Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | রবিবার, ১২ই মে ২০২৪, ২৯শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com
নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে চুরি থামবে কবে?

প্রকাশিত: ৮ আগষ্ট ২০২১, ২২:১৬

আজাহার ইসলাম, ইবি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) চুরির মহড়া চলছে। গত এক বছরে ৩টি আবাসিক হল সহ মোট ৭টি চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। একেরপর এক চুরি-ছিনতাই ঘটলেও কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সর্বশেষ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম খালেদা জিয়া হলে গতকাল শনিবার (৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় আরেকটি চুরির ঘটনা প্রকাশ্যে আসে।

এসব চুরির ঘটনায় কর্তাব্যক্তি ও সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বের অবহেলায় অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। একই অভিযোগ তুলেছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়ন সংসদও। চুরির বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকেও নিন্দার ঝড় উঠেছে। একইসাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিয়েও বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল শনিবার (৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম খালেদা জিয়া হলের নয়টি কক্ষের সামনে ভাঙা তালা পড়ে থাকতে দেখেন আনসার সদস্যরা। এসময় তারা হলের গ্রিল কাটা ও কক্ষের ভেতরে সবকিছু এলোমেলো অবস্থায় দেখেন। হলের দক্ষিণ ব্লক বা পুরাতন ব্লকের দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ তলার নয়টি কক্ষের জিনিসপত্র চুরি হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে হল প্রশাসন। এছাড়া হলের ডাইনিং থেকে অন্তত ছয়-সাতটি বেসিনের স্টিলের কল চুরি হয়েছে। যেগুলো নতুন লাগানো হয়েছিল।

নিরাপত্তাকর্মীরা জানান, বেগম খালেদা জিয়া হলের কনস্ট্রাকশনের (রিপেয়ারিং) কাজ চলছিল। ঠিকাদারদের হাতেও চাবি দেওয়া ছিল। অন্যদিনের মত শ্রমিকরা কাজ করতে আসলে নিচ তলার বারান্দার গ্রিল ভাঙা দেখতে পান। এরপর শ্রমিকরা নিরাপত্তাকর্মীদের জানালে তারা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান।

এদিকে চুরির ঘটনায় এক বিবৃতিতে তিন দফা দাবি জানিয়েছে ইবি ছাত্র ইউনিয়ন সংসদ। তাদের দাবি, এক. শিক্ষার্থী শূন্য ক্যাম্পাসে হল ও একাডেমিক ভবনগুলোর পাশে উচু টাওয়ার নির্মাণ করে বাড়তি প্রহরী নিযুক্ত করতে হবে এবং পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় স্থাপনকৃত সিসি ক্যামেরাগুলো সচল ও ফুটেজ সংরক্ষণ করতে হবে। দুই. চুরি যাওয়া জিনিসপত্র উদ্ধার ও শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুরন দিতে হবে। তিন. এসব ঘটনা দ্রুত তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

বিবৃতিতে ইবি সংসদের সভাপতি নূরুন্নবী সবুজ ও সাধারণ সম্পাদক জি. কে. সাদিক ক্যাম্পাসে একের পর এক চুরির ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বলে দাবি করেন। তারা বলেন, শিক্ষার্থী শূন্য ক্যাম্পাসে চুরির ঘটনা অতীতে অনেক ঘটলেও প্রশাসন তা বন্ধ করতে পারেনি। ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশাসনের এসব ব্যর্থতার ফল দিতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। বিশ্ববিদ্যালয়ে একের পর এক চুরির ঘটনা কেবল বাইরে থেকে এসে করা সম্ভব না। এক্ষেত্রে অবশ্যই অভ্যন্তরীণ সংযোগ রয়েছে।

পরে রোববার (৮ আগস্ট) সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমান, ট্রেজারার প্রফেসর ড. আলমগীর হোসেন ভু্ইঁয়া, প্রক্টর প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন ও ইবি থানা পুলিশ।

পরিদর্শন শেষে প্রক্টর প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তবে কী হারিয়েছে তা মেয়েদের সঙ্গে কথা না বললে বোঝা যাচ্ছে না। হল কর্তৃপক্ষকে সংশ্লিষ্ট মেয়েদের সঙ্গে কথা বলতে বলেছি।’

ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টির খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। ঘটনাটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

উল্লেখ্য, করোনাকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদ্দাম হোসেন হলে, শহীদ জিয়াউর রহমান হলের চার কক্ষে, শেখ রাসেল হলের সাবমার্সিবল পাম্প, নির্মাণাধীন রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনে দুই ভ্যান টাইলস ও আট কার্টন ক্যাবল চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় হাতেনাতে আটক হয়েছিল চোর। তবে দায় স্বীকার করা চোরকে থানায় নিয়ে ‘নাবালক’ বলে ছেড়ে দেওয়া হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল সংলগ্ন এলাকায় এক ছাত্রীর মোবাইল ও ক্যাম্পাসে এক সত্তরোর্ধ বৃদ্ধের ভ্যান ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।

ঢাকা, ৮ এপ্রিল (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এআই


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ