Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | রবিবার, ২৮শে এপ্রিল ২০২৪, ১৪ই বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

ইবিতে পার্থেনিয়াম গাছের বিষাক্ততায় শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি

প্রকাশিত: ২৬ আগষ্ট ২০২২, ০৪:৫৯

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পার্থেনিয়াম গাছ

সামী আল সাদ, ইবি: ঝোপঝাড়ে জন্ম নেয়া চন্দ্রমল্লিকা গাছের পাতার মত এক বিষাক্ত উদ্ভিদের দেখা মিলছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ক্যাম্পাসে। ছোট আকৃতির সবুজ গাছের মাথায় সাদা ফুল বিশিষ্ট এই উদ্ভিদের নাম পার্থেনিয়াম। যার বৈজ্ঞানিক নাম পার্থেনিয়াম হিস্টিরিওফোরাস। সাধারণত গাছটি উচ্চতায় ১ থেকে ১ দশমিক ৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে।

উদ্ভিদ বিজ্ঞানীরা জানান, এ গাছের উৎপত্তি উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকায় হলেও আমদানিকৃত গমের সাথে পার্থেনিয়াম এ দেশে প্রবেশ করে। এই গাছটির বংশবৃদ্ধির হার অধিক মাত্রায় হওয়ায় খুব দ্রুত ছড়িয়ে পরে বিভিন্ন স্থানে। পার্থেনিয়ামের একটি গাছ থেকে ৪-৫ হাজার গাছ জন্মাতে পারে। সাধারণত এ গাছটিকে রাস্তার পাশে বেশি জন্মায়।

সরজমিনে ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসি, ক্রিকেট মাঠ, ফুটবল মাঠ, কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন এলাকা, শেখ রাসেল হল, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, পেয়ারা তলা, মফিজ লেক, প্যারাডাইস রোড সহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন রোডের দু‘পাশে পার্থেনিয়াম গাছের আধিক্য সবচেয়ে বেশি। এছাড়াও ক্যাম্পাসের আবাসিক এলাকায়ও এ গাছের ঝোপ রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. মিহির লাল সাহ ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, পার্থেনিয়াম গাছটির সাদা ফুলে পার্থেনিন নামক এক বিষাক্ত পদার্থ রয়েছে। এর মধ্যে ক্যাফেইক অ্যাসিড, পি-অ্যানিসিক অ্যাসিড সহ বিভিন্ন বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতি রয়েছে। যার কারণে গাছটি অতি বিষাক্ত। পার্থেনিন ত্বকে লাগলে নানা ধরনের চর্মরোগ দেখা দিতে পারে৷ এছাড়া এ ফুলের রেণু অতি হালকা হওয়ায় বাতাসের সাথে মিশে ফুসফুসে পৌছাতে পারে। যার থেকে হাপানি, শ্বাসকষ্ট, চর্মরোগ, অ্যালার্জি সহ নানা ধরনের রোগের দেখা দিতে পারে।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. রেজওয়ানুল ইসলাম ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, এটি শুধু মানুষ নয়, এর ফলে ফসলেরও ক্ষতি হয়। কৃষিজমিতে এ গাছ থাকলে ফসলের উৎপাদ‌ন কম হয়। এছাড়া গরু-ছাগল এই গাছ খেয়ে ফেললে জ্বর ও বদহজমের সমস্যা দেখা দেয়। এমনকি এ গাছ গবাদিপশুর মৃত্যুরও হতে পারে। এই গাছ দমন করতে হলে, গাছে ফুল ফোটার পূর্বে তা তুলে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। এভাবে কয়েক মৌসুম এটার উৎপাদন রোধ করা গেলে এটি পুরোপুরি নির্মূল সম্ভব।

পার্থেনিয়াম গাছ

এই ক্ষতিকারক গাছটি ক্যাম্পাসে ব্যাপক হারে বিস্তার লাভ করলেও গাছটি সম্পর্কে অধিকাংশ শিক্ষার্থীর নেই কোন স্পষ্ট ধারণা। এ গাছটি দ্রুত অপসারণ না করা গেলে শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্য ঝুঁকি সম্মুখীন হতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আকাশ ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, গাছটির ব্যাপারে আমি জানতাম না। যে কোনও সাধারণ গাছ মনে করেছিলাম। এমন অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা এই গাছ চেনে না। এজন্য ক্যাম্পাসে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের মধ্যে সচেতনতা তৈরী করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেরুন নেসা মৌ ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, এই ক্ষতিকারক গাছটি নির্মূল করতে হবে। এছাড়া সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দ্রুততম সময়ের মধ্যে পার্থেনিয়ামসহ ক্যাম্পাসের সব ঝোপঝাড় পরিষ্কার করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেট অফিসের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোয়াজ্জেম হোসেন ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে মালির সাথে কথা বলে ক্যাম্পাসে জন্মানো গাছগুলো পুড়িয়ে ফেলা যায় কি না সে ব্যাপার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমান ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, এমন ক্ষতিকারক গাছ যদি ক্যাম্পাসে থেকে থাকে তাহলে আমরা দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

ঢাকা, ২৫ আগস্ট (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম//এমজেড


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ