Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | সোমবার, ১৩ই মে ২০২৪, ৩০শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

আদমজীতে বিহারী-পুলিশ সংঘর্ষ, গ্রেপ্তার ৩৬

প্রকাশিত: ১৩ জুন ২০২২, ২৩:১৪

বিহারী-পুলিশ সংঘর্ষ

নারায়ণগঞ্জ লাইভ: নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীতে পুলিশ-র‌্যাবের সঙ্গে বিহারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ার শেল ও শটগানের গুলি করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে। এতে কমপক্ষে ২৫-৩০ জন আহত হয়েছে।

এদিকে সংঘর্ষ চলাকালে আদমজী এলাকার চারদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সোমবার সকালে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কার্যালয়ের সামনে এই ঘটনা ঘটে। থেমে থেমে বেলা ১১টা পর্যন্ত বিহারী ক্যাম্পের পকেট গেইট এলাকায় এই সংঘর্ষ হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকালে বিহারী ক্যাম্পের কয়েকশ’ নারী-পুরুষ সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করে। এর আগে শুক্রবার জুমার নামাজে আদমজী জামে মসজিদের ভেতর পুলিশ কর্মকর্তার ওপর হামলার ঘটনার ঘটনা ঘটে। এরই জের ধরে রোববার দিবাগত রাত ১টা থেকে সোমবার ভোররাত ৪টা পর্যন্ত বিহারী ক্যাম্পের ভেতর অভিযান চালায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ। অভিযানে ৩৫ থেকে ৪০ জনকে গ্রেপ্তার এবং অনেক নারী-পুরুষকে লাঞ্ছিত এবং ঘরের দরজা জানালা ভাঙচুরের অভিযোগ আনে বিহারী ক্যাম্পের বাসিন্দারা। এই ঘটনার প্রতিবাদে তারা থানা কার্যালয় ঘেরাও করে। এতে নারায়ণগঞ্জ-আদমজী-চিটাগাংরোড সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানায়, সোমবার সকাল ৬টা থেকে থানা কার্যালয়ের আশপাশে অবস্থান নেয় বিহারীরা। এবং আদমজী ইপিজেডের তিনটি প্রবেশ পথে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে। শ্রমিকদের ভেতরে ঢুকতে দিলেও কোন গাড়ি ঢুকতে বাধা দিচ্ছিল তারা। সকাল ৮টার দিকে বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষ সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কার্যালয় ঘেরাও করে প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। এ সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয় অভিযানে যদি কোন নিরপরাধ মানুষ আটক হয়ে থাকে আলোচনার মাধ্যমে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা বলে সবাইকে ছেড়ে দিতে হবে।

এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে তর্কে জড়ায় তারা। এক পর্যায়ে অ্যাকশনে যায় পুলিশ ও র‌্যাব। এসময় পুলিশ ও র‌্যাবের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় বিহারীরা। উভয়ের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে বিহারীরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ার শেল ও শটগানের গুলি ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সোয়া ৯টার দিকে সড়কে যানবাহন চলাচল শুরু করে।

বিহারী ক্যাম্পের চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেন জানান, শুক্রবার মসজিদের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। রোববার রাত থেকে সোমবার ভোররাত পর্যন্ত বিপুল সংখ্যক পুলিশ ক্যাম্পের ভেতর অভিযান চালায়। পুলিশ অনেক নারী-পুরুষকে মারধর করেছে। আবার ঘটনার সময় মসজিদে যায়নি এবং হামলায় ছিল না তাদেরও গ্রেপ্তার করেছে। এই ঘটনায় ক্যাম্পের অধিবাসীরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। তারা আমার বাসায় এসে দরজা-জানালায় আঘাত করে। পরে আমি সকাল ৬টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি সাহেবকে ফোন করি। কিন্তু ফোন রিসিভ না হওয়ায় আমি থানায় ঘিয়ে বিষয়টি ডিউটি অফিসারকে জানিয়ে চলে আসি। এরমধ্যে সকাল সোয়া ৬টার দিকে আদমজী ইপিজেডের জেনারেল ম্যানেজার আমাকে ফোন দিয়ে জানায়, তাদের গাড়ি ভেতরে যেতে পারছে না। তখন আমি ঘটনাটি তাকে অবহিত করি। তিনি হয়তো সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি সাহেবকে ঘটনা জানিয়েছেন। পরে ওসি সাহেব আমাকে ফোন দিয়ে থানায় আসতে বলে। সকাল ৭টার একটু আগে আমি থানায় যাই। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখি আমার ক্যাম্পের অনেক মানুষ থানার সামনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। থানার ওসি তখন বলে রাতে অভিযানে কোন নিরপরাধ লোক আটক হয়ে থাকলে আলোচনার মাধ্যমে ছেড়ে দেয়া হবে। কিন্তু ক্যাম্পের লোকজনের দাবি সবাইকে ছেড়ে দিতে হবে। এসময় আমি ক্যাম্পের লোকজনকে অনুরোধ করে বলি আইনের বিষয় আছে যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদেরও তো ছাড়বে না। যারা নিরপরাধ তাদের ছেড়ে দিবে বলছে। কিন্তু তারা আমার কথা শুনে নাই।

এ বিষয়ে জানতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মশিউর রহমান ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া যায়নি।

তবে পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শওকত জামিল জানান, রাতে ৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে কয়েকটি পয়েন্টে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

ঢাকা, ১৩ জুন (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমজেড


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ