Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | বুধবার, ২৪শে এপ্রিল ২০২৪, ১১ই বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

গ্রেডিং পয়েন্ট পদ্ধতি বাতিল চেয়ে রাজপথে মেডিকেল শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত: ৯ জানুয়ারী ২০২৩, ০৪:০৯

গ্রেডিং পয়েন্ট পদ্ধতি বাতিল চেয়ে রাজপথে মেডিকেল শিক্ষার্থীরা

লাইভ প্রতিবেদক: রাজপথে নেমেছে মেডিকেল শিক্ষার্থীরা। তারা তাদের দাবী আদায়ে সব কিছুই করতে রাজি। কোন ধরনের ছাড় দিতে রাজি নন। সিজিপিএ (গ্রেডিং পয়েন্ট পদ্ধতি) বাতিল ও ক্যারিঅন প্রথা বহালের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা। এসময় দাবি আদায়ের পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা গেছে তাদের। একই সঙ্গে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। রোববার (৮ জানুয়ারি) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিভিন্ন মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের শিক্ষার্থীরা এই বিক্ষোভ করেন। দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন।

দাবী আদায়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ থেকে মেডিকেল শিক্ষা পদ্ধতি নতুন কারিকুলামে যুক্ত করা হয়েছে। এতে সিজিপিএ পদ্ধতি চালু এবং ক্যারিঅন পদ্ধতি বাতিল করা হয়েছে। সিজিপিএ চিকিৎসকদের মধ্যে শ্রেণী-বৈষম্য সৃষ্টি হবে। অন্যদিকে ক্যারিঅন পদ্ধতি চালু থাকলে পেশাগত পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলেও নিজের ব্যাচের সঙ্গে শ্রেণী কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া যায়। এর আগে দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ক্যাম্পাসে একই দাবিতে বিক্ষোভ করে আসছেন।

তারা জানান, ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থানে তারা স্বারক লিপি দিয়েছেন। আজ এই বিষয়ে একটি সুন্দর সিদ্ধান্ত প্রত্যাশা করছেন। সিজিপিএ বাতিলে লিখিত দাবিতে শিক্ষার্থীরা জানান, উন্নত দেশের সাথে সামঞ্জস্য রাখতে বিএমডিসি নতুন মেডিকেল শিক্ষা ব্যবস্থায় কোনো ধরনের অবকাঠামোগত পরিবর্তন না করেই সিজিপিএ সিস্টেম চালু করেছে। অন্যান্য দেশে যেখানে সেমিস্টার পদ্ধতিতে পরীক্ষা হয়, সেখানে আমাদের দেশে প্রফেশনাল পদ্ধতিতে পরীক্ষা হয়। যেসব দেশে সেমিস্টার পদ্ধতিতে পরীক্ষা হয়, শুধুমাত্র সেসব দেশে সিজিপিএ সিস্টেম চালু আছে।

কিন্তু বিশ্বের কোথাও প্রফেশনাল পরীক্ষার পাশাপাশি সিজিপিএ পদ্ধতি চালু নেই এবং তা শুধু বাংলাদেশেই চালু হতে যাচ্ছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, মেডিকেল শিক্ষা ব্যবস্থায় পারস্পরিক সহযোগিতা ও সহমর্মিতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সিজিপিএ সিস্টেমের আবির্ভাব ঘটলে এই সহযোগিতা-সহমর্মিতার লোপ পাবে, যা কাম্য নয়। উন্নত দেশে বায়াসনেসের কারণে স্নাতক পর্যায়ে যেখানে ভাইভা নিরূৎসাহিত করা হয়, সেখানে বাংলাদেশে প্রফেশনাল পরীক্ষায় ৫০ শতাংশ মার্ক নির্ধারিত হয় ভাইভা পরীক্ষার মাধ্যমে।

একজন শিক্ষার্থীর সিজিপিএ ভাইভার ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল হবে। সিজিপিএ সিস্টেম চালু করলে উচ্চ সিজিপিএয়ের জন্য বায়াসনেস আরও বেড়ে যাবে। তারা বলেন, একজন শিক্ষার্থীর ভালো বা খারাপ ডাক্তার হওয়া নির্ভর করে তার দক্ষতা ও বুদ্ধিমত্তার ওপর। এমতাবস্থায় সিজিপিএ সিস্টেম চালু করে ডাক্তারদের দক্ষতার ওপর নজর না দিয়ে মানুষ সিজিপিএ এর ওপর ভিত্তি করে একজন ডাক্তার ভালো না খারাপ তা নির্ধারণ করবে, যা অযৌক্তিক। তাদের মতে— পরিবর্তন যদি করতেই হয়, তাহলে যেন সম্পূর্ণভাবে পরিবর্তন হয়।

কিছু পদ্ধতি আগের রেখে বাকি পরিবর্তন আমাদের স্বাভাবিক জীবন ব্যবস্থাকে হুমকির মুখে ফেলবে। শিক্ষার্থীরা বলেন, যদি সিজিপিএ পদ্ধতি চালু করা হয়, তাহলে সেমিস্টার সিস্টেম চালু হোক এবং পরীক্ষার পর্যাপ্ত অবকাঠামোগত পরিবর্তন করা হোক। যেমন কেন্দ্রীয় ভাইভা পদ্ধতির আবির্ভাব ঘটানো থেকে শুরু করে পক্ষপাতিত্ব না হওয়া নিশ্চিত করতে যা যা পরিবর্তন প্রয়োজন।

অন্যথায় সিজিপিএ সিস্টেম বাতিল করা হোক এবং যেকোনো মূল্যে ক্যারিঅন সিস্টেম পুনর্বহাল করা হোক। কেন ক্যারিঅন সিস্টেম বহাল চান এ বিষয়ে জানান, আমাদের দেশের দীর্ঘতম গ্র্যাজুয়েশন কোর্স হচ্ছে এমবিবিএস, ইন্টার্নশিপসহ যার স্থায়িত্ব প্রায় ছয় (৬) বছর। ক্যারিন সিস্টেম না থাকলে একজন শিক্ষার্থী প্রথম প্রফেশনাল পরীক্ষায় দুর্ভাগ্যবশত ফেল করলে তার বাধ্যতামূলক ছয় (৬) মাস বসে থাকা লাগবে, ফলে সে ব্যাচ থেকে ছিটকে পড়বে।

এভাবে সুদীর্ঘ ছয় (৬) বছরের কোর্স আরও দীর্ঘায়িত হয়ে ৭-৮ বছর বা তার বেশিতে পরিণত হবে। ফলে একজন শিক্ষার্থী খুব সহজেই চাকরি ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়বে। আন্দোলনের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে তারা বলেন, সারাদেশ থেকে বাছাই করে দেড় লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে থেকে সেরা ৪ হাজার ৩৫০ জনকে সরকারি মেডিকেল কলেজ এবং পরবর্তী মেধাক্রম অনুসারে বেসরকারি মেডিকেলে অধ্যয়নের সুযোগ দেওয়া হয়।

এখানে চান্স পাওয়া সবাই ভালো শিক্ষার্থী হওয়া সত্ত্বেও মেডিকেল শিক্ষা কারিকুলাম এমনি যে, অনেক ভালো প্রস্তুতি নিয়েও কোনো প্রফেশনাল পরীক্ষায় একজন শিক্ষার্থী ফেল করতেই পারে। তাদের মতে— অন্যান্য স্নাতক কোর্সে ৪০ শতাংশ মার্ক পেয়ে পাস করতে হয়। যেখানে মেডিকেলে সকল পরীক্ষায় ৬০ শতাংশ মার্ক পেয়ে পাস করতে হয়। এমবিবিএসের মতো বিশ্বের অন্যতম কঠিন ডিগ্রিতে ৬০ শতাংশ মার্ক পেয়ে যেখানে পাস করতে হয় সেখানে কোনো কারণে ফেল করা অস্বাভাবিক নয়।

শিক্ষার্থীরা যোগ করেন, আমাদের দেশে প্রতিটি পরীক্ষায় ৫০ শতাংশ নম্বর ভাইভা পদ্ধতিতে নির্ধারিত হয়। ভাইভা পরীক্ষায় একজন শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েও পরীক্ষকের সামনে থ্রোট ব্লক, স্ট্রেস, প্যানিক অ্যাটাক বা অন্য যেকোনো কারণে ভাইভা খারাপ করতেই পারে। এজন্য তার ফেল এলে ছয় মাস বসিয়ে রাখা কোনো যৌক্তিকতা বহন করে না। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, ক্যারিঅন সিস্টেম না থাকলে বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা নেপটিজমের স্বীকার হবে। ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে শিক্ষার্থীদের ইচ্ছাকৃতভাবে ফেল করানোর প্রবণতা বাড়বে।

ঢাকা, ০৮ জানুয়ারি (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিআইটি


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ