Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | সোমবার, ২৯শে এপ্রিল ২০২৪, ১৬ই বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

মেডিকেলে ভর্তি : মেধায় তৃতীয় কাঠুরিয়ার ছেলের গল্প

প্রকাশিত: ১১ অক্টোবার ২০১৮, ০৩:১৬

দিনাজপুর লাইভ : বাবা কাঠুরিয়া। গাছ কেটে সংসার চালান তিনি। একসময় তিনি রিকশা ভ্যান চালাতেন। ছেলের পড়াশোনার খরচ চালাতে গিয়ে সেটিও বিক্রি করে দিতে হয়েছে তাকে। মা দিনমজুরির কাজ করেন। এমন অভাবের সংসারে থেকেই আলোর ঝলকানি দিয়েছেন সজিব চন্দ্র রায়। মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় সারা দেশের মধ্যে তৃতীয় হয়েছেন তিনি। তবে এমন ফলেও তার মুখের হাসি মলিন হয়ে গেছে। মেডিকেলে পড়াশোনা কিভাবে চালাবেন এনিয়ে সংশয়ে রয়েছেন তিনি।

দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ১১ নং মরিচা ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম কাঠগড় রাজাপুকুরে বড় হয়েছেন সজিব। বাবা মনোধর চন্দ্র রায় সংসারের ভরণ-পোষন নির্বাহের জন্য একসময় রিকশা ভ্যান চালাতেন। ছেলের লেখাপড়ার খরচ যোগাতে সেই ভ্যান বিক্রি করে এখন শুধুমাত্রা কাঠুরিয়ার কাজ করেন। এরপরও সংসারের আহার সংকুলান না হওয়ায় মা চারুবালা রায়কে যেতে হয় কৃষি শ্রমিক হিসেবে দিনমজুরের কাজ করতে।

সজিবের সফলতার গল্পটা একটু অন্যরকম। তিনি ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখেছেন ছোটবেলাতেই। সজিব চন্দ্র রায় চতুর্থ শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে একবার চরম অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন তারা বাবা-মা। অর্থাভাবে ঠিকমত চিকিৎসাও হয়নি তার। সজিব তখন থেকেই স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন বড় হয়ে তিনি চিকিৎসক হবেন। মানুষের সেবার পাশাপাশি পরিবারকে দারিদ্রতার অভিশাপ থেকে মুক্ত করবেন। সুস্থ হয়ে বাড়ী ফিরে চিকিৎসক হওয়ার অদম্য ইচ্ছাশক্তি নিয়েই লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করেন তিনি।

২০১০ সালে কাঠগড় আদিবাসী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির পাবলিক পরীক্ষায় গোটা বীরগঞ্জ উপজেলার মধ্যে প্রথম হয়ে সকলকে তাক লাগিয়ে দেন সজিব। গোলাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৩ সালে জেএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ সহ ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি এবং একই বিদ্যালয় থেকে ২০১৬ সালে এসএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে কৃতিত্ব অর্জন করে। এরপর ২০১৮ সালে সৈয়দপুর সরকারি টেকনিক্যাল কলেজ থেকে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পাশ করেন তিনি। এবারের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় এমসিকিউকে ১০০ নম্বরের মধ্যে ৮৫.৭৫ এবং সার্টিফিকেটে ২০০ নম্বরের মধ্যে ২০০ নম্বর পেয়ে সারাদেশের মেধাতালিকায় তৃতীয় স্থান অধিকার করে আলোড়ন সৃষ্টি করেন সজিব চন্দ্র রায়।

সজিবের বাবা মনোধর চন্দ্র রায় বলেন, ছেলের ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন ও ইচ্ছা মাঝে মাঝে তাকে বিমর্ষ করে। দারিদ্র-পীড়িত এই সংসারে কি-করে এটা সম্ভব? এরপর ছেলের অদম্য ইচ্ছায় আর লেখাপড়ায় কঠোর মনোনিবেশ করায় প্রাণশক্তি জোগায় সে। ছেলে মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় সারাদেশের মধ্যে তৃতীয় স্থান অধিকার করলেও পড়াশোনার খরচ কিভাবে চলবে এনিয় সংশয়ে রয়েছেন তিনি।

ঢাকা, ১০ অক্টোবর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//সিএস


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ