ইবি লাইভ: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রক্টর ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের প্রফেসর ড. মাহবুবর রহমনের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অঁডিও ফাসের ঘটনা ঘটছে।
মঙ্গলবার জাতীয় দৈনিকে ‘যুগান্তররের কাছে অঁডিও আছে, ইবির নিয়োগ বাণিজ্যে প্রক্টর!’ এ শিরোনামে ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের অ্যাসিসটেন্ট প্রফেসর রুহুল আমিনের সাথে কথোপকপোন প্রকাশ হয়েছে।
এই অঁডিও প্রকাশ হওয়ার সাথে সাথে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নড়ে-চড়ে বসে বলে জানা যায়। অঁডিওতে নিয়োগ বোর্ড শেষে হালিম নামে এক প্রার্থীকে ধরার নির্দেশ দেন প্রক্টর। তাকে ব্রেন ওয়াশ না করলে সর্বানশ হয়ে যাবে বলেও সতর্ক করা হয় রুহুল আমিনকে। ইতিপূর্বে ফাঁস হওয়া অডিওতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের তৎকালীন সভাপতি অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর রুহুল আমিন নিয়োগ প্রত্যাশি খুঁজতে তার বন্ধু এশিয়ান ইউনিভার্সিটির অ্যাসিসটেন্ট প্রফেসর আবদুল হাকিমকে নির্দেশনা দেন।
এবারের কথোপকথনে নিয়োগ বোর্ড শেষ হবার পরে প্রক্টর প্রফেসর ড. মাহবুবর রহমান তার শিষ্য ফিন্যান্স বিভাগের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিনকে হালিম নামে এক নিয়োগ প্রত্যাশীকে ধরে আনতে নির্দেশ দেন। সে চালাকি করছে জানিয়ে তাকে ধরে আনতে বলেন। হালিম ওই নিয়োগ বোর্ডে শিক্ষক হিসেবে চূড়ান্ত হন। তিনি এখন ফিন্যান্স বিভাগের প্রভাষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
কথোপকথনটি হুবাহু পাঠাকের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হলো।
রুহুল আমিন : হ্যালো
মাহবুব: তোমার মোবাইল বন্ধ? ধরতে ছো না যে মোবাইল?
রুহুল: মোবাইল স্যার ভুলে অফিসে রেখে আসছি স্যার, বলেন স্যার
মাহবুব: মোবাইল অফিসে রাখলে তো মুশকিল! হালিম, আমি কিন্তু তোমাকে চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি ও চালাকি করতেছে।
রুহুল: কেন স্যার?
মাহবুব: ও চালাকি করতেছে তুমি যদি এখন আমর সঙ্গে (তুমিসহ) দেখা করতে না আসো ওর যদি ব্রেন ওয়াশ করে না দেই তাহলে কিন্তু সর্বনাশ হয়ে যাবে। ও মানে চালাকি করতেছে মানে কী? হানন্ড্রেড পারসেন্ট চালাকি করছে এবং পালানোর চেষ্টা করছে। সব কিছু “ও” (হালিম) জানে হয়ে গেছে। সব কিছু হয়েগেছে পালানোর চেষ্টা করছে। আমি তোমাকে বললাম, আমার জাস্ট অভিজ্ঞতা দিয়ে বললাম তুমি কাজটা করো। কিছুই না ওকে নিয়ে আসও ব্রেন ওয়াশ করি তার পরে সে যাক। বলছে (হালিম) স্যার খুব ভাল ভাইভা দিয়েছি স্যার, খুব ভাল হয়েছে স্যার, একদম স্যার সব উত্তর দিয়েছি, স্যার কী খবর হয় না হয় স্যার, বাসায় গিয়ে শুনি স্যার। ব্যাগ ট্যাগ গুছিয়ে বাড়ি চলে যাই স্যার, বাসায় গিয়ে শুনি স্যার। তার প্রতিটি কথার মধ্যে আমার সন্দেহ হয়।
রুহুল: না না স্যার, আপনি টেনশন করেন না স্যার।
মাহবুব: তুমি কী তাকে আনতে চাচ্ছো না ?
রুহুল : স্যার আমি দেখছি স্যার, আমি ফোন দিচ্ছি স্যার, কোথায় আছে?
মাহবুব: এখন চলে যাবে। তিনটি ক্যান্ডিডেটের সঙ্গে যদি একটু কথা বলা যেত না সব চেয়ে ভালা হতো।
রুহুল : দেখি আমি কথা বলছি স্যার।
মাহবুব: দেখতো একটু।
তাদের এই কথোপকথন নিয়ে চাঞ্চল্যকার সৃষ্টি হয়েছে। ফিন্যান্স বিভাগের নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ড অনুষ্ঠিত হয় ২০১৪ সালের ১৩ মার্চ। বিজ্ঞাপিত তিনটি পদের বিপরীতে নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ডে অংশ নেন ৩৮ জন। । নিয়োগ নির্র্বাচনী বোর্ডে মো: আবদুল হালিম, সঞ্জয় কুমার সরকার এবং বখতিয়ার হাসানকে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়। যাদেরকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে এদের মধ্যে হালিম এবং সঞ্জয় কুমার সরকারের বিবিএ সম্মান শ্রেণীর ফলাফলে গ্রেড পয়েন্ট ৩.৫০ ছিল না। তবে তাদের শিক্ষক হিসেবে আবেদনের যোগ্যতা ছিল।
অথচ আবাদেনকারীদের মধ্যে ১৫ জনের ফোর ফার্স্ট ক্লাস ছিল। জানা যায় তৎকালীন ভিসি প্রফেসর ড. এম আলাউদ্দিনের কাছের এই প্রফেসর মাহবুবর রহমান কৌশলে এসব শিক্ষকদের নিয়োগ দেন। এই নিয়োগ বোর্ড অনুষ্ঠিত হওয়ার পর ব্যাপক লেনদেন হয় বলে ক্যাম্পাসে সেই সময় আলোচনা হয়।
ঢাকা, ১৯ সেপ্টেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমএইচ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: