Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | বৃহঃস্পতিবার, ২রা মে ২০২৪, ১৯শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

ক্যাম্পাসে যবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের ইফতার....

প্রকাশিত: ২৫ এপ্রিল ২০২২, ০৫:৩৩

ক্যাম্পাসে যবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের ইফতার আয়োজন

যবিপ্রবি লাইভ: বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার আগে রমজানে পরিবারের সাথে ইফতারের অভিজ্ঞতা ছিল অন্য রকম। পরিবারের সবাই একসাথে ইফতার করা হয় কিন্তু হলে বন্ধুদের সাথে ইফতার করার অনুভূতিটা আলাদা। ইফতার করাটা শুধু খাওয়ায় সীমাবদ্ধ নয়, সবার সাথে সম্পর্কও গভীর হয়। কারো কারো এবার ক্যাম্পাসে শেষ ইফতার। স্মৃতিপটে ভেসে উঠছে বন্ধুদের সাথে কাটানো এত দিনের মধুর সময়গুলো।

সূর্য যখন পশ্চিম দিকে হেলতে শুরু করে তখন জমে ওঠে বন্ধুদের সাথে ইফতার আড্ডা।যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) আবাসিক হল, কেন্দ্রীয় মাঠ, ক্যাফেটেরিয়া, জামে মসজিদ, টিএসসির প্রতিটি ফ্লোর, অদম্য'৭১ চত্বরসহ ক্যাম্পাসের প্রায় প্রতিটি স্থানে শিক্ষার্থীরা ইফতার করার জন্য সমবেত হয়। সবাই গোল হয়ে বসে মেতে ওঠে ইফতারের আনন্দে। এর মাধ্যমে ধর্মীয় উৎসবের আমেজ ফুঁটে ওঠে। এতে অংশ নেয় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে যবিপ্রবিতে ভর্তি হওয়া বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা।

ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী নওরিন আক্তার ঐশী ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, সারাদিন রোজা রাখার পর সন্ধ্যাবেলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের খোলা মাঠে বসে ইফতার করার স্বাদটাই যেন অন্য রকম।কয়েকদিন আগে বন্ধু-বান্ধবীরা মিলে ক্যাম্পাসের ফিল্ডে ইফতার করেছিলাম। ইফতারের ঘন্টাখানেক আগে তোড়জোড় শুরু হয়ে গেল, সবাই দল বেঁধে গোল হয়ে বসলাম।চারিদিকে সব বড় আপু-ভাইয়েরাও বসে ইফতারের আয়োজন করছিল।

এসময় তিনি আরো জানানা, ইফতারির জন্য ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক ভবনের সামনের মাঠে বসছিলাম, আত্মশুদ্ধির এই মাসে এ যেন এক অন্য রকম অনুভূতি। ক্যাম্পাস জীবনের এইটাই প্রথম ইফতার ছিলো আমার। সবাই মিলে ভাগাভাগি করে ইফতার করার যে আনন্দ, তা ক্যাম্পাস জীবনের প্রথম ইফতার পার্টিতে অনুভব করতে পেরেছিলাম। এই দিনটি সারাজীবন আমার কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

পেট্রোলিয়াম এন্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী কবির হোসেন ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, ক্যাম্পাসে ইফতারের এত সুন্দর পরিবেশ আগে কখনো কেউ দেখেছে কি না জানি না বা কেউ দেখবে কি না তাও জানি না। তবে আমার ৪ বছরের ভার্সিটি লাইফে রমজান উপলক্ষে এত সুন্দর জাঁকজমকভাবে প্রতিদিন ইফতারের আয়োজন এই প্রথম। ইফতারে এত উৎসব মুখর পরিবেশ, মনে হয় যেন সেন্ট্রাল ফিল্ডে প্রতিদিনই ঈদ হচ্ছে।

এসময় তিনি আরো বলেন, যেখানে সক্রিয়ভাবে প্রতিটা ডিপার্টমেন্টসহ প্রতিটা এসোসিয়েশন, সংগঠন সুন্দর ভাবে ইফতারের আয়োজন করছে। সারাদিন ক্লাস, সিটি এসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টশন, ল্যাব করার পরেও সবাই আন্তরিকতার সহিত উপস্থিত ছিলো। যার জন্য সেন্ট্রাল গ্যালারি বা টিএসসি তো ফাকা ছিলোই না সাথে সেন্ট্রাল ফিল্ডেও দেখা গিয়েছে ১০/১২ টা সার্কেল।ক্যাম্পাসে শেষ রমজানে সিনিয়র, জুনিয়র, বন্ধু, স্যারদের ভিতর এমন আন্তরিকতা দেখতে পেরে খুব ভাল লাগছে।

আফসানা জামান শিম্মি ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, গত ২ বছর বাড়িতেই পুরো রোজার মাস কেটেছে। বাড়িতে থাকা মানে বিকাল থেকে ইফতার এর সব আয়োজনে ব্যস্ত থাকা,বিভিন্ন আয়োজনে ইফতারের আমেজ। এ বছর তো শুরু থেকে এখনো পর্যন্ত ক্যাম্পাসেই সবাই এক সাথে সেহরি খাওয়া, রোজা থাকা ও ইফতার করা হচ্ছে।আম্মু আব্বু প্রায় প্রতিদিনই জিজ্ঞাসা করে ইফতার কি দিয়ে করেছি। যেদিন বলি রুমে একা ইফতার করেছি, বুঝতে পারি তারা চিন্তা করে যে কি খেয়েছি না খেয়েছি। কিন্তু যখন বলি সবাই এক সাথে ইফতার করেছি, তাদের কন্ঠে একটু স্বস্থি খুজে পাই, তাদের মধ্যে প্রশান্তি কাজ করে।

এসময় তিনি আরো বলেন, সবাই যার যার সারাদিনের কাজ, টিউশন শেষে যখন হাতে হাতে ইফতার পরিবেশন করি, মুঠো ভরে মুড়ি-ছোলা, কাড়াকাড়ি- ভাগাভাগিতে সারাদিনের ক্লান্তি আর পরিবার থেকে দূরে থাকার কষ্টটুকু নিমিষেই উধাও হয়ে যায়। এটাই যবিপ্রবি'তে শেষ রোজা পালন হচ্ছে, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যাব। সবার সাথে আর ইফতার করা হবে না, শেষ মুহূর্তের এই দিন গুলো স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

যবিপ্রবির ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার নিশান ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, ক্যাম্পাসে ইফতার অনেক বেশি শান্তির, একসাথে সবার সাথে বসা কথা বলা। এভাবে সবাই বসা হয়না সাধারণত, কিন্তু ইফতার সুযোগ করে দেয় একত্রিত হওয়ার। বন্ধুদের সাথে ইফতার করলে পরিবার থেকে দূরে থাকার কথা আর মনে থাকে না।

রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী প্রজ্ঞা পারমিতা ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, বিকেলে ক্যাম্পাসের মাঠে দেখা যায় গোলাকার ভাবে বসা বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের ছেলেমেয়েদের ইফতার আয়োজন। এই ইফতারে অংশগ্রহণের মাধ্যমে যেমন নিজের সহপাঠীদের সাথে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় হয় তেমনি বড়ভাই আপুদের সাথেও বন্ধন গাঢ় হয়, অনেক সময় আমাদের সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ আসেন এবং কুশলাদি বিনিময় করেন।পরিবার ছেড়ে দূরে থাকা সহপাঠীদের জন্য সারাদিনের ক্লান্তি দূর করার সুন্দর এক পরিবেশ হয়ে উঠেছে ভালোবাসার এই বৃত্তগুলো।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি,সাংবাদিক সমিতি, বিএনসিসি, বিভিন্ন ক্লাব, জেলা সমিতি, স্বেচ্ছাসেবী ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোও ইফতার পার্টি করে থাকে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো হতদরিদ্র ও পথশিশুদের জন্য ইফতারের আয়োজন করে।

ঢাকা, ২৪ এপ্রিল (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ