Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | বৃহঃস্পতিবার, ২৮শে মার্চ ২০২৪, ১৪ই চৈত্র ১৪৩০
teletalk.com.bd
thecitybank.com
বাকৃবি গবেষকের সাফল্য

চুকাই গাছ থেকে জ্যাম, জেলী, জুসসহ খাদ্য ও পানীয় উদ্ভাবন

প্রকাশিত: ১০ ডিসেম্বার ২০২২, ১০:০৯

চুকুর গাছ থেকে জ্যাম, জেলী, জুসসহ খাদ্য ও পানীয় উদ্ভাবন

বাকৃবি লাইভ: ঔষধি গুণসম্পন্ন উদ্ভিদ হলো রোজেল । এর রয়েছে নানাবিধ ব্যবহার। আঞ্চলিক ভাষায় যা চুকাই বা চুকুর নামে পরিচিত। চুকাই গাছ তার পুষ্টিগুন, স্বাদ ও ঘ্রাণের জন্য পৃথিবী ব্যাপি বিখ্যাত। আমেরিকা, জাপানসহ আফ্রিকার দেশগুলোত এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তবে বাংলাদেশে গাছটির পরিচিতি ও ব্যবহার বেশ কম। এরকম একটি অপ্রচলিত গাছের ফুলের বৃতির অংশ প্রক্রিয়াজাত করে জ্যাম, জেলী, পুডিং, চাটনী, আচার, চকলেট, চা ও জুসসহ বিভিন্ন মুখোরোচক খাদ্য ও পানীয় উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফসল উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের গবেষক ও অধ্যাপক ড. মো. ছোলায়মান আলী ফকির ও তাঁর গবেষণা দল।

দীর্ঘ সময় ধরে তিনি ওই চুকুর বা রোজেল উদ্ভিদ নিয়ে গবেষণা এসব প্রক্রিয়াজাত পণ্য তৈরী করতে সক্ষম হয়েছেন। বাণিজ্যিকভাবে এই ক্ষেত্রে রয়েছে অপার সম্ভাবনা। শুক্রবার (০৯ ডিসেম্বর) সকাল দশটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফসল উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে চুকুর বা রোজেলা গাছের নানাবিধ ব্যবহার সম্পর্কে এসব তথ্য তুলে ধরেন প্রধান গবেষক ড. মো. ছোলায়মান আলী ফকির।

গাছটি সম্পর্কে গবেষক আরও বলেন, খাদ্য হিসেবে রোজেল ফুলের স্থায়ী ও মাংসল বৃতি ব্যবহৃত হয়। বৃতি থেকে জ্যাম, জেলী, চা, আচার, চাটনী, জুসসহ বিভিন্ন পানীয় প্রস্তুত করা যায়। বৃতির রং উজ্জ্বল লাল হওয়ায় জৈব খাদ্য রং হিসেবে ব্যবহার করা সম্ভব। এছাড়া রোজেলকে শুকিয়ে এবং ফ্রিজিং করে দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়। এ উদ্ভিদের কচি পাতা রান্না ও সবজি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। পরিপক্ক বীজে প্রচুর পরিমাণে আমিষ ও চর্বি থাকায় এটি প্রক্রিয়াকরণের পর পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

গাছটির ওষুধি গুণাগুণ সম্পর্কে গবেষক আরও জানান, গবেষণায় দেখা গেছে এ গাছের পাতা ও বৃতি ঔষুধিগুনে ভরপুর। রঙিন বৃতিতে অ্যান্থোসায়ানিন, ফ্লাভনয়েড, ক্যারোটিনসহ গুরুত্বপূর্ণ এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। এসব উপাদান থাকায় এ উদ্ভিদ থেকে তৈরীকৃত খাদ্য ও পানীয় ক্লান্তি দূরীকরণ, হৃৎপিন্ডের ব্যথা প্রশমন, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণ ও ক্যান্সারে কেমোথেরাপির পরবর্তী দ্রুত সুস্থতার জন্য খুবই উপকারী বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।

গাছটির বাংলাদেশে বানিজ্যিক সম্ভাবনা নিয়ে গবেষক বলেন, বাইরের দেশগুলোতে এই গাছটির ব্যাপক চাহিদা থাকলেও আমাদের দেশে এর ব্যবহার তেমন একটা হয় না। তবে দেশে গাছটির বানিজ্যিকভাবে চাষাবাদ করা সম্ভব। রোজেলের একটি গাছে ১২০-১৬০টি ফল ধরে। প্রতিটি উদ্ভিদ থেকে আধা কেজি থেকে দেড় কেজি পরিপক্ক কাঁচা ফল পাওয়া যায়। জাত অনুসারে ফলগুলো সবুজ অথবা লাল বর্ণের হয়।

বাড়ির আশে-পাশে রৌদ্রময় বা আংশিক ছায়াযুক্ত উঁচু জায়গাতে ৪-৫টি রোজেল উদ্ভিদ থেকে একটি পরিবারের জন্য চা, জ্যাম, জুস, আচার ইত্যাদির চাহিদা মেটানো সম্ভব।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাকৃবির ফসল উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মো. আলমগীর হোসেন, অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. আজাদ-উদ-দৌলা প্রধানসহ বিভাগের অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ ও স্নাতোকোত্তর শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা, ০৯ ডিসেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিএল


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ