Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৪ই চৈত্র ১৪৩০
teletalk.com.bd
thecitybank.com

শেরপুরে চলছে নির্বিচারে পাখি নিধন, হুমকির মুখে জীববৈচিত্র

প্রকাশিত: ২৮ সেপ্টেম্বার ২০২২, ০৭:২৩

নির্বিচারে পাখি নিধন

রফিক মজিদ, শেরপুর: শীত আসন্ন। অক্টোবর মাস থেকেই শুরু হবে শীতের আগমনি বার্তা। এই শীতের মওসুমে জেলার বিভিন্ন স্থানে পাখপাখালির আগমন ঘটে। জেলার জলাশয় ও গ্রাম ও চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ ফসলি জমিতে দেখা মেলে নানান প্রজাতির আবাসিক পরিযায়ী পান্থপরিযায়ী পাখির। যদিও জেলায় প্রায় সকল জলাশয় ও নদ-নদী হুমকির মুখে। তারপরও বর্তমানে জেলা সদরসহ নকলা, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ি উপজেলার বিভিন্ন খাল বিল ধানক্ষেতে আবার শুরু হয়েছে বুনোপাখি নিধনের মহোৎসব।

দায়িত্বপ্রাপ্ত বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগ ও উপজেলা প্রসাশনের নাকের ডগায় ফাঁদ পেতে এসব পাখি ধরা ও বেচাকিনির কাজ চললেও কর্তৃপক্ষ নির্বিকার। অপরদিকে মৎসচাষ ও রক্ষার নামে একশ্রেণীর প্রভাবশালী ব্যক্তি খাল বিল ও পাহাড়ি জলাভূমি ও ফসলের ক্ষেতের উপর জাল টানানোর ফলে এসব জালে প্রায়শই বিপুল সংখ্যক বুনোপাখি জালে আটকে মারা যাচ্ছে। অথচ সরকারী নিয়মানুসারে উন্মুক্ত জলাশয়ে বা ফসলের ক্ষেতে জাল টানানো বা ঘের দেয়া নিষেধ। এসব পাখি নিধনের কারণে জেলার বীববৈচিত্র হুমকির মুখে পড়েছে।
ধানক্ষেতে হালা দিয়ে বক শিকার করা হচ্ছে

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে শেরপুর সদর উপজেলার পাকুরিয়া, ধলা, গাজীর খামার, ভাতশালা ও রৌহা ইউনিয়নের রৌহা বিল, গারো বিল, দুরঙ্গি বিল, আউরা বাউরা বিল, কেউটা বিল, আমন কুড়া বিল, ইসলি বিল; নালিতাবাড়ি উপজেলার কলসপাড়, নাকশি বিল, গোল্লার বাদ্দ, নন্নী; শ্রীবরদী উপজেলার ঝগড়ার চর, বয়সা বিল, জল কেশর রায়, মিকরি বিল, বালিজুরি, ঝিনাইগাতী উপজেলার দারিয়ার বিল, বালিয়া বিল, নকলা উপজেলার কুরশা বিল এবং গারো পাহাড়ের পানিহাতা, সমশচূঁড়া, গাজনি, তাওয়াকুচা, কর্ণঝোাড়া, বালিজুড়ি গভীর বনাঞ্চলে ফাঁদ পেতে বা বন্দুক দিয়ে একশ্রেণীর প্রভাবশালী মানুষ মাঝে মধ্যেই পাখি শিকার করে। অপরদিকে ব্রহ্মপুত্র নদের দুর্গম চর ভাগলগড়ে বসবাসরত ‘শানদার (বেদে) গোষ্ঠী’র লোকজন নদের পারে বিষটোপ দিয়ে জলনির্ভর পাখিসহ বিভিন্ন প্রজাতির শালিক নির্বিচারে শিকার করে যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কর্মকর্তা সুমন সরকারের সাথে যোগেযোগ করা হলে, বুনো পাখি ধরা বা কেনাবেচার সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ তার কাছে নেই বলে জানান। ইতিপূর্বে পাখি ধরা ও কেনাবেচার ব্যাপারে কয়েকটি অভিযান চালানোর ফলে পাখি ধরা কমে গিয়েছিলো। এ ব্যপারে তৎপরতা বাড়াবেন বলেও ক্যাম্পাসলাইভকে জানান তিনি।

শেরপুর সদর উপজেলার ইউএনও মেহনাজ ফেরদৌস ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, মাছ ও ফসল রক্ষার নামে খাল বিলসহ বিভিন্ন জলাশয় বা ক্ষেতে জাল টানানো বা ঘের দেয়া আইনত: নিষিদ্ধ। এ ব্যাপারে তিনি অচিরেই অভিযান চালিয়ে এসব জাল অপরসারন করবেন।
প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির বুনো পাখি

এ বিষয়ে শেরপুর বার্ড কনজারভেশন সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক শহীদুজ্জামান ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, এখন শরৎকাল খাল বিল নদী নালায় পানি কমতে থাকায় বিপুল সংখ্যক আবাসিক পাখি বিশেষত: শামখোল, বিভিন্ন প্রজাদির বক, পানকৌড়ি, সরালি হাঁস, কোড়া, ডাহুক, মাছরাঙাসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি মাছ-শামুকসহ নানা জলজ প্রাণীর লোভে ঝাঁক বেঁধে এসব এলাকায় ভিড় জমায়। এই সুযোগে এক শ্রেণীর পাখি শিকারী ফাঁদ পেতে, জাল বিছিয়ে বা পালিত পাখি দিয়ে নানা প্রজাতির পাখি ধরে বাজারে নিয়ে বিক্রি করে।

তিনি আরও বলেন, এসব এক শ্রেণীর লোকের পেশা। এছাড়াও চোরা শিকারীরা বন্দুক দিয়ে পাখি শিকার করে। আমাদের সংগঠনের সদস্যরা স্বেচ্ছাশ্রমে প্রায় নিয়মিত শিকারিদের কাছ থেকে পাখি উদ্ধার করে প্রকৃতিতে ছেড়ে দেয়াসহ পাখি শিকার বন্ধে সাধারণ মানুষকে উদ্ভুদ্ধ করার কাজ করে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের সাথে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তাদের উল্লেখযোগ্য কোনো ভূমিকা পালন করতে দেখা যায় না।

ঢাকা, ২৭ সেপ্টেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমজেড


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ