ইবি লাইভ: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচন-২০২২ কে ঘিরে তৎপর হয়ে পড়েছে শিক্ষক রাজনীতি। ব্যাপক প্রস্তুতি শুরু করেছে আওয়ামী পন্থী শিক্ষকরা।
শনিবার (৪ ডিসেম্বর) নির্বাচনে নিজেদের প্যানেল দিতে আওয়ামী পন্থী শিক্ষকদের সংগঠন ‘শাপলা ফোরামের নতুন কমিটি জরুরি সাধারণ সভা করেছে। সভায় ‘নির্বাচন পরিচালনা’ ও ‘প্যানেল প্রস্তুত’ দুইটি কমিটি গঠন করেছে নেতাকর্মীরা। এদিকে শাপলা ফোরামের নির্বাচনে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে দায়িত্ব হস্তান্তর করেনি পূর্বের কমিটি। একইসাথে নতুন কমিটির জরুরি সাধারণ সভাকে গঠনতন্ত্র পরিপন্থী বলে দাবি করেছে তারা।
সভা সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১২ ডিসেম্বরের নির্বাচনকে ঘিরে আজ শনিবার (৪ ডিসেম্বর) জরুরি সাধারণ সভা আহ্বান করে নতুন কমিটি। আগামীকাল রবিবার (৫ ডিসেম্বর) মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় হওয়ায় এই সভা ডাকা হয়েছিল এবং সভায় দুইটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
কমিটিতে বাংলা বিভাগের প্রফেসর ড. মিয়া রাশিদুজ্জামানকে আহ্বায়ক করে ৬ সদস্য বিশিষ্ট ‘নির্বাচন পরিচালনা’ কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন প্রফেসর ড. অশোক কুমার চক্রবর্তী, প্রফেসর ড. আশরাফুল আলম, সহকারী অধ্যাপক শাহবুব আলম, শরিফুল ইসলাম জুয়েল ও কাজী মওদুদ আহমেদ।
এদিকে পরিসংখ্যান বিভাগের প্রফেসর ড. কামাল উদ্দীনকে আহ্বায়ক করে ‘প্যানেল প্রস্তুত’ কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য পাঁচ সদস্য হলেন, প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন, প্রফেসর ড. মামুনুর রহমান, প্রফেসর ড. মাহবুবুল আরফিন, প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন ও সহযোগী অধ্যাপক ড. ধনঞ্জয় কুমার।
এদিকে শাপলা ফোরামের নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর থেকে পক্ষপাতিত্ব ও কারচুপির অভিযোগ করে আসছে পূর্বের কমিটি। নির্বাচন কমিশন নিয়ে সাতটি অভিযোগ তুলে তারা সংবাদ সম্মেলনও করেছেন। এছাড়াও নতুন কমিটির হাতে দায়িত্ব হস্তান্তর নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
আজ শনিবার নতুন কমিটির আহ্বানকৃত ‘জরুরি সাধারণ সভা’ গঠনতন্ত্র পরিপন্থী দাবি করে সভায় অনুপস্থিত ছিলেন পূর্বের কমিটির নেতাকর্মীরা। তাদের দাবি, ‘জরুরি সাধারণ সভা’ শব্দটি গঠনতন্ত্রের কোথাও উল্লেখ নেই। একইসাথে নির্বাচনে আলাদাভাবে প্যানেল দেয়ার কথা জানিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে শাপলা ফোরামের পূর্বের কমিটির সভাপতি প্রফেসর ড. রেজওয়ানুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘শাপলা ফোরামের নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পরপরই আমরা ভোট পূনঃগণনার দাবি জানিয়েছি। ত্রুটিপূর্ণ ফলাফল পূনঃগণনা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কাছে নতুন কমিটির গ্রহণযোগ্যতা নেই। আমরা নিজেরা ফোরামের পক্ষ থেকে একটি প্যানেলে তৈরি করবো। যতক্ষণ পর্যন্ত শাপলা ফোরামের নতুন কমিটি নিয়মতান্ত্রিকভাবে তৈরি না হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা যে প্যানেল করবো সেটিই শাপলা ফোরামের প্যানেল।’
পূর্বের কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মাহবুবর রহমান বলেন, ‘শাপলা ফোরামের নতুন কমিটির যদি গ্রহণযোগ্যতা ও বৈধতা থাকতো তাহলে তো সবাই ছুটে আসতো। আমরাও চারটি সাধারণ সভা করেছি। লোকে লোকারণ্য ছিল। কিন্তু এদের করুণ অবস্থ হইলো কেন? গঠনতন্ত্রের কোথাও ‘জরুরি সাধারণ সভা’ উল্লেখ নেই। তারা গঠনতন্ত্রের নিয়ম লঙ্ঘন করেছে। ইতোপূর্বে কখনো এমন জরুরি সাধারণ সভা ডাকা হয়নি।’
শাপলা ফোরামের নতুন কমিটির সভাপতি প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘শিক্ষক সমিতির নির্বাচনকে ঘিরে আমরা সাধারণ সভা করেছি। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সভায় আলোচনা করে দুইটি কমিটি করা হয়েছে। ভুল বুঝাবুঝি ও ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য এখনো অনেকে ঝুলে আছেন। সভায় সর্বশেষ সময় পর্যন্ত ঐক্যে আসার কথা জানানো হয়েছে। এরপরেও তারা না আসলে ফোরামের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্যানেল ঘোষণা করা হবে।’
ঢাকা, ৪ ডিসেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: