Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | শুক্রবার, ৩রা মে ২০২৪, ২০শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

ইবি প্রক্টরের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে গাড়ি ব্যাবহার করার অভিযোগ

প্রকাশিত: ১৭ সেপ্টেম্বার ২০১৭, ২১:০৪


ইবি লাইভ: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) প্রক্টর প্রফেসর . মাহবুবর রহমান অবৈধভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা অনুসরণ না করেই দিনের পর দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি ব্যাবহার করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে

জানা যায়, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) ১১ হাজার ২২৩ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের গাড়ি। দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজার ৮৩৮ লিটার (ডিজেল) তেল পুড়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাগার থেকে ব্যয় হয়েছে লাখ ২৩ হাজার ৬০৫ টাকা। বিশ্ববিদ্যালয় অর্থের এমন অপব্যয় করেছেন ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক প্রক্টর প্রফেসর . মাহবুবর রহমান।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহণ নীতিমালা অনুযায়ি প্রক্টরের ব্যবহারের জন্য কোন গাড়ি বরাদ্দের নিয়মই নেই। শুধুমাত্র দায়িত্বপালনের সুবিধার্থে জরুরী অবস্থা মোকাবেলার জন্য প্রক্টরিয়াল বডিকে একটি গাড়ি ব্যবহারের সুযোগ দেয়ার বিষয়টি নীতিমালায় উল্লেখ রয়েছে

সরকারি বিধি অনুযায়ী গাড়ী প্রাপ্ত একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা মাসে সর্বোচ্চ ১৮০ লিটার তেল ব্যবহারের আনুমতি পান। তবে গাড়ি বরাদ্দ না পেয়েও প্রতি মাসে গড়ে ৩৫০ লিটার তেল পুড়িয়েছেন তিনি। বিষয়টিকে সরাসরি সরকারি নীতিমালার লঙ্ঘন বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা

পরিবহণ দপ্তরের সাথে সম্পৃক্ত কর্মকর্তারা জানান, ব্যক্তিগত গাড়ির মতই সার্বক্ষণিক ব্যবহারের কারনে ছয় মাসে সাড়ে ১১ হাজার কিলোমিটার গাড়ি চলেছে। দূরত্ব দিয়ে অন্তত ৪১ বার কুষ্টিয়া থেকে ঢাকা (দূরত্ব ২৭৭ কি.মি হিসাবে) যাতায়াত সম্ভব। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছুটির দিনগুলো বাদ দিলে কর্মদিবস হয় অর্ধেকের একটু বেশী। এছাড়া গত ছয় মাস রাজনৈতিক কোন অস্থিতিশীলতা না থাকায় ক্যাম্পাস ছিল পুরোপুরি শান্ত

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহণ দপ্তরের তথ্য মতে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে হাজার ৫২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছে প্রক্টরের গাড়ি। পথ পাড়ি দিতে পুড়েছে ৩১১ লিটার ডিজেল। এরপর ফেব্রুয়ারিতে হাজার ৭৪৭ কি.মি, মার্চে হাজার ১৪৮ কি.মি এবং এপ্রিলে হাজার ৩৮৬ কি.মি পথ পাড়ি দেন প্রক্টর . মাহবুবর রহমান। মাসগুলোতে রাষ্ট্রের তেল পুড়েছে যথাক্রমে ২৯১, ৩৫৮ ৩৯৮ লিটার। এরপর মে মাসে হাজার ৮০৬ কি.মি এবং জুনে হাজার ৮৪ কি.মি পথ পাড়ি দিয়েছে প্রক্টরের গাড়ি। দুই মাসে তেল পুড়েছে যথাক্রমে ৩০০ ১৮০ লিটার। মাস ভিত্তিক পাড়ি দেয়া পথ যোগ করলে শুধুমাত্র গত ছয় মাসেই . মাহবুবর রহমানের ব্যবহারের গাড়িটি ১১ হাজার ২২৩ কিলোমিটার পথ চলেছে। এতে পুড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থের হাজার ৮৩৮ লিটার ডিজেল। বিশ্ববিদ্যালয়ের তেল নেয়া পাম্পের তথ্য অনুযায়ি, বর্তমানে প্রতি লিটার ডিজেলের দাম ৬৭ টাকা ২৫ পয়সা। সে হিসাবে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শুধুমাত্র গত ছয় মাসে লাখ ২৩ হাজার ৬০৫ টাকার তেল পুড়িয়ে গাড়ি বিলাস করেছেন

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর হিসেবে ইতিপূর্বে দায়িত্ব পালনকরা একাধিক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, গাড়ি ব্যবহারের নামে প্রক্টর কর্তৃক এমন বিলাস ভ্রমণ নজির বিহীন। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্যাম্পাস গত তিন বছর ধরেই শান্তিপূর্ণ। রকম একটি পরিস্থিতিতেও গাড়ি ব্যবহারের নামে রাষ্ট্রের অর্থের এমন অপব্যয় অসততা দুর্নীতির মধ্যে পড়ে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পরিচালনার জন্যইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহন নীতিমালানামে একটি নীতিমালা আছে। সর্বশেষ ২০০৩ সালের ডিসেম্বর মাসে নীতিমালা সংশোধন করা হয়। নীতিমালার নং ধারা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এবং প্রো-ভিসি এবং নং ধারায় কোষাধ্যক্ষ একটি গাড়ী ব্যবহারের সুযোগ পাবেন বলে উল্লেখ আছে

এছাড়াও নীতিমালার নং ধারা অনুযায়ী রেজিস্ট্রারকে অফিসে আনয়ন, বাসায় পৌঁছে দেয়া এবং দাপ্তরিক কাজের জন্য টি গাড়ী ব্যবহৃত হবে। তবে নীতিমালার কোথাও প্রক্টর বা প্রক্টরিয়াল বডির জন্য কোন গাড়ী বরাদ্দর কথা উল্লেখ নেই

তবে নীতিমালাটির ১৩ নং ধারার একাংশে বলা হয়েছেপ্রক্টরিয়াল বডিকে জরুরী অবস্থা মোকাবেলা করার জন্য একটি গাড়ী ব্যবহারের সুযোগ দেয়া যেতে পারে। তবে ক্ষেত্রে প্রক্টরকে জরুরী অবস্থা জানিয়ে পরিবহন শাখা থেকে গাড়ী চাইতে হবে।পরিবহন অফিস ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহন নীতিমালায় না থাকা শর্তেও প্রক্টরগন গাড়ী ব্যবহার করে আসছেন

বর্তমান প্রক্টর প্রফেসর . মাহবুবর রহমান ক্যম্পাসের মাইক্রোবাসটি (কুষ্টিয়া-, ৫১-০০১১) ব্যবহার করছেন। তবে গাড়িটি মেরামতে থাকার কারনে প্রায় মাস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাইভেট কার (কুষ্টিয়া- ১১ ০০১৩) ব্যবহার করছেন তিনি

প্রক্টর প্রফেসর . মাহবুবর রহমান বলেন,“বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজন ছাড়া আমি মিটারও বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি ব্যবহার করিনি। পূর্বের প্রক্টরগণ যেভাবে গাড়ি ব্যাবহার করেছেন, আমিও সেভাবে করছি। আর যদি বিধি অনুযায়ী প্রক্টর গাড়ি না পায় তবে এই মূহুর্ত থেকে আমি গাড়ি ব্যবহার করবো না।

ভিসি প্রফেসর . হারুন-উর-রশিদ আসকারী বলেন,“ প্রক্টরের গাড়ি ব্যবহার এবং তেল খরচে কোন প্রকার অনিয়ম হয়েছে কি না আমার জানা নেই। অবশ্যই আমি বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখবো।

 

ঢাকা, ১৭ সেপ্টেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমএইচ


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ