বেরোবি লাইভ: পৃথিবীতে একমাত্র জাতি হিসেবে বাঙালিরা ভাষার জন্য জীবন দিয়েছিলেন। ফেব্রুয়ারি মাস একদিকে শোকাবহ হলেও অন্যদিকে আছে এর গৌরবোজ্জ্বল দিক। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিকে স্মরণীয় করে রাখতে ১৯৭২ সাল থেকে বসছে একুশে বইমেলা। লেখক, প্রকাশকদের আড্ডায় জমে উঠে মেলা প্রাঙ্গণ। নতুন বইয়ের মৌ-মৌ গন্ধে ভিড় করে হাজারো বইপ্রেমী। দেশ-বিদেশি পাঠকরা অংশ নেয় এই মেলায়।
প্রতিবারের মতোই এবারও বইমেলায় অংশ নিয়েছে উত্তরের বাতিঘর নামে পরিচিত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এ বছর নতুন করে প্রকাশ পেয়েছে বেরোবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ছয়টি বই। দুই শিক্ষক ও চার শিক্ষার্থীর মোট ছয়টি বই প্রকাশিত হয়েছে এবারের বইমেলায়।
বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শফিক আশরাফের ‘পাউঠি’ একটি উপন্যাস। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন মোস্তাফিজুর রহমান। বইটি প্রকাশ করেছে টাঙ্গন প্রকাশনী। উপন্যাসটিতে তাঁতশিল্পীদের যাপিত জীবনের বিচিত্র বর্ণনা পাওয়া যায়। গুলির শব্দ, পরপর কয়েকটা। ছোট দুটি বাক্যের মাধ্যমে উপন্যাসের সূচনা, এই বাক্য দুটি ব্যঞ্জনার সৃষ্টি করেছে, উপন্যাসের শুরু হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের আবহের মধ্য দিয়ে, ‘মিলিটারি সব শেষ কইরা ফালাইব গো! পলাও! পলাও!’।
বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নিতাই কুমার ঘোষের ‘কবি স্বভাব ও কাব্যরূপ আজীজুল হক’ বইটি তার তিনজন শিক্ষাগুরুকে উৎসর্গ করেছেন। এটি মূলত একটি গবেষণা গ্রন্থ। বইটিতে আজীজুল হকের তিনটি কাব্যগ্রন্থ সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ। এটি তার দ্বিতীয় প্রকাশিত গ্রন্থ।
শিক্ষকদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরও কাব্যগ্রন্থ ছিলো এবারের বইমেলায় । উপন্যাসের নাম ‘আজব প্রেম’। বইটি প্রকাশ করেছে টুম্পা প্রকাশনী। উপন্যাসটি লিখেছেন বেরোবির পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জেসমিন আক্তার বৃষ্টি। বইটিতে লেখক প্রেম, দুঃখ, বেদনা কিংবা মনের গহীনে লুকানো অনুভূতিগুলো তার লেখনীর মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। বইটি পাওয়া যাবে অমর একুশে বইমেলায় ৩৬৭ নম্বর স্টলে। বইটি প্রকাশ করেছে টুম্পা প্রকাশনী।
‘নোনাজলে নীলরঙ’ একটি কাব্যগ্রন্থের নাম। লিখেছেন বেরোবির অর্থনীতি বিভাগের তরুণ কবি ও লেখক আল-আমিন ইসলাম। এটি তার তৃতীয় বই ও দ্বিতীয় একক কাব্যগ্রন্থ। বইটি প্রকাশ করছে আইডিয়া প্রকাশন। বইটিতে লেখক প্রেম, দুঃখ, বেদনা কিংবা মনের গহীনে লুকানো অনুভূতিগুলো কবিতার মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। অমর একুশে বইমেলায় ৫১০ নম্বর স্টলে আইডিয়া প্রকাশনীতে।
লেখকের প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ- একমুঠো সুখ। তার প্রকাশিত প্রথম যৌথ কাব্যগ্রন্থ- সাহিত্যের কুসুম জ্যোতি এবং নোনাজলে নীলরঙ দ্বিতীয় একক কাব্যগ্রন্থ। বাংলা সাহিত্যে অবদান রাখার জন্য তিনি ইউএসবাংলা সাহিত্য সম্মাননা-২০২২ পেয়েছেন।
বেরোবির ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সোহরাব হোসেনের প্রকাশ পাচ্ছে ‘রঙিন বাক’ নামক কাব্যগ্রন্থ। কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ করেছে নোটবুক প্রকাশ। বইটিতে জীবনের নানা পর্যায় মানুষর উত্থান-পতন, মানবসৃষ্ট বা স্বাভাবিক নিয়মে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো মানুষের মনে আলোড়ন সৃষ্টি করে। মানুষর চিন্তাগুলো বাঁক নেয় পরিস্থিতি সাপেক্ষে। মানুষের ভাবনাগুলোর এই দিক পরিবর্তন বা বাঁক নেওয়ার একটি ছোট্ট ইতিবাচক ইঙ্গিত এই বইটি। বইটি পাওয়া যাবে আলোর ঠিকানা স্টল নম্বর ৪৯৪।
এছাড়াও বেরোবির রসায়ন বিভাগের নবম ব্যাচের শিক্ষার্থী সঞ্জয় পুণীকের ‘পায়ের লোকাল মুদ্রাদোষে’ নামক কবিতার বইটি। সঞ্জয় পুনীক তার কবিতার মধ্যম সমস্ত চিন্তা, প্রতিদিনের যাপন, ক্রাইসিস, প্রেম, বিরক্তি, অভিমান, সময়, চারপাশের আরো অনেক জীবনকে সহজেই কবিতা তুলে নিয়ে এসেছেন। বইটি প্রকাশ করেছে চন্দ্রবিন্দু প্রকাশন। বইটি পাওয়া যাবে বই মেলায় ৬৫-৬৬ নাম্বার স্টলে।
ঢাকা, ২০ ফেব্রুয়ারি (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমএসআর//এমজেড
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: