবে, সেটাই চূড়ান্ত হবে। তবে তাঁরা মনে করছেন, বিদ্যমান কোটাব্যবস্থা একেবারে বাতিল হবে না। কোটা বাতিল হলে এর সুবিধাভোগীদের পক্ষ থেকে আদালতে মামলার আশঙ্কা রয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকারি সূত্রে জানা গেছে, কোটার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দেওয়ার পরও এ নিয়ে আন্দোলনকে সরকার ভালোভাবে নিচ্ছে না। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে এই আন্দোলন শেষ পর্যন্ত বিএনপির দাবি আদায়ের ইস্যুতে পরিণত হয় কি না, সে বিষয়েও সতর্ক সরকার।
সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্ররা আন্দোলন করছেন, সরকার পতনের জন্য নয়। কারা ছাত্রদের সরকারের বিরুদ্ধে দাঁড় করাচ্ছে, সেটা খুঁজে দেখা দরকার ছিল।
বর্তমানে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৫৫ শতাংশ নিয়োগ হয় অগ্রাধিকার কোটায়। বাকি ৪৫ শতাংশ নিয়োগ হয় মেধা কোটায়। সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন।
কোটা সংস্কার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, কোটা নিয়ে আন্দোলন করার কোনো প্রয়োজন নেই। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন। তারপরও কিছু জটিলতা রয়েছে, সেগুলো নিরসনে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে কমিটি কাজ করছে।
বিবিসিকে এইচ টি ইমাম কোটা সংস্কার বিষয়ে বলেন, ‘জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ দাবি করেছেন যে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কোটা রাখা হোক এবং তখন আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে এটা পুনর্বিবেচনা করা যেতে পারে। তবে পুনর্বিবেচনা করে কীভাবে হবে বা কতটুকু, সেটা তো এই কমিটি দেখবে।’
ঢাকা, ০৪ জুলাই (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: