লাইভ প্রতিবেদক : শুভ্রা রানী পাল। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের পঞ্চম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হয়ে দেশ সেবা করার। এরই মাঝে তিনি চলে গেছেন না ফেরার দেশে। মানসিক যন্ত্রণায় তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। শুভ্রা রানীর মৃত্যুতে তার পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি সহপাঠীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তারা স্মৃতিচারণ করেছেন।
জান্নাতি তাবাসসুম সায়িমা লিখেছেন, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ, দেশের স্বনামধন্য একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। চান্স পাওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন কারণে অামার এখানে পড়তে ইচ্ছা করে না, বাসা ছেড়ে যেতে ইচ্ছা করে না। অার এতটাই দুর্ভাগ্য যে সেই ২০১৪ সালে ক্লাস শুরুর পর থেকে প্রতি বছর সিরিয়াল ধরে ব্যাচ অনুযায়ী একটা করে সুইসাইডের খবর পাচ্ছি এবং প্রত্যেকেই সিনিয়র অাপু। অার প্রত্যেকই হয় পাশ করে যাওয়ার পর নতুবা পাশ করার খুব কাছাকাছি অবস্থায় সুইসাইড করেছেন এবং এদের প্রত্যেকই সুইসাইড করেছেন by hanging.
অার এবার নিজের ব্যাচমেট Shuvra Rani Paul. এমনিতেই সামনে ডিপ্রেশনের দিন অাসতেছে। ব্লক, অ্যসেসমেন্ট, ফাইনাল প্রফ, পড়াশোনার প্রেশার সব মিলায় বেশির ভাগ সময় মনটা খারাপই থাকে। অারো মন খারাপ করে দিচ্ছে এই খবরগুলো। অাল্লাহ সবাইকে রহম করুক।
নিশাত রায়হানা অনন্যা লিখেছেন, শুভ্রা নামটাই লক্ষ্মী আর মেয়েটা তার চেয়েও বেশি লক্ষ্মী ছিল.. দোস্ত সম্বোধন ছাড়া কথা শুরু করতনা... আমার এত লক্ষ্মী একটা বান্ধবীর এমন খবর এত দূরে থেকে শুনবো ভাবিনি কোনদিন... অনেক খারাপ লাগছে.. বলে দিতি তাহলে ঈদের ছুটির আগে বুকে বুক লাগায় কথাটুকু বলে আসতাম...
যেখানে আছো ভালো থেকো.. নিজের কষ্ট নিজের কাছে রেখে আমাদের কষ্ট বাড়িয়ে চলে গেলে ঘুমের দেশে...
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার শহরের কৃষ্টপুর এলাকার নিজ বাসভবনে শুভ্রা আত্মহত্যা করেছেন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মাহমুদুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার দুপুরে শহরের কৃষ্টপুর এলাকায় শশী মোহন পালের কন্যা শুভ্রা শয়নকক্ষে ফ্যানের সাথে ঝুলতে দেখে পরিবারের লোকজন। পরে ঘরের দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ময়না তদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠায়।
শুভ্রার বাবা শশী মোহন পাল জানান, শুভ্রা রানী পাল ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের পঞ্চম বর্ষে পড়াশোনা করছিলেন। বেশ কিছুদিন ধরে তার কন্যা শুভ্রা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিল। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল আনোয়ার হোসেন শুভ্রার বাবার বরাত দিয়ে জানান, শুভ্রা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকায় মনোরোগ বিশেষজ্ঞ দেখানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল তার পরিবার। কিন্তু শুভ্রা তাতে রাজি ছিলেন না। শেষতক শয়নকক্ষে তার লাশ মিলেছে।
ঢাকা, ২০ জুন (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//সিএস
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: