ইবি লাইভ: গুচ্ছ বাতিল করে ফের স্বতন্ত্রভাবে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের দাবিতে সরব হয়ে উঠেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। একই দাবি জানিয়েছেন গুচ্ছে অংশ নিয়ে ভর্তি হওয়া প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরাও।
তাদের দাবি, গুচ্ছ ভর্তি যে উদ্দেশ্যে চালু করা হয়েছিল তা সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে। ভর্তিচ্ছুদের ভোগান্তি কমার পরিবর্তে আরো বেড়েছে। তাই গুচ্ছ বাতিল করে স্বতন্ত্রভাবে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করা হোক। এদিকে ইবি ফের গুচ্ছে গেলে শিক্ষকরা ভর্তি কার্যক্রমে অংশ নেবেন না বলে এক সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দিয়েছেন।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ১৭ অক্টোবর থেকে পহেলা নবেম্বর পর্যন্ত গুচ্ছভূক্ত ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া ২ নবেম্বর ইবির ধর্মতত্ত্ব ও ইসলাম শিক্ষা অনুষদের ভর্তি পরীক্ষা স্বতন্ত্রভাবে অনুষ্ঠিত হয়। এতে ধর্মতত্ত্ব অনুষদের ভর্তি কার্যক্রম শেষ হলেও গুচ্ছভূক্ত ইউনিটগুলোর ভর্তি কার্যক্রম এখনো শেষ হয়নি। ছয় ধাপে ভর্তি শেষেও এখনো ১২০টি আসন ফাঁকাই রয়ে গেছে। গত ২১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হয়েছে। ফলে ফাঁকা আসনগুলোতে ভর্তিচ্ছুরা তুলনামূলক পিছিয়ে পড়ছেন। এদিকে আইসিটি সেলও বেশ কয়েকবার কারিগরি জটিলতায় পড়েছেন বলে জানা গেছে। বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় আসন ফাঁকা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করেছে।
এদিকে গুচ্ছে নেতৃত্ব দেওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ও গুচ্ছে অংশ নেবেন কি-না এ ব্যপারে সংশয় রয়েছে। এ প্রক্রিয়া শিক্ষার্থী বান্ধব নয় অভিযোগ তুলে স্বতন্ত্র পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণের দাবি তুলেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিও। এছাড়া বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা একই দাবিতে সরব হয়ে উঠেছেন।
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির শুভ ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, ভর্তি পরীক্ষার আগে শুনেছিলাম গুচ্ছতে ভোগান্তি কমবে, উল্টো বেড়েছে। ভর্তি কার্যক্রমে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে তীব্র মানসিক প্রেসারের পাশাপাশি সময় ও অর্থের অপচয় হয়েছে। হ-য-ব-র-ল অবস্থার কারণে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেয়েও পছন্দের বিভাগে ভর্তি হতে পারিনি। এ ধরণের ঝামেলাপূর্ণ প্রক্রিয়া থেকে বের হয়ে আসা জরুরি।
ইবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মিজানূর রহমান ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় সুবিধার পরিবর্তে অবিভাবক ও শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি বেড়েছে। এ প্রক্রিয়া উদ্দেশ্য পুরোপুরি ব্যর্থ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্বশাসন পরিপন্থী। ভোগান্তি ও জটিলতা কমাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্যাটিউট অনুসারে পৃথকভাবে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করা হোক। ইবি ফের গুচ্ছে গেলে আমরা শিক্ষকরা ভর্তি কার্যক্রমে অংশ নেবো না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, ভর্তি পরীক্ষার ব্যপারে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি। শিক্ষার্থীরাই আমাদের প্রধান স্টেকহোল্ডার। তাদের সুবিধার্থে যা করা লাগে আমরা করবো। শিক্ষকরাও গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে আসার দাবি জানিয়েছেন। শিক্ষকদের ছাড়া তো পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয়। গুচ্ছভূক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের পরবর্তী মিটিংয়ে আমি বিষয়টি তুলে ধরবো।
ঢাকা, ০৬ এপ্রিল (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এআই/এমআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: