ইবি লাইভ: আবাসিক হল বন্ধ রেখে ১২ সেপ্টেম্বর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শ্রেণীর চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু হয়েছে। পরীক্ষার আগেই শিক্ষার্থীদের সকল ফি পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে আবাসিক হলের সিট ভাড়া ও পরিবহন ফি মওকুফ করলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া একটি হলে পূর্ণ ফি আদায় করা হচ্ছে। ফলে ফি দিতে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা ও ছাত্র সংগঠনগুলো।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের কাছে হলের আনুষঙ্গিক ফি ৩০০ থেকে ৩৩২ টাকা নেয়া হচ্ছে। এছাড়া ২০১৭-১৮ থেকে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত আবাসিক শিক্ষার্থীদের থেকে হলের ফি ৯১২ টাকা পর্যন্ত এবং ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে স্নাতকোত্তরে ৪৮০ টাকা পর্যন্ত নেয়া হচ্ছে। এদিকে সাদ্দাম হোসেন হলে শিক্ষার্থীদের পূর্ণ ফি নেয়া হচ্ছে। তাদের এভাবেই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন হল কর্মকর্তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের বাসভাড়া ও হলের সিটভাড়া মওকুফ করা হলো।
হল কর্মকর্তাদের দাবি, প্রজ্ঞাপনে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ উল্লেখ থাকায় অন্যান্য শিক্ষাবর্ষের ফি আদায় করছেন তারা। এদিকে প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি প্রফেসর ড. তপন কুমার জোদ্দার জানিয়েছেন, ‘শিক্ষাবর্ষের স্থলে অর্থবছর হবে। চিঠির ভাষাগত ভুলের কারণে তারা বেশি টাকা নিয়ে থাকতে পারে। তবে প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভায় বিষয়টি সংশোধন করা হয়েছিল।’
এদিকে হলগুলোকে পরিচ্ছন্ন করার জন্য এ বছরের জুন মাসেই ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকার বাজেট দিয়েছে ইউজিসি। তবুও হল উন্নয়নসহ বিভিন্ন খাতে শিক্ষার্থীদের থেকে অতিরিক্ত ফি আদায় করছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ আয়ের নামে সুযোগ সুবিধা গ্রহণ না করেও স্বাস্থ্য পরীক্ষা, গ্রন্থাগার উন্নয়ন, ক্রীড়া, আইসিটি সেল, ইন্টারনেট, ইন্টারনেট রক্ষণাবেক্ষণ, কাউন্সিলিং, তৈজসপত্র, বৈদ্যুতিক, বিশ্ববিদ্যালয় ও হল উন্নয়ন ফিসহ অন্তত ১৪টি খাতে শিক্ষার্র্থীদের কাছে অতিরিক্ত ফি আদায় করছে কর্তৃপক্ষ। এতে ২০১৭-১৮ থেকে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত সেবা ছাড়াই শিক্ষার্থী প্রতি প্রায় ১ হাজার ২৮০ টাকা এবং ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত প্রায় ৪১৫ টাকা অতিরিক্ত গুনতে হচ্ছে।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব হলের আবাসিক ও ট্যুরিজম এ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী রিম্পা খাতুন বলেন, ‘সেবা না দিয়েই আমাদের থেকে ফি নেয়া হচ্ছে। প্রশাসন নামে মাত্র ফি মওকুফ করে আমাদের হাতে মুলো ধরিয়ে দিয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান লালন বলেন, ‘আমরা ভিসি স্যারের কাছে দাবি করার পর তিনি বলেছিলেন হলের সব ফি ও পরিবহন ফি মওকুফ করা হবে। এর মধ্যে শুভঙ্করের ফাঁকি থাকলে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘২০২০-২১ একাডেমিক ইয়ারের হলের সিটভাড়া ও পরিবহন ফি মওকুফ করা হয়েছে। কেউ বেশি টাকা দিয়ে থাকলে তা ফেরত পাবে। এর বাইরে শিক্ষার্থীদের অন্য সকল ফি প্রদান করতে হবে। সেবা না পেলেও শিক্ষার্থীদের সব ফি মওকুফ করা সম্ভব নয়।’
ঢাকা, ১৯ সেপ্টেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: