লাইভ প্রতিবেদক: ঘোষণা ফাইলন্দি। লালফিতার গিটের ছাড় মিলেনি। নেই কোন অগ্রগতি। প্রজ্ঞাপন জারির কোন সময় সীমাও নেই। গঠন করা হয়নি কোন কমিটি। বিশেষজ্ঞদের মতামতের কোন লক্ষণ নেই। এভাবেই সময় চলছে কোটা বাতিরে ঘোষণাটির। এনিয়ে রয়েছে নানান মান অভিমান। রয়েছে ক্ষোভ ও সমালোচনা।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম জানিয়েছেন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরতদের বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রী সংসদে কোটা বাতিলের ব্যাপারে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা প্রজ্ঞাপন আকারে জারির বিষয়ে কোনো অগ্রগতি নেই।
তিনি আজ সোমবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে কোটা বাতিলের ব্যাপারে একটি কমিটি গঠনের কথা বলেছেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব সেটার প্রধান হবেন, এটাও বলেছেন।
তবে এখন পর্যন্ত এই কমিটির সদস্য আর কারা হবেন, সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এই বিষয়টি নিয়ে আমি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা পরে আর কিছু জানায়নি।’ থবে অনেকেই মন্তব্য করেছেন এটির কোন দিকে মোড় নেবে এখনও স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছেনা।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘সংসদে এ ব্যাপারে কথা বলার পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কিছুটা সময় দেশের বাইরে ছিলেন। এ কারণে এ ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি হয়নি। আশা করছি, অল্প সময়ের মধ্যেই বিষয়টি সুরাহা হবে। একইভাবে প্রজ্ঞাপন জারির বিষয়ে অগ্রগতি হবে।’
অন্যদিকে কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারির ব্যাপারে আন্দোলনকারীরা এক মাসের সময় বেঁধে দিয়েছিলেন। সেই সময় শেষ হতে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি।’ অপেক্ষা করেন প্রধানমন্ত্রী হয়তো ভালো কিছুই করবেন।
তাছাড়া প্রজ্ঞাপনের ব্যাপারে যৌক্তিক কোনো অগ্রগতি আছে কি না বা কবে নাগাদ প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে—এমন প্রশ্নের জবাবে শফিউল আলম বলেন, ‘অগ্রগতি হচ্ছে, আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। শিগগির প্রজ্ঞাপন হবে বলে আশা করছি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা দেশব্যাপী তুমুল আন্দোলন গড়ে তোলেন। তারা সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করেন।
তারই পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১১ এপ্রিল জাতীয় সংসদে বলেন, ‘খুব দুঃখ লাগে দেখলাম, হঠাৎ কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলন। এ আন্দোলনটা কী? সমস্ত লেখাপড়া বন্ধ করে রাস্তায় বসে থাকা। রাস্তার চলাচল বন্ধ করা। এমনকি হাসপাতালে রোগী যেতে পারছে না। কর্মস্থলে মানুষ যেতে পারছে না।
লেখাপড়া বন্ধ। পরীক্ষা বন্ধ। এটা সমস্ত জায়গায় ছড়িয়ে পড়ল।’ তিনি বলেন, ‘যখন চায় না, তাহলে দরকার কী? কোটা পদ্ধতিরই দরকার নাই। যারা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বা প্রতিবন্ধী, তাদের আমরা অন্যভাবে চাকরির ব্যবস্থা করে দিতে পারব।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা এটা (আন্দোলন) করছে, তারা অনেকে আমার নাতির বয়সী। তাদের কিসে মঙ্গল হবে-না হবে, আমরা কি তা কিছুই বুঝি না? তাদের কিসে ভালো হবে, আমরা তা জানি না?’
তবে আন্দোলনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতারা বলেছেন, গেজেট না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। তারা নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করবেন। দাবী না মানা পর্যন্ত তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
ঢাকা, ০৭ মে (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এজেড
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: