Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | শুক্রবার, ১৭ই মে ২০২৪, ৩রা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

সন্তানের পথ ধরেই না ফেরার দেশে চলে গেলেন নাননু

প্রকাশিত: ১৩ জুন ২০২০, ১৯:০১

লাইভ প্রতিবেদক: সাংবাদিক মোয়াজ্জেম হোসেন নাননু চলে গেলেন না ফেরার দেশে। একমাত্র সন্তান পিয়াসের পথ ধরেই তিনি অসময়ে চলে গেলেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর। ছেলে হারানোর শোক ও বেদনা যেতে না যেতেই তিনিও অগ্নিদগ্ধ হয়ে প্রাণ হারালেন। ছেলের শোকে কাতর ছিলেন নাননু আর তার স্ত্রী পল্লবী। যুগান্তরের চীফ ক্রাইম রিপোর্টার ও ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন নাননুকে বাঁচাতে ডাক্তাররা অনেক চেষ্টা করেন। আজ শনিবার সকাল ৮টা ২০মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। রাজধানীর আফতাবনগরে জহিরুল ইসলাম সিটির ৩ নম্বর রোডের পিস তাজমহল অ্যাপার্টমেন্টে এ ঘটনা ঘটে।

নাননুর স্ত্রী শাহিনা হোসেন পল্লবী জানান, অফিসের কাজ শেষে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে বাসায় ফেরেন নাননু। ফ্রেশ হয়ে খাবার শেষে ছেলে যে কক্ষে আগুনে পুড়েছিল সেই কক্ষে তাহাজ্জুতের নামাজ আদায় করেন। হঠাৎ বিকট শব্দ এবং নাননুর চিৎকার শুনে গিয়ে দেখেন ঘরে আগুন, নাননুর শরীরের পেছন দিক জ্বলছে। পরে নাননু নিজেই বাথরুমে গিয়ে শাওয়ার ছেড়ে শরীরের আগুন নেভান। ছাদে গিয়ে পাইপ এনে ঘরে ছড়িয়ে পড়া আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। অন্য ফ্ল্যাটের লোকজন তখন ছুটে এসে নাননুকে হাসপাতালে নিয়ে যান। অন্যরা ঘরের আগুন নিভিয়ে ফেলেন। তিনি বলেন, ‘আসলে কিভাবে আগুনটা ধরল তা নাননু সুস্থ হলেই বলতে পারবে।’বার্ন ইন্সটিটিউটের সমন্বয়কারী সামন্ত লাল সেন জানিয়েছেন, সাংবাদিক নাননুর শরীরের ৬০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। শ্বাসনালি পোড়েনি, কিন্তু ১৫ শতাংশের বেশি পুড়লেই ক্রিটিক্যাল বলা হয়। নাননুর অবস্থা খুবই ক্রিটিক্যাল।

নাননু ও তার ছেলে পিয়াস, কেবলই স্মৃতি

 

উল্লেখ্য, আফতাবনগরের ওই বাসায় ২ জানুয়ারি শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র থেকে লাগা আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যান নাননুর একমাত্র ছেলে স্বপ্নীল আহমেদ পিয়াস। ওইদিন ধোঁয়ায় নাননুও অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। ছেলেকে বাঁচানোর চেষ্টা করার সময় পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। স্বপ্নীল মারা যাওয়ার পর তারা ওই ফ্ল্যাটে না থেকে বেশ কিছুদিন অন্য বাসায় ছিলেন। এরই মধ্যে পুড়ে যাওয়া ঘর ঠিক করা হয়।

গত ৩১ মে আবার ওই ফ্ল্যাটে ওঠেন তারা। নাননুর স্ত্রী পল্লবী জানান, বাসায় ওঠার পর থেকে গ্যাসের গন্ধ পাচ্ছিলেন। বিষয়টি ডেভেলপার কোম্পানিকে জানানোও হয়েছিল। সেখান থেকে বলা হয়েছিল, শুক্রবার কোম্পানি থেকে লোক এসে দেখবে। মোয়াজ্জেম হোসেন নাননু দীর্ঘদিন ধরে যুগান্তরের অপরাধ বিভাগে কর্মরত ছিলেন। মাঝে তিনি একটি অনলাইন টেলিভিশনে যোগ দেন। ছেলে স্বপ্নীলের মৃত্যুর পর গত মার্চ মাসে আবার যুগান্তরে যোগ দেন তিনি।

দায়িত্ব পালনের শেষ ছবি। কেবলই বেদনা দেয়।

 

এদিকে, বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েসনের (ক্র্যাব) সভাপতি আবুল খায়ের ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বিকু নান্নুর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। মোয়াজ্জেম হোসেন নান্নু ক্র্যাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি ২০০৭ সালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। তার মৃত্যুতে ক্র্যাব সদস্য ও সাংবাদিক কমিউনিটিতে শোক নেমে এসেছে।

ঢাকা, ১৩ জুন (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিএসসি


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ