ইবি লাইভ: বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহনে বাড়ি ফিরছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। বাস শিক্ষার্থীদের নিকটবর্তী বিভাগীয় শহর পর্যন্ত পৌঁছে দেবে বলে ক্যাম্পাসলাইভকে নিশ্চিত করেছেন পরিবহন প্রশাসক প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন।
এ লক্ষ্যে শুক্রবার (১৬ জুলাই) সকাল ৬ টায় ক্যাম্পাস, কুষ্টিয়ার কাস্টম মোড় ও ঝিনাইদহের আরাপপুর থেকে ৫টি বাস ঢাকা ও খুলনা বিভাগের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। ঢাকা, চট্রগ্রাম, ময়মনসিংহ, সিলেট ও বরিশাল বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য (ঢাকা পর্যন্ত) ৩টি ও খুলনা বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য ২টি বাস দেওয়া হয়েছে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহনে বাড়ি ফেরার সু্যোগ পেয়ে আনন্দিত ও উচ্ছ্বাসিত শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন তারা।
ক্যাম্পাস থেকে বরিশালের উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী রাসেল মুরাদ। ক্যাম্পাসলাইভকে তিনি বলেন, ‘গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ঈদে বাড়ি ফেরা নিয়ে চিন্তিত ছিলাম। পরে গণপরিবহন চলাচলের কথা শুনে আশার আলো দেখলেও কিছুটা ঝুকিপূর্ণ মনে হয়েছিল। ক্যাম্পাসের গাড়ি ঢাকা বিভাগের ভাঙ্গা পর্যন্ত পৌঁছাবে। যদিও মাঝপথে গাড়ি পরিবর্তন করতে হবে তবুও ক্যাম্পাসের বাসে বাড়ি ফিরতে পেরে উচ্ছ্বাসিত ও আনন্দিত। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, ছাত্র মৈত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’
ছাত্র মৈত্রী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আব্দুর রউফ ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, ‘বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার দাবি মেনে নিয়ে শিক্ষার্থীদের নিরাপদে বাড়ি পৌঁছানোর ব্যবস্থা করায় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। প্রশাসন শুরু থেকেই বিষয়টি ইতিবাচক ভাবে নিয়েছেন। ছাত্র মৈত্রী ভবিষ্যতেও শিক্ষার্থীদের স্বার্থে এভাবেই কাজ করে যাবে। সকলের ঈদ যাত্রা নিরাপদ হোক সেই প্রত্যাশা রইল।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, ‘আটকে পড়া শিক্ষার্থীদের চাওয়া পূরণ করতে পেরে আমরা আনন্দিত। শিক্ষার্থীদের বাড়ি ফেরাতে আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। ৫টি বাস বরাদ্দ থাকতেও পরবর্তীতে রাজবাড়ী মোর পর্যন্ত ৩৬ ফিটের একটি মিনিবাস বাড়াতে হয়েছে। আগামী রবিবার (১৮ জুলাই) রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাস ও কুষ্টিয়া থেকে আরও ৫/৬টি বাস ছেড়ে যাবে। শিক্ষার্থীরা নিরাপরে বাড়ি ফিরুক এটাই কামনা করি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবির পর খোঁজ খবর নিয়ে জানার চেষ্টা করেছি আশেপাশে কতজন শিক্ষার্থী রয়েছে। ভিসি স্যারও বিষয়টি পজিটিভলি নিয়েছিলেন। বাবা মায়ের কাছে শিক্ষার্থীরা ফিরতে পারছে এজন্য আমরা আনন্দিত। সংশ্লিষ্টরা চমৎকারভাবে কাজটি করেছে। তাদের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।’
প্রসঙ্গত, গত ৭ জুলাই আটকে পড়া শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহনে বিভাগীয় শহরে পৌঁছানোর দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র মৈত্রী। এর প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে আটকে পড়া শিক্ষার্থীদের তালিকার ভিত্তিতে পরিকল্পনা করার নির্দেশনা দেন।
পরে শিক্ষার্থীদের তালিকা তৈরি করতে গত ১২ জুলাই পর্যন্ত গুগল ফর্ম পূরণের নির্দেশনা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে মোট ৭৪৪ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেন। আবেদন করা মোট ৭৪৪ জন শিক্ষার্থী থেকে নিকটবর্তী জেলার ৮০ জনকে বাদ দেওয়া হয়েছে। মোট ৬৬৪ জন শিক্ষার্থী পরিবহন সেবা পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন।
দ্বিতীয় দিন যেসব রুটে বাস পরিচালিত হবে: (১৮ জুলাই)
রাজশাহী বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য ২/৩টি বাস-
ক্যাম্পাস-কুষ্টিয়া-নাটোর-রাজশাহী। রাজশাহী বা এর পার্শ্ববর্তী জেলার শিক্ষার্থীরা যাবে। যারা ক্যাম্পাস, ঝিনাইদহ, ক্যাম্পাস ও কুষ্টিয়া বা তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় থাকে।
রংপুর বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য ২/৩টি বাস-
ক্যাম্পাস-কুষ্টিয়া-নাটোর-বগুড়া-রংপুর। বগুড়া ও রংপুর বা এর পার্শ্ববর্তী জেলার শিক্ষার্থীরা যাবে। যারা ক্যাম্পাস, ঝিনাইদহ ও কুষ্টিয়া বা তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় থাকে।
ঢাকা, ১৬ জুলাই (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: