এ টি এম মাহফুজ, যবিপ্রবি: যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) শেখ মুজিব একাডেমিক ভবনের লিফট ভোগান্তির যেন শেষ নেই। রমজান মাসে এই ভোগান্তি বেড়েছে কয়েকগুন, ভবনের প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষক-শিক্ষার্থীর জন্য বরাদ্দকৃত তিনটি লিফটের একটি মাসখানেক ধরে পুরোপুরি বন্ধ, অথচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নেই কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ।
৫ এপ্রিল মঙ্গলবার সকাল ৯:০০ টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমিক ভবনের নিচতলায় লিফটে উঠার জন্য দীর্ঘ লাইন দিতে দেখা যায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। অনেকে লিফটের জন্য প্রায় ৩০ মিনিট লাইনে দাঁড়িয়েও লিফটে উঠতে পারেননি। পরে ক্লাস সময় হওয়ার কারণে অনেকে শিক্ষক শিক্ষার্থী হেটে উঠেছে নয়তলা এই ভবনের বিভিন্ন তলায়।
প্রত্যক্ষদর্শীর কাছ থেকে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের জন্য ২ টি লিফটের মধ্যে একমাস ধরে ১ টি বন্ধ থাকায় ১ টি লিফটে করেই সকল শিক্ষার্থীকে চলাচল করতে হচ্ছে। এর ফলে এত বেশি চাপ ও দীর্ঘ লাইনে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও সুযোগ মিলছেনা।
অপরদিকে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণ চলন্ত লিফটে আটকা পড়ার ঘটনা যেন নিত্যদিনের ভোগান্তি হয়ে পড়েছে। মাস খানেক আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য লিফটে মিনিট বিশেক আটকে ছিলেন, গত মার্চ মাসে একদিনে ৮ বার চলন্ত লিফটে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা আটকা পড়েন। এতে কয়েকজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এই নিয়ে একাধিকবার কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ সহ দেশের জাতীয় পত্রিকা ও জনপ্রিয় অনলাইন পত্রিকাতে নিউজ হওয়ার পরেও নির্বিকার ভূমিকা পালন করছে যবিপ্রবি প্রশাসন।বিদ্যুৎ বিভ্রাট সমাধানের জন্য যবিপ্রবির বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমিক ভবনে ৫০০ কেভিএ ডিজেল জেনারেটর স্থাপন করা হলেও তা ফলপ্রসূ না হওয়ায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট সমস্যা বেড়েই চলেছে।
ভোগান্তির শিকার পেট্রোলিয়াম এন্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী কবির হোসেন ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, লিফটের সমস্যা এমন পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে যে লিফটে উঠতে পারা মানে দিনের প্রথম সফলতা অর্জন করা।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিজ্ঞান অনুষদের নেহাল ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, একটি লিফটে জায়গা না পেয়ে পাশের লিফট খালি থাকায় আমরা ৬ জন উঠেছিলাম।কিন্তু কয়েকজন শিক্ষক আমাদেরকে নামিয়ে দিয়ে নিজেরা চলে যান, আমাদের সাথে কয়েকজন নারী শিক্ষার্থী থাকলেও তাঁদেরকেও নামিয়ে দেন।
ভুক্তভোগি আরেক শিক্ষার্থী রফিকুল ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, রোজা অবস্থায় সিঁড়ি হেঁটে আটতলায় উঠানামা অনেক কষ্টের।লাইনে দাঁড়িয়েও লিফটে উঠতে পারেননি, পরে ক্লাস সময় হওয়ার কারণে হেটে উঠেছি।এর কারণে ক্লাসে উপস্থিত হতেও দেরি হয়ে গেছে।
এই বিষয়ে প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মোঃ আনিসুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন কথা বলতে রাজি হননি।
তবে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একজন কর্মকর্তা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, বেশ অনেকদিন ধরেই লিফটের ইনকোডর ও পিজি কার্ড নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। লিফটের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সিকিউরিটি ম্যানি না দেওয়ার জন্য তারা এগুলো আর দেখভাল করছে না। যার জন্য মূলত এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে ইন্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে এই যন্ত্রপাতি কেনার জন্য যে টাকার আবেদন করা হয়েছে সেই ফাইল হিসাব দপ্তরে অনেকদিন যাবত আটকে রয়েছে। এই কারণে লিফটির মেরামত কাজ এখন পর্যন্ত বন্ধ আছে।
ঢাকা, ০৫ এপ্রিল (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমজেড
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: