
বশেফমুবিপ্রবি লাইভ: জামালপুরের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য একাডেমীক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে বিরত রয়েছেন শিক্ষকরা। আজ বুধবার (২ নভেম্বর) বিভিন্ন দাবিতে উপাচার্য বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করেছেন। উপাচার্যের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা সোহাগ সরকার স্বারকলিপি গ্রহণ করেছেন।
অর্থ কমিটির নবম সভায় শিক্ষক সংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্তকে রেজুলেশনে বিকৃতভাবে লিপিবদ্ধ করণ ও ১২তম সিন্ডিকেট সভায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে উপস্থাপনের মাধ্যমে শিক্ষকবৃন্দদের হেয় প্রতিপন্ন করা হয়েছে বলে স্মারকলিপিতে দাবি করা হয়।
স্মারকলিপিতে তারা উল্লেখ করেন-
বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা, হলের ডাইনিং পরিচালনায় ভর্তুকি, পরিবহন পুলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পৃথক পৃথক গাড়ী এবং এ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থা, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে মূল ও রেফারেন্স বইয়ের একাধিক মাস্টারকপিসহ উন্নতমানের দেশী-বিদেশী বই, জার্নাল সরবরাহ এবং লাইব্রেরির ব্যবস্থাপনায় আধুনিকীকরণ ও অটোমেসনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট আধুনিকীকরণ, স্মার্ট ক্লাসরুম ও আধুনিক ল্যাব সুবিধা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
এছাড়া সকল চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল, গবেষণা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি এবং জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে কোন শিক্ষকের গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপনের ব্যয় প্রদান, গেস্ট হাউজে রুম বরাদ্দ, আসবাবপত্র, দপ্তরের আধুনিকায়ন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নাগরিক সেবাসমূহ ইন্টারনেট, শিক্ষাছুটি, “সিটিজেন চার্টার”, ই নথি, ই-টেন্ডারিং চালু করারও দাবি জানান।
তাছাড়া “বঙ্গমাতা রিসার্চ ইনস্টিটিউট” নামে স্বতন্ত্র একটি ইনস্টিটিউট চালু, গবেষণা অনুদান প্রদান, অন্যান্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক, আর্থিক ও অন্যান্য বিষয় ব্যবস্থাপনা ও বিধি সমূহের সর্বোত্তম চর্চার দাবি জানান।
বাৎসরিক বাজেট বরাদ্দের পর একটি বাজেট পরবর্তী সেমিনারের মাধ্যমে শিক্ষক, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের সকল খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ এবং ব্যয়ের পরিকল্পনা সম্পর্কে অবহেলিত করণ
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা-ছুটি, পেনশন ও অন্যান্য নীতিমালা প্রণয়ন সংক্রান্ত কমিটিতে একাধিক শিক্ষক প্রতিনিধি অন্তর্ভূক্ত করে অতিসত্ত্বর নীতিমালা, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যায় কর্মরতদের অভিজ্ঞতা গণনা করা, পদোন্নতি প্রাপ্যতার তারিখ থেকে আর্থিক সুবিধাদিসহ পদোন্নতি প্রদানেরও দাবি জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. এএইচএম মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন- "ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়, শিক্ষক হিসেবে প্রশাসনের অব্যবস্থাপনা নিরসনকল্পে আমাদের এই স্মারক লিপি প্রদান। আমরা চাই না শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হোক, একাডেমীক কার্যক্রম ব্যাহত হোক।" বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দাবিগুলো মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান।
সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান ড. আল-মামুন সরকার বলেন- "একাডেমীক অভিন্ন নীতিমালা, পর্যাপ্ত শিক্ষা উপকরণ সরবরাহ করার মাধ্যমে একাডেমীক কার্যক্রম গতিশীল করার লক্ষ্যে আমাদের শিক্ষক সমাজের এই কর্মবিরতির মত কর্মসূচি পালন করতে হচ্ছে। আমরা চাই দ্রুত ক্লাসে ফিরে যেতে ,তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেই তার যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।"
ফিশারিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. আবদুস ছাত্তার জানান- "এখানে দাবিগুলোর বেশিরভাগই শিক্ষার্থীদের জন্য। ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ, তাদের সুবিধাগুলো আগে দিতে হবে।" এসময় বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া তিন কার্যদিবসের মধ্যে উপযুক্ত দাবি বাস্তবায়ন না হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন।
এদিকে শিক্ষকদের ধর্মঘটে বিভিন্ন বিভাগের চলমান ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ হয়ে গেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা । ফিশারিজ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ফিশ প্রসেসিং তত্ত্বীয় পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরীক্ষার্থী জানান, আমাদের চলমান তৃতীয় বর্ষ, ১ম সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা আরো অনেক আগেই শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিভিন্ন ইস্যুতে দফায় দফায় পরীক্ষা পিছানোর ফলে যথা সময়ে স্নাতক ডিগ্রি নেওয়াই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আমরাও এই উদ্ভুত সমস্যার দ্রুত সমাধান চাই।
ঢাকা, ০২ নভেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//কেআই//এমজেড
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: