
তা'মীরুল মিল্লাত লাইভ: আবহমান গ্রাম-বাংলার সংস্কৃতি হলো পিঠা উৎসব। আধুনিকতার ছোঁয়ায় ও যান্ত্রিক নগরায়নের ফলে এই পিঠা উৎসব আজ বিলুপ্তির পথে। গ্রাম-বাংলা ও বাঙালির এই পিঠা উৎসবের সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে তা’মীরুল মিল্লাত মহিলা কামিল মাদরাসা ডেমরা ক্যাম্পাসে পিঠা উৎসব ও বিজ্ঞানমেলার আয়োজন করেছে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
বিগত বছরের মতো এবছরও দিনব্যাপী আনন্দমুখর পরিবেশে বিজ্ঞানমেলা ও পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারী) সকাল ৯টায় মাদরাসা প্রাঙ্গনে এই পিঠা উৎসব ও বিজ্ঞানমেলা অনুষ্ঠিত হয়।
শীতকালীন পিঠা খাওয়ার অনুভূতি জাগাতে শিক্ষার্থীদের আয়োজনে ছিল গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী পুলি পিঠা, পাটি সাপটা, পাকোরা, চকলেট মুন, ইষ্টি কুটুম, ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, দুধপাকন পিঠা, ডোনাট পিঠা, লাড্ডু, পাস্তা, ঝিনুক পিঠা, জামাই পিঠা, পাকান পিঠা, তালের বড়া, নকশী পিঠা, সেমাই পুলি পিঠা, রস পিঠা, সবজি পাকান, ছিটা রুটি, শামুক পিঠা, ডিম পিঠাসহ বিভিন্ন রকমের পিঠা। শিক্ষার্থীরা নিজেরাই এই পিঠার তৈরি কার্যক্রম সম্পন্ন করে।
পিঠা উৎসবে অংশ নেয়া তা’মীরুল মিল্লাত মহিলা কামিল মাদরাসার ফাজিল শ্রেণীর শিক্ষার্থী হালিমা তুজ সাদিয়া বলেন, ছোটবেলা থেকে শহরে বড় হয়েছি। গ্রামে ওভাবে কখনও যাওয়া হয়নি আর পিঠাও খাওয়া হয়নি। বাংলাদেশের একেক অঞ্চলের একেক রকম পিঠা। আর এই পিঠা উৎসবে সেই পিঠাগুলো এখানে এসেছে। সেই সুযোগে হরেক রকম পিঠা দেখাও হল আর খাওয়াও হল। পিঠা শুধু খাবার না এর সাথে জড়িয়ে আছে গ্রামীণ ঐতিহ্য।
পিঠা উৎসবে ঘুরতে আসা শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানিয়েছেন, ইট পাথরের শহুরে পরিবেশে পড়াশোনা করায় শিক্ষার্থীরা গ্রামের প্রাণবন্ত পরিবেশটি পাচ্ছে না। মায়ের হাতের তৈরি শীতের পিঠার স্বাদও নিতে পারে না। এই সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে এই শীতের পিঠা উৎসব ও বিজ্ঞানমেলা সত্যিই প্রশংসনীয়।
তা'মীরুল মিল্লাত মহিলা কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মুহাম্মদ মিজানুর রহমান ক্যাম্পালাইভকে বলেন, প্রতি বছরই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের নিয়ে পিঠা উৎসব ও বিজ্ঞানমেলার আয়োজন করা হয়। এটি তা'মীরুল মিল্লাতের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের অন্যতম একটি ইভেন্ট। এতে শিক্ষার্থীরা উৎফুল্লভাবে অংশগ্রহন করে থাকে।
অপরদিকে, বাহারি স্বাদের পিঠার পাশাপাশি ছিল বিজ্ঞানমেলার আয়োজন। এই মেলায় শিক্ষার্থীরা নিজেদের বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তিগত উপকরণ উপস্থাপনের মাধ্যমে পুরো উৎসবকে প্রাণবন্ত করে তোলেন। পুরো উৎসব প্রাঙ্গন ঘুরে দেখা যায়, ফোমের মাধ্যমে মডেল নগরী অংকন, ওয়াটার সার্কেল, এটম মডেল, হাইড্রোলিক্স ব্রিজ নির্মান, নগরায়ন সিস্টেম, হোম সিকিউরিটি সিস্টেম, মানব মস্তিষ্কের (হিউম্যান বিয়িং) প্রতিকৃতি উপস্থাপন, যান্ত্রিক শক্তিকে তরিৎ শক্তিতে রুপান্তর, স্বয়ংক্রিয় সড়কবাতি ও জেব্রা ক্রসিং, ড্রেনে পড়ে মৃত্যু ঠেকাতে আধুনিক ড্রেনেজসহ বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞানবিষয়ক প্রদর্শনী ছিল।
ঢাকা, ১ ফেব্রুয়ারী (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এএন//এমএফ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: