ইবি লাইভ: বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণকে অবমাননার অভিযোগ উঠেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ছাত্র আরিফুজ্জামানের বিরুদ্ধে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
এ ঘটনায় সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে আরিফুজ্জামানকে ল্যাম্প পোস্টে দঁড়ি দিয়ে বেঁধে মারধর করে শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। পরে অভিযুক্তকে প্রক্টরিয়ার বডির নির্দেশনায় ইবি থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান ক্যাম্পাসলাইভকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, যে বিষয়ে অভিযোগ করা হয়েছে সেটি অভিযুক্তের ফোনে পাওয়া যায়নি। আমরা ফোনটি রেখে দিয়েছি।
তিনি বলেন, প্রযুক্তির সাহায্যে আরো যাচাই-বাছাই করবো। তার পরে আইনগত ব্যবস্থা নেব। প্রক্টরের নির্দেশনা অনুযায়ী অভিযুক্তকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের হাতে দেওয়া হয়েছে।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক সাতই মার্চ ভাষণ দিবস উপলক্ষ্যে সকাল ৮ টা থেকে বিভিন্ন আবাসিক হল ও ভবনে বঙ্গবন্ধুর সাত মার্চের ভাষণ বাজানো হচ্ছিল।
এ নিয়ে সকাল ১০টার দিকে মিম ইসলাম নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে একটি ফেইসবুক পোস্টে লেখেন, ‘ম্যাক্সিমাম ডিপার্টমেন্টে এখন পরীক্ষ চলে, এভাবে এত লাউডলি মাইক বাজালে পড়াশোনা কিভাবে করবো!’
সেই স্ট্যাটাসে আরিফুজ্জামান নামে একটি আইডি থেকে এক কমেন্টে লেখা ছিল, ‘জাতির আব্বার ভাষণ, তুমি তো মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপক্ষে চলে যাচ্ছে। দুইটি হাসির ইমোজি।’ সেখানে মীম প্রতুত্তরে লেখেন, ‘একটু সাউন্ড কমিয়ে বাজালেও তো হয়।’
সেখানে আরিফ আবার লিখেন, ‘তুমিতো জানো জাতীর আব্বু এই শক্তিশালী ভাষণেই আজ জাতি স্বাধীন এবং সিঙ্গাপুর এর চেয়ে উন্নত। তাই জোওে বাজিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণা জানানো হচ্ছে। না পড়লেও চলবে। এমনি সিঙ্গাপুর এটা।’
এর প্রেক্ষিতে বাংলা বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা রাকিব প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। সেখানে তিনি লেখেন, আরিফুজ্জামান নামে একটি আইডি থেকে বিভিন্ন সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তিমূলক মন্তব্য করে যাচ্ছে। একইসাথে তিনি আরিফের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থার দাবি জানান।
অভিযোগের পরেও কার্যত ব্যবস্থা না নেওয়ায় রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাকিব এবং ইবি ছাত্রলীগের সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের আরিফ অভিযুক্তকে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক এলাকায় ল্যাম্প পোস্টের খুঁটিতে দঁড়ি দিয়ে বেঁধে মারধর করেন।
পরে রাত ১০টার দিকে সহকারী প্রক্টর ড. আমজাদ হোসেন ও শরিফুল ইসলাম জুয়েলের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরে আরিফকে (কটূক্তিকারী) ইবি থানায় সোপর্দ করা হয়। পরবর্তীতে প্রক্টরের নিদের্শে অভিযুক্তকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের হাতে দেওয়া হয়। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আগামীকাল মঙ্গলবার অভিযুক্তকে নিয়ে প্রক্টরিয়াল বডি আলোচনায় বসবে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে রাকিব হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণ কটূক্তিকারীকে (আরিফ) প্রাথমিকভাবে ধরেছি। পরে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছি। অতি দ্রুত তার প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা রোজদার আলী রূপম ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, নির্দেশনা অনুযায়ী তাকে (আরিফ) ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা, ৭ মার্চ (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: