Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | রবিবার, ৫ই মে ২০২৪, ২১শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

ক্যাডারে অন্তর্ভুক্তি রেখেই কলেজ জাতীয়করণ

প্রকাশিত: ২৭ জুন ২০১৮, ২১:১৪

লাইভ প্রতিবেদক: কলেজ শিক্ষকদের বিসিএস ক্যাডারভুক্ত হওয়ার সুযোগ রেখেই নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে। সরকারি কর্ম কমিশনে (পিএসসি) শিক্ষকদের যোগ্যতার প্রমাণ করতে হবে। নতুবা কলেজ জাতীয়করণ হলেও শিক্ষকরা নন-ক্যাডার হিসেবে সরকারি সব সুবিধা ভোগ করবেন।

কলেজ জাতীয়করণ বিষেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি করে কলেজকে জাতীয়করণ করার নীতিগত সিদ্ধান্ত ছিল বর্তমান সরকারের। তারই আলোকে ২০১৬ সাল থেকে কলেজ তালিকাভুক্তির কাজ শুরু হয়।

বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে মোট ২৮৩টি কলেজ জাতীয়করণের জন্য চূড়ান্ত করা হয়। জাতীয়করণের অংশ হিসেবে ওই সব কলেজের সব সম্পত্তি ইতোমধ্যে সরকারের নামে দানও (ডিড অব গিফট) করা হয়েছে।

জাতীয়করণের তালিকায় থাকা কলেজগুলোতে মোট ৮ থেকে ১০ হাজার শিক্ষক আছেন। কিন্তু তাদের অবস্থান, মর্যাদা, বদলি ও পদোন্নতি কীভাবে হবে, তা দুই বছরেও ঠিক করতে পারেনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মূলত এ কারণেই জাতীয়করণের আদেশ জারি হচ্ছে না।

বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যদি জাতীয়করণ হতে যাওয়া কলেজশিক্ষকদের ক্যাডারভুক্ত করা হয়, তাহলে তারা কঠোর আন্দোলনে যাবেন। পাশাপাশি এ নিয়ে মামলাও চলছে। এই অবস্থায় জাতীয়করণের তালিকায় থাকা কলেজগুলোর শিক্ষকদের মধ্যে অনিশ্চয়তা কাজ করছে।

জাতীয়করণ হওয়া কলেজগুলোতে কর্মরত শিক্ষকদের শিক্ষা ক্যাডারে অন্তর্ভুক্তি করার সরকারি সিদ্ধান্ত নিলে সরকারি কলেজে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডাররা ক্ষেভে ফেটে পড়েন। এর প্রতিবাদে পাঠদান বন্ধ করে দিয়ে তারা বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করেন। পাশাপাশি জাতীয়করণ শিক্ষকদের নন-ক্যাডার হিসেবে আলাদা নীতিমালা তৈরির দাবি জানান। এরপরেই শিক্ষা মন্ত্রণালয় আত্তীকৃত বিধিমালা তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচনের বছরে দুই পক্ষের বিষয়টি মাথায় নিয়েই সরকার একটি সমাধানমূলক ও গ্রহণযোগ্য আত্তীকৃত নীতিমালা তৈরি করেছে। এ নীতিমালা পিএসসি থেকে চূড়ান্ত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠালে তা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। সেখান থেকে আইনি কিছু শব্দগত পরিবর্তন করে চলতি সপ্তাহে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

নীতিমালায় দেখা গেছে, জাতীয়করণ হতে যাওয়া কলেজগুলোর শিক্ষকদের জন্য আত্তীকৃত বিধিমালায় সাধারণত নন-ক্যাডার হলেও এসব কলেজের প্রভাষকদের মধ্যে যাদের বিসিএস পরীক্ষা দেয়ার মতো যোগ্যতা আছে, তাদের পিএসসির অধীনে আলাদা পরীক্ষার মাধ্যমে ক্যাডারভুক্ত হওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।

প্রিন্সিপাল ও অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসরদের বিষয়ে পিএসসির মতামত চেয়েছে মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে পিএসসি থেকে কোন মতামত দেয়া হয়নি। তবে, প্রিন্সিপাল ও অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসররা স্ব স্ব পদে বহাল থাকবেন। কিন্তু তাদের মর্যাদা কী হবে সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি বিশেষ সূত্রে জানায়, জাতীয়করণ হওয়া কলেজের শিক্ষকরা এর আগেও ক্যাডারভুক্ত হওয়ার সুযোগ পেতেন। যেহেতু নজির আছে, তাই সেই সুযোগ একেবারে বন্ধ করা যায় না।

করলে জটিলতা ও মামলা-মোকদ্দমা বাড়বে। আবার সামনে জাতীয় নির্বাচন, জাতীয়করণ হতে যাওয়া কলেজগুলো অধিকাংশই উপজেলা সদরে অবস্থিত। এসব কলেজের শিক্ষকদের অনেকেই স্থানীয়ভাবে পরিচিত, যাদের কেউ কেউ আবার রাজনীতির সঙ্গেও সম্পৃক্ত। এসব বিষয় চিন্তা করেই যোগ্যতা থাকা শিক্ষকদের পরীক্ষা দিয়ে ক্যাডারে আসার সুযোগ রাখা হয়েছে।

সূত্র আরো জানা যায়, বিদ্যমান নিয়মে জাতীয়করণ হওয়া কলেজ শিক্ষকরা ক্যাডারভুক্ত হলেও তাদের অবস্থান হবে সর্বশেষ বিসিএসে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের নিচে। এ ছাড়া জ্যেষ্ঠতা ও চাকরিকাল গণনায় পৃথক কিছু শর্ত রয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার ও জাতীয়করণ হওয়া শিক্ষকদের স্বার্থ বজায় রেখে আত্তীকরণ নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে। খুব শিগগিরই এ বিষয়ে আদেশ জারি করা হবে। এরপর জাতীয়করণ হওয়া কলেজগুলোর পরবর্তী কার্যক্রম শুরু করা হবে।

কলেজশিক্ষকদের অন্যতম নেতা প্রদীপ কুমার হালদার ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, ইতিপূর্বে যেভাবে কলেজশিক্ষকদের ক্যাডারভুক্ত করেছে সরকার, এবারও সেভাবেই হতে হবে। দ্রুত সরকারিকরণের আদেশ জারি করারও দাবি জানান তিনি।

এদিকে আত্তীকৃত নীতিমালায় পরীক্ষার মাধ্যমে জাতীয়করণ শিক্ষকদের ক্যাডারভুক্ত হওয়ার সুযোগ রাখার বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় বিসিএস শিক্ষকরা ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন। অনেকেই ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে প্রতিবাদী ঝড় তুলছেন। সবাইকে একত্রিত হয়ে আবারও আন্দোলনে নামার আহ্বান জানাচ্ছেন তারা।

বিবিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সভাপতি আই কে সেলিমুল্লাহ খন্দকার ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, নীতিমালা জারি করে জাতীয়করণ করতে হবে। বিধিমালায় অবশ্যই জাতীয়করণ হওয়া কলেজ শিক্ষকদের ক্যাডারের বাইরে রাখতে হবে। যদি জাতীয়করণ হওয়া কলেজ শিক্ষকদের পরীক্ষার মাধ্যমেও ক্যাডারভুক্ত করার সুযোগ রাখা হলে তা মেনে নেয়া হবে না।

 

ঢাকা, ২৭ জুন (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ