লাইভ প্রতিবেদক: বিদেশী শিক্ষার্থী বাড়ছে দেশে। লেখা পড়ার মান ও গবেষনায় আকৃষ্ট হয়েছেন বিদেশীরা। শিক্ষার্থীরা বলছেন এশিয়ার যে কোন দেশের তুলনায় এদেশের মেডিকেল শিক্ষার মান অনেক উন্নত। শিক্ষক ও ফিজিশিয়ানরা যথেষ্ট সময় দিচ্ছেন শিক্ষা কার্যক্রমে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের (চিকিৎসা, শিক্ষা ও জনশক্তি উন্নয়ন) প্রফেসর ডা. আবদুর রশিদ বলেন, প্রতি বছর বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। কারণ অন্যান্য দেশের তুলনায় বিশেষ করে নেপাল, ভুটানের চেয়ে মেডিকেল শিক্ষার খরচ কম। বাংলাদেশের কিছু বেসরকারি মেডিকেল কলেজ আছে, তারা বিদেশি শিক্ষার্থীদের বেশ আকৃষ্ট করতে পেরেছে। ফলে তারা এখানে আসছেন।
সূত্র জানায়, দেশের বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে বিদেশি শিক্ষার্থী দিন দিন বাড়ছে। বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপন ও পরিচালনা নীতিমালা অনুসারে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই মোট আসনের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারে। এক্ষেত্রে প্রতি বিদেশি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রতিষ্ঠান ভেদে ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার ডলার ফি আদায় করা হয় পাঁচ বছরের জন্য।
আরো জানা যায়, চলতি ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে ১৫শ’ বিদেশি শিক্ষার্থী দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে সরকারি মেডিকেল কলেজে বৃত্তি নিয়ে ভর্তি হয়েছেন ৬০ জন শিক্ষার্থী। এই ৬০ জন সার্কভুক্ত দেশের শিক্ষার্থী রয়েছেন। ১৫শ’ জন বিদেশি শিক্ষার্থীর মধ্যে বাকিরা দেশের বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
কয়েক বিদেশী শিক্ষার্থীর সাথে আলাপ জানা যায়, ভারতের মেডিকেল কলেজগুলোর চেয়ে বাংলাদেশের মেডিকেল কলেজের টিউশন ফি অনেক কম। পরিবেশও সুন্দর। তারা এদেশের অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সহজে মিশতে পারেন। এদেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি ভ্রাতৃত্ব আচরণ খুঁজে পান। ফলে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের চেয়ে তারা বাংলাদেশকেই বেশি পছন্দ করেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সূত্র মতে, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে দেশের বিভিন্ন মেডিকেলে ভর্তি হয়েছিল ৯৮৩ জন শিক্ষার্থী, ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে ৮৫০ জন শিক্ষার্থী এবং ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে ৭৫০ জন বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন।
সমপ্রতি প্রকাশিত আইন কমিশনের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দেশে বেসরকারি মেডিকেল কলেজের সংখ্যা ৭২টি।
সূত্র মতে, এর মধ্যে শিক্ষক, শিক্ষা উপকরণ ও অবকাঠামো মিলিয়ে ২৫ থেকে ৩০টি মেডিকেল কলেজ ভালো মানের। এসব বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে প্রতি শিক্ষাবর্ষেই বিপুলসংখ্যক বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। পরের মেডিকেল কলেজগুলোতে তেমন শিক্ষার্থী ভর্তি হতে আসে না। ফলে আসন শূন্য থাকে। তখন স্থানীয় শিক্ষার্থী বা দেশের ছাত্রছাত্রী ভর্তি করতে হয় ওইসব মেডিকেল কলেজগুলোকে। ১৬ থেকে ১৭টি বেসরকারি কলেজে কোনো বিদেশি শিক্ষার্থী নেই।
সূত্র আরো জানায়, এদেশের বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে প্রধানত নেপাল ও ভারতের কাশ্মীর থেকেই বেশি শিক্ষার্থী আসে। তারা প্রথম সারির মেডিকেল কলেজগুলোকেই পছন্দের তালিকায় রাখেন।
বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ডা. এমএ রউফ সরদার এই প্রসঙ্গে বলেন, আমাদের এখানে ভারত, নেপাল ও মালদ্বীপ থেকে বেশি শিক্ষার্থী আসে। কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন পড়াশোনার খরচ কম। পরিবেশ ভালো। বিদেশি শিক্ষার্থীরা এখানে স্বাছন্দ্য বোধ করেন।
ঢাকা, ২২ এপ্রিল (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমএইচ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: