ইবি লাইভ: ফোনালাপ ফাঁস হয়ে গেছে। ফেসেঁ যাচ্ছেন সেই শিক্ষক। কিন্তু তিনি থেমে নেই। রাত দিন নানা ধরনের তদবীর ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন তিনি। লোক লাগিয়েছেন। নগদ অর্থ নিয়েও বিভিন্ন দ্বারে দ্বারে ধর্ণা দিচ্ছেন বলে তথ্য মিলেছে।
কিন্তু এখন দেখার বিষয় তার বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এই অভিযোগ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষক ও সহকারী প্রক্টর রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে।
ফোনালাপের ভাষা ছিল “ওরে বলবি আমি চেষ্টা করবো। ১০ না, ১২ পর্যন্ত নিতে হবে। কারণ তোর তো কিছু থাইকতে হবে। থাইকতে হবে না?” “১২ পর্যন্ত হইলে হবে কী, তোর কিছু থাকলো। আর আমি ১০ পর্যন্ত হলেই এখানে কাজ করতে পারি।”
বন্ধুর সঙ্গে ফোনালাপে কথাগুলো বলছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষক ও সহকারী প্রক্টর রুহুল আমিন। এ ঘটনা প্রকাশ হওয়ায় রোববার তাকে একডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম হতে অব্যাহতি দিয়েছে প্রশাসন।
এ ব্যাপারে রুহুল আমিন ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, ‘কেউ কারো ব্যক্তিগত ফোনালাপ ফাঁস করতে পারে না। আর ওটা আমার ফোনালাপ এটা যাচাই না করে কিছু করা ঠিক নয়। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে কেউ এ কাজ করেছে। এই ক্রাইসিস থেকে বের হতে আমি আদালতের সহায়তা চেয়েছি।’
সূত্র মতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশকিছু বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। ২০১৫ সালের ২০শে অক্টোবরে ফিন্যান্স বিভাগের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয় প্রশাসন। একই সঙ্গে আরো তিনটি বিভাগেও নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
২০ অক্টোবরের সে দিনেরই ফোনালাপ ছিল এটি। তারও আগ থেকে যে তারা নিয়োগে মোটা অঙ্কের লেনদেন করে আসছেন তার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে ওই কল রেকর্ডে। সম্প্রতি তাদের দশ মিনিটের ওই ফোনালাপটি ফাঁস হয়েছে।
এতে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে প্রার্থীদের থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেনের তথ্য উঠে এসেছে। চার শ্রেণিতেই ফার্স্ট ক্লাস প্রার্থীদের সঙ্গে ১২ লাখের চুক্তি করতে নির্দেশ দেন বন্ধু আবদুল হাকিমকে। যিনি বর্তমানে এশিয়ান ইউনিভার্সিটির অ্যাকাউন্টিং বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন।
আর তিনটাতে ফার্স্ট ক্লাস হলে ১৫ লাখের কমে পারবেন না বলে সরাসরি জানিয়ে দেন রুহুল আমিন। একই সঙ্গে বন্ধুকে নিজের লোক দাবি করে তাকেও চাকরি পাইয়ে দেবেন বলে আশ্বাস দেন তিনি। এদিকে সহকারী প্রক্টর রুহুল কার মদদে এবং কার আশ্রয়ে এত বড় লেনদেন করছেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
শিক্ষক নিয়োগে ভিসি ও সিন্ডিকেটকে প্রভাবিত করতে পারে এমন কে আছেন তার উত্তর খুঁজছেন সবাই। ১০ লাখ টাকা হলে এদিকে (ইবিতে) কাজ করতে পারেন এমন কথায় হতবাক ক্যাম্পাসের সকলে। তিনি ওই টাকা কাকে দেন এবং কিভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন তারও মুখোশ উন্মোচন চাচ্ছেন অনেকে।
এদিকে রোববার এক জরুরি সভায় রুহুল আমিনকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক সকল কার্যক্রম হতে অব্যাহতি দিয়েছেন ভিসি। একই সঙ্গে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিনিয়র শিক্ষক বলেন, ‘সে তো সবেমাত্র যোগদান করলো। একজনের মদদে সহকারী প্রক্টরও হয়ে গেলো অল্পদিনে। ওর মাথার উপরের লোক ব্যতীত কোনো কিছুই করতে পারবে না। কার মাধ্যমে সে নিয়োগের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছে তা বের হওয়া এখন সময়ের দাবি।’
ঢাকা, ০৩ এপ্রিল (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমএইচ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: