ইবি লাইভ: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহবুবা সিদ্দিকার বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে হেনস্তা ও হুমকির অভিযোগ উঠেছে। এদিকে নিরাপত্তা শঙ্কার কথা উল্লেখ করে ছাত্র উপদেষ্টা ও প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী।
ঘটনাটি অনুসন্ধান করতে খালেদা জিয়া হলের আবাসিক শিক্ষক নাজমুল হুদাকে আহবায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্য হিসেবে আছেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাহিদা আক্তার এবং ল’ এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রভাষক মেহেদী হাসান।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) ইবির খালেদা জিয়া হলের সিট বরাদ্দের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়। হলের সিট বরাদ্দের সাক্ষাৎকার বোর্ডে উপস্থিত ছিলেন অভিযুক্ত শিক্ষিকা মাহবুবা সিদ্দিকা। তিনি বর্তমানে ইবির খালেদা জিয়া হলের হাউজ টিউটরের দায়িত্ব পালন করছেন। হলের সিট বরাদ্দের সাক্ষাৎকারের সময় একাধিক ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগ রয়েছে এই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে।
সূত্র মতে, গত মঙ্গলবার খালেদা জিয়া হলে আবাসিকতা প্রাপ্তির আবেদনকারী ছাত্রীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। এসময় এক ছাত্রী হিজাব পরে এবং হলের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে না যাওয়ার কারণে তাকে ওই শিক্ষিকা বিভিন্নভাবে শিবির প্রমাণের চেষ্টা করে বলে জানা যায়।
ভুক্তভোগী সূত্রে, ওই ছাত্রী তার আত্নীয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতাকে বিষয়টি জানালে তিনি শাখা ছাত্রলীগ কর্মী সাগরকে এ বিষয়ে অবগত করেন। সাগর মাহবুবা সিদ্দিকার সাথে যোগাযোগ করে ওই ছাত্রীকে হেনস্তা না করার জন্য অনুরোধ করেন। পরে ২৪ আগস্ট ভুক্তভোগী ছাত্রীকে হল প্রভোস্টের কার্যালয়ে আবারো ডাকেন মাহবুবা সিদ্দিকা। সেদিন ঐ ছাত্রীকে হেনস্তা ও হুমকির সময় তাকে নানাভাবে শিবির প্রমাণের চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর।
এসময় সাগরের মাধ্যমে তাকে ফোন করায় ক্ষিপ্ত হয়ে মাহবুবা সিদ্দিকা বলেন, ‘তুমি আবার তোমার ভাইকে দিয়ে আমাকে ধমক দাও। তোমার এলাকার মেয়রকে চেনো, টিটু ভাইকে চেনো? একদম বইলা ওখানেই তোমারে পুইত্তা (পুঁতে) দিবোনে। চিনো আমারে? আমার বাড়ি কোথায় জানো? আমার শ্বশুর বাড়ি কোথায় জানো? আমার সম্পর্কে জানো? ফাইজলামি আমার সাথে না? এলাকায় আর টিকতে পারবা না।’
এসময় তিনি আরো বলেন, ‘তুমি কোন ছাত্রলীগ দেখাবা, আমি রোকেয়া হল ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক, আমার নাম মাহমুদা সিদ্দিকা, চিনো তুমি আমারে? আমি কতো পাওয়ার চালাইছিলাম তুমি জানো?’
এদিকে মাহবুবা সিদ্দিকা যে স্থানীয় মেয়রের কথা বলে ছাত্রীকে হুমকি দিয়েছেন, সেই মেয়র তাকে চেনেন বলে জানিয়েছেন। ময়মনসিংহ পৌরসভা মেয়র ইকরামুল হক টিটু বলেন, ‘আমি ওই শিক্ষিকাকে চিনি না। সে এমনটা বললে অবশ্যই অপরাধ করেছেন।’
লিখিত অভিযোগের বিষয়ে ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরীন ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, ‘আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে আগামীকাল বসবো। বিভিন্ন পত্রিকায় যে ভাষার কথা উল্লেখ হয়েছে সেটি সত্য হলে এভাবে বলা সমীচীন হয়নি।’
হুমকির বিষয়ে সহকারী অধ্যাপক মাহবুবা সিদ্দিকা ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, ‘বিষয়টি আংশিক সত্য, আংশিক মিথ্যা। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীকে হুমকি দিতে পারে না, শাসন করতে পারে। ওই ছাত্রীকে পরে ডাকা হয়েছে, কারণ সে আমার ছাত্রের মারফতে আমাকে থ্রেট করেছেন।’
হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন আরা সাথী ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, ‘আমরা ঘটনার একটি অংশ জেনেছি। পুরো বিষয়টি জানার জন্য তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
ঢাকা, ২৮ আগস্ট (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এএইচ//এমজেড
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: