লাইভ প্রতিবেদক: ভাষা সংগ্রামী ও জাতীয় প্রফেসর ড. মুস্তাফা নূরউল ইসলামের মৃত্যুতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নান গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
বৃহস্পতিবার এক শোকবার্তায় ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, তাঁর মৃত্যুতে দেশ একজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, বরেণ্য সাহিত্যিক, গবেষক এবং ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠককে হারিয়েছে।
বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্য ও উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষকের মৃত্যু জাতির জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। ইউজিসি চেয়ারম্যান মুস্তাফা নূরউল ইসলামের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে। মরহুমের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
প্রফেসর মুস্তাফা নূরউল ইসলাম (৯১) বুধবার ঢাকায় তাঁর নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি.......রাজিউন)। ভাষা-শিল্প-গবেষণা সাময়িকী ‘সুন্দরম’ সম্পাদক ড. ইসলাম বাংলা একাডেমি ও শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের সভাপতির দায়িত্ব সহ রাজশাহী ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি সাহিত্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি পুরস্কার, স্বাধীনতা পদক ও একুশে পদক লাভ করেন। এছাড়াও, তিনি বিটিভির মননশীল অনুষ্ঠান ‘মুক্তধারা’র সঞ্চালক ছিলেন।
একই সাথে ভাষাসৈনিক প্রফেসর ড. মুস্তাফা নূরউল ইসলামের মৃত্যতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ এক শোক বার্তায় বলেন, “তিনি প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিক আন্দোলন, বাংলাভাষা ও সাহিত্যের প্রবাদ পূরুষ ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে জাতি শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির অন্যতম এক অভিভাবককে হারালো তা দেশের জন্য অপূরণীয়। তাঁর লেখা, সাহিত্য, প্রবন্ধ-সংকলণ দেশ ও জাতি সারাজীবন স্বরণ করবে।”
ভিসি প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ মরহুমের আত্মার শান্তি কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন।
পরদিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. ফারজানা ইসলাম জাতীয় প্রফেসর মুস্তাফা নূর-উল-ইসলামের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এক শোকবার্তায় ভিসি বলেন, ‘ভাষা সংগ্রামী একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রফেসর মুস্তাফা নূর-উল-ইসলামের মৃত্যু সংবাদ শুনে আমি মর্মাহত।
তাঁর মৃত্যুতে জাতি একজন জ্ঞানী ও বহুমাত্রিক গুণের অধিকারী ব্যক্তিকে হারালো। এই ক্ষতি পূরণ হবার নয়। শিক্ষক, গবেষক, সাহিত্যিক এবং লেখক হিসেবে তাঁর অবদান জাতি কখনোই ভুলবে না। বাঙলা সাহিত্য তাঁর মাধ্যমে সমৃদ্ধ হয়েছে। ভাষা আন্দোলন, স্বাধিকার আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি যে অবদান রেখেছেন, জাতি তা চিরকাল স্মরণ করবে।’
জাবি ভিসি, প্রফেসর মুস্তাফা নূর-উল-ইসলামের আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
উল্লেখ্য, প্রফেসর মুস্তাফা নূর-উল-ইসলাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। তিনি ১৯৭২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি রিডার হিসেবে যোগ দেন। ১৯৭২ সালের ৮ জুলাই অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর এবং ১৯৭৩ সালের ৩০ নভেম্বর প্রফেসর পদে পদোন্নতি লাভ করেন। তিনি ১৯৮৭ সালের ১ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
প্রফেসর মুস্তাফা নূর-উল-ইসলামের মরদেহ আগামীকাল শুক্রবার এগারোটা থেকে দুপুর সাড়ে বারোটা পর্যন্ত ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সকলের শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের জন্য রাখা হবে। বাদ জুমা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে নামাজে জানাযা এবং বাদ আছর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বাসবভন সংলগ্ন খেলার মাঠে নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকা, ১০ মে (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: