Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | রবিবার, ৫ই মে ২০২৪, ২২শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

প্রধানমন্ত্রী তুলে দিলেন লুসি হল্টের নাগরিকত্বের সনদ

প্রকাশিত: ১ এপ্রিল ২০১৮, ০১:৪০

লাইভ প্রতিবেদক: মানবসেবায় ব্রত নিয়ে দীর্ঘ ছয় দশক ধরে বাংলাদেশে বসবাসকারী ব্রিটিশ নাগরিক লুসি হল্টের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে নাগরিকত্বের সনদ তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নাগরিকত্বের স্বীকৃতি সনদ তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।

শনিবার বিকেলে গণভবনে দুই বোন মিলেই সেই নাগরিকত্বের সনদ লুসি হেলেন ফ্রান্সেস হল্টের হাতে তুলে দেন। এখন তার মৃত্যুতে বাংলাদেশেই সমাহিত করতে আর কোনও বাধা থাকবে না। সনদ তুলে দেওয়ার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।

জীবন সায়াহ্নে এসে লুসি হেলেন ফ্রান্সেস হল্ট এই বাংলাদেশের মাটিতে সমাহিত হওয়ারই ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। মানবতার সেবক এই ব্রিটিশ নারীর সে ইচ্ছা পূরণে সব ব্যবস্থা নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোটবোন শেখ রেহানা। দুই বোনের ঐকান্তিক চেষ্টায় এবার বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পেলেন লুসি হেলেন। 

বাংলাদেশকে ভালোবেসে জীবনের প্রায় পুরো সময়ই এখানে কাটিয়ে দিয়েছেন লুসি হল্ট। মুক্তিযুদ্ধের সময় যুদ্ধাহতদের সেবা করেছেন জীবনের মায়া ত্যাগ করে। বরিশাল অক্সফোর্ড মিশন চার্চে বসবাস করে লুসি হল্ট এখন কাজ করে যাচ্ছেন দুস্থ শিশুদের কল্যাণ ও সেবায়।

১৯৬০ সালে মাত্র উনিশ বছর বয়সে বাংলাদেশে আসা লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্ট জড়িয়ে পড়েন এদশের আলো বাতাস, প্রকৃতি আর মাটি ও মানুষের মায়ায়। একাত্তরে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা করেছেন জীবনের কথা না ভেবে। জীবন সায়াহ্নে এসেও কাজ করছেন মানব কল্যাণে।

১৯৭৩ সালে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুনন্নেছা মুজিবকে কিছু উপহার সামগ্রিসহ একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন ভিনদেশী লুসি হল্ট। বাংলায় লেখা সেই চিঠিতেও ছিলো এই দেশ ও মানুষের জন্য তাঁর প্রগাঢ় অনুভুতির কথা। চিঠি পেয়ে ভীষণ খুশি হয়েছিলেন বঙ্গমাতা। প্রতি উত্তরে তিনি ধন্যবাদও দিয়েছিলেন লুসি হল্টকে।

জীবন সায়াহ্নে দাঁড়িয়ে নাগরিকত্ব না পাওয়ার অতৃপ্তি নিয়েই বাংলাদেশে বসবাস করছিলেন লুসি হল্ট। অবশেষে পূর্ণ হলো সেই পরম চাওয়া। গণভবনে তার লুসি হল্টের হাতে নাগরিকত্বের স্বীকৃতি সনদ তুলে দিলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

লুসি হল্টের নাগরিকত্ব চাওয়ার আবেদনের ভিত্তিতে গত ১২ই ফেব্রুয়ারী আন্ত:মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে তাঁকে নাগরিকত্ব দেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আনুষ্ঠানিক এই স্বীকৃতি পাওয়ায় এখন থেকে দ্বৈত নাগরিকের সুবিধা ভোগ করবেন বর্ষিয়ান এই সমাজসেবি।

এর আগে, গত ৮ ফেব্রুয়ারি বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে ১৫ বছরের জন্য ভিসা ফি মুক্ত পাসপোর্ট নেন লুসি। সে সময় তাঁকে স্থায়ীভাবে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেয়ার বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী।

দীর্ঘ প্রত্যাশার নাগরিকত্ব পাওয়ায় তখন আবেগাপ্লুত হন লুসি হল্ট। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন সরকার, গণমাধ্যম ও দেশের মানুষের প্রতি। লুসির হল্টের জন্ম ১৯৩০ সালের ১৬ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের সেন্ট হেলেন্সে। বাবা জন হল্ট ও মাতা ফ্রান্সিস হল্ট। দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট।

১৯৬০ সালে বাংলাদেশে আসার পর যশোর ক্যাথলিক চার্চে কাজ করতেন লুসি হল্ট। এরপর ২০০৪ যোগ দেন বরিশাল অক্সফোর্ড মিশন চার্চে। ভিনদেশী এই মানবসেবীকে নাগরিকত্ব দিয়ে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ।

১৯৬০ সালে প্রথম বাংলাদেশে আসেন লুসি হল্ট। যশোর ক্যাথলিক চার্চে সেসময় কাজ করতেন তিনি। এরপর ২০০৪ যোগদেন বরিশাল অক্সফোর্ড মিশনে। ভিনদেশী এই মানবসেবীকে নাগরিকত্ব দেয়ার মধ্য দিয়ে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ।

 

ঢাকা, ৩১ মার্চ (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ