আমরা স্বপরিবারে আত্মহত্যা করছি
পরিবার আমার ছোট পরিবার নয়
সাত ভাইবোন- বাবা-মা আছে সাথে
আমরা আছি মোট নয় জন মানুষ
আমাদের আছে আঠারো ক্লান্ত চোখ!
-
দিনের পাতায় কালি পড়ে যাবে যখন
মরে যাব মোরা সমগ্র পরিবার
প্রথমে ছোট্ট তিনমাসী ছোটবোন।
(নাফ নদী জলে একা গিয়ে এই আমি)
ছুঁড়ে ফেলে দেব, চক্ষু বন্ধ করে।
রাখা হয় নি ছোট বোনটির নাম
নাম রাখব এমন সময় কই?
ভেসে উঠে ভোরে নামহীনা সহোদরা
ভুল বোঝাবে যেন মৃত হাঁসছানা...
-
হাঁসছানাটির বড় দুই ভাই আছে
ছয় বয়সী কালো দু:খী ছোট ভাই
তিন দিন ধরে না খেয়ে আছে তারা
বিষ মাখা ভাত খেতে করবে না ভুল!
হাতে গোনা ভাত জোগাড় করেছে মেঝো
সন্ধার আগেই জোগাড় করব বিষ...
-
এই ছোটরা মারা গেলে যারা বাকি
রক্ত রশিতে বেঁধে নেব নিজেদের
ওপার থেকে রক্ত রাঙানো রশি
নিয়ে এসেছি নাফ নদীর এই পাড়ে।
শেষ বাকি জন- পকেটে থাকবে ছুরি
এই ছুরিও এনেছি ওপার থেকে।
-
আমরা বাকিরা বেঁচে থাকা পরিবার
ভিজিয়ে শরীর কেরোসিনে-পেট্রোলে
দেশলাইকাঠি হাসবে সহসা- হঠাত
কেঁপে উঠলে কালো দুটো দুঃখী হাত!
-
আমি বেঁচে আছি?
গলায় লাগাবো গলাকাটা ছুরিখানা।
গলাকাটা সব মুরগীর চোখে চেয়ে
দেখব আমার পুড়ন্ত পরিবার।
ছাই হয়ে যায়, ছাই হয়ে যাবে সব
ঈশ্বরকে শত কোটি অভিশাপ!
-
আগামীকালের সংবাদ মাধ্যমে
খবর হব মৃত নয়জন সমগ্র পরিবার
লাল অক্ষরে বলবে পত্রিকারা
"বিকারগ্রস্ত উম্মাদ পরিবার"
-
আমরা লাশেরা প্রশ্ন করতে জানি
কেউ শুনে না আমাদের প্রশ্ন।
'ভারত-চীন ও রাশিয়া; মিয়ানমার-
তোয়ারাই হ তোয়ারা হইল্লা ফল?
---
বি দ্র : কবিতার শেষ লাইনটি রোহিঙ্গাদের আঞ্চলিক ভাষায় লেখা। এর অর্থ 'তোমরাই বলো তোমরা কতটা পাগল?'
সাদমান সাকিল,
সাধারণ সম্পাদক,
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাহিত্য সংসদ।
ঢাকা, ৩০ সেপ্টেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমএইচ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: