Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | রবিবার, ৫ই মে ২০২৪, ২২শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

নারীর প্রতি সহিংসতা নিরসনে বিএনপিএস'র আলোচনা সভা

প্রকাশিত: ২৬ নভেম্বার ২০১৬, ২১:২৭

http://www.bangla.campuslive24.com/uploads/shares/DU2-2016-11-26-15-24-49.jpg

বিএনপিএস লাইভ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বোপার্জিত স্বাধীনতা প্রাঙ্গনে নারীর প্রতি সহিংসতা নিরসনে ১৬ দিনের কর্মযজ্ঞ উপলক্ষে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের উদ্যোগে র‌্যালী, আলোচনা ও সাংস্কৃতিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

শনিবার সকালে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীরের সভাপ্রধানত্বে সাংস্কৃতিক সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।

উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর এম এম আকাশ; গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক শাহনওয়াজ দিলরুবা খান, ইউএন ওমেন বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ক্রিস্টিন হান্টার।

উক্ত অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন তাজউদ্দিন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী বাঁধন মন্ডল, রায়েরবাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী জয়া মন্ডল, ধর্মরাজিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী প্রিয়া চক্রবর্তী প্রমুখ।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করেন গানের দল গ্রহস্বর। সমাবেশে নারী নির্যাতন বিরোধী সচেতনতামূলক লোকসঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী আবদুর রব বয়াতি ও তাঁর দল, কবি শুভ দাশগুপ্তের ‘আমিই সেই মেয়ে’ কবিতাটি আবৃত্তি করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আফরোজা বানু ও বাউল গান পরিবেশন করেন অন্যতম বাউল সম্রাট সুনীল কর্মকার ও তাঁর দল।

আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন শহীদ নবী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাসবিহা পৃথিবী এবং মানিকনগর মডেল হাই স্কুলের শিক্ষার্থী খান মোহাম্মদ ইনতিসার। ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সহস্রাধিক শিক্ষার্থীরা র‌্যালীতে অংশগ্রহণ করে নারী নির্যাতন বিরোধী পোস্টার ,লিফলেট বিতরণ করতে করতে আন্তজার্তিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ উপলক্ষে বিএনপিএস আয়োজিত এই সমাবেশে যোগ দেয়।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি অধ্যাপক এম এম আকাশ, ‘নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সচেতনতা বেড়েছে। তবে উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে সচেতনতার সঙ্গে সঙ্গে নির্যাতনের প্রকটতা, ধরন, সংখ্যাও বেড়ে গেছে। নির্যাতনের শিকার নারীরা বিচার চেয়েও বিচার পাচ্ছেনা, এতে করে নির্যাতনকারীরা উৎসাহিত হচ্ছে। নির্যাতনকারীদের দৃষ্টান্তমূলক ও যথাযথ ভাবে শাস্তি দেয়া না গেলে এই সংখ্যা কমানো যাবে না।’

http://www.bangla.campuslive24.com/uploads/shares/DU2-2016-11-26-15-24-49.jpg

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক শাহনওয়াজ দিলরুবা খান বলেন,‘নারী নির্যাতন প্রতিরোধে সরকারের নানা উদ্যোগের পাশাপাশি ১০৯২১ একটি হেল্পলাইন নম্বর রয়েছে। যেকোন সময়ে এই নম্বর ফোন করা যাবে। নারী নির্যাতন বন্ধে সরকারের পাশাপাশি পরিবার ও সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ইউএন ওমেন বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ক্রিস্টিন হান্টার বলেন-‘ঘরে-বাইরে যৌন নির্যাতনসহ নানা নির্যাতনের শিকার হয় নারীরা। নিরাপত্তাহীনতা ও ঝুঁকির কারণে তাদের জীবন হয়ে ওঠে দুর্বিসহ। নির্যাতনের কারণে নারীর স্বাভাবিক বিকাশও ব্যাহত হয়। নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে এবং অধিকার আদায়ে যার যার অবস্থান থেকে লড়াই করতে হবে এবং যুবসমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।’

সমাবেশে প্রধান অতিথি প্রফেসর আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘নারীর প্রতি সহিংসতা গণতন্ত্র, নারী-পুরুষ সমতা ও মানবাধিকারের অন্তরায়। সে সমাজে নারীরা শিকার হয় সে সমাজ কখনোই এগুতে পারে না। আজকের দিনে শুধুমাত্র নারী হওয়ার কারণে নারীদের নির্যাতিত হতে হয় তা সত্যিই আমাদের জন্য বেদনাদায়ক এবং উদ্বেগের বিষয়। আমরা যে নারী-পুরুষের বৈষম্যহীন সমাজ গড়ার প্রচেষ্টা করছি তার শিক্ষা আমাদের সমাজে ছড়িয়ে দিতে হবে। ’

সভাপ্রধান রোকেয়া কবীর বলেন, নারী নির্যাতন বন্ধে পরিবার থেকে সচেতনতা বাড়াতে হবে। পরিবারে গণতন্ত্রের চর্চা থাকলে সে প্রভাব সমাজ ও রাষ্ট্রে পড়বে। পাঠ্য পুস্তকে আরও জেন্ডার সংবেদনশীল করতে হবে। পাশাপাশি জেন্ডার সংবেদনশীলতা বিষয়ে শিক্ষক প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবস্থা ও বরাদ্দ বাড়াতে হবে।

আইন শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী ও প্রশাসনের ব্যক্তিবর্গকে বাধ্যতামূলকভাবে জেন্ডার সংবেদশীল প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে হবে। নারী নির্যাতন প্রতিরোধে যুব-কিশোরদের সচেতন করার পাশাপাশি পাড়ায় পাড়ায় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

সমাবেশে বক্তারা, ‘নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে রাষ্ট্রে বিদ্যমান বিভিন্ন আইনের যথাযথ প্রয়োগ, সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন আইনও নীতি, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ঘোষণা ও সনদ এবং নারী-পুরুষ সমতার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টি, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সমূহের সদস্যদের বাধ্যতামূলক জেন্ডার প্রশিক্ষণ প্রদান, উত্তরাধিকার আইন সংস্কার, সকল পর্যায়ের পাঠ্যপুস্তককে জেন্ডার সংবেদনশীল করা, সিডও সনদের পূর্ণ অনুমোদন, জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১ বাস্তবায়নকল্পে গৃহীত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন জোরদার করা, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে পূর্ণ মন্ত্রণালয় করা এবং জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যা লঘুদের প্রতি নির্যাতন বন্ধ করার জোর দাবি জানান।’

ঢাকা, ২৬, নভেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)// আইএইচ


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ