ইবি লাইভ: ইসলামী বিশ্বাদ্যালয়ের (ইবি) আম গাছ থেকে সম্প্রতি আম পাড়ায় এক শিক্ষার্থীকে থাপ্পড় মারেন বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক আরিফুল ইসলাম। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে সহকারী প্রক্টর পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এতে বিভাগের পক্ষে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ১২ জন শিক্ষার্থী। বিভাগের শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এনিয়ে চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা।
রবিবার বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। এতে বিভাগের পক্ষে ৩ শিক্ষাবর্ষের ১২ জন শিক্ষার্থী স্বাক্ষর করেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি ক্যাম্পাসে আম পাড়াকে কেন্দ্র করে স্নাতকোত্তরের এক শিক্ষার্থী এবং সাবেক সহকারী প্রক্টর ও বায়ােমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক আরিফুল ইসলাম স্যারের মাঝে একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উক্ত শিক্ষার্থী লিখিত অভিযােগের প্রেক্ষিতে আরিফুল ইসলামকে সহকারী প্রক্টর পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
এছাড়া ঘটনার পরের দিন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা দিনব্যাপী আম পাড়া কর্মসূচি পালন করে এবং সামাজিক যােগাযােগ মাধ্যমে আরিফুল ইসলামকে লাঞ্ছিত করে বলে স্মারকলিপিতে উল্লেখ রয়েছে।
এ ঘটনায় বিভাগের শিক্ষার্থীরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং ঘটনাটিকে যথাযথ তদন্তের সাপেক্ষে পুনর্বিবেচনার দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা। একইসাথে ওই শিক্ষককে অপমানের বিচার এবং পরবর্তিতে
কোন সাধারণ শিক্ষার্থী যেন বিশ্ববদ্যালয়ের কোন শিক্ষককে এরকম অপমান না করতে পারে তা নিশ্চিতকরণের দাবি জানায় তারা।
এছাড়া তদন্ত ছাড়াই তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে মর্মে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, প্রগতিশীল শিক্ষকদের সংগঠন শাপলা ফোরাম ও বঙ্গবন্ধু পরিষদ শিক্ষক ইউনিট বরাবর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে লিখিত আবেদন করেন অভিযুক্ত শিক্ষক। ওই শিক্ষকের আবেদনের প্রেক্ষিতে এ ঘটনাকে অনভিপ্রেত উল্লেখ করে সুষ্ঠু সমাধানের লক্ষ্যে তদন্ত কমিটি গঠনপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানায় শিক্ষক সমিতি ও প্রগতিশীল শিক্ষকদের সংগঠন শাপলা ফোরাম।
এদিকে বিভাগের শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। সাধারণ শিক্ষার্থীরা মনে করছেন এই স্মারকলিপিতে তাদের অপমান করা হয়েছে। এছাড়া শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের ছাড়াই বিভাগের প্যাড ইউজ করতে পারে কিনা এ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা সমালোচনার ঝড় তুলেছেন।
মাহমুদ হাসান রনি নামে সাবেক এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, ’১২ জন শিক্ষার্থী বনাম ১২০০০ জন। তোমরা গণ স্বাক্ষর কর্মসূচী শুরু কর। যাতে আর কোন মানুষের বাচ্চা ছাগল আর না বলতে পারে ইবিতে প্রতিবাদের দিন শেষ। এই ১২ জনকে নিয়ে ইবি বায়োমেডিকেল তেল মর্দন এসোসিয়েশন গঠনের আহবান জানাই। আরেকটি প্রশ্ন, শিক্ষার্থীরা চাইলেই কি শিক্ষকদের ছাড়াই বিভাগের প্যাড ইউজ করতে পারে?’
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী হাসানুর রহমান লিখেছেন, ‘ইবিতে চলছে ম্যাঙ্গো বিপ্লব। আম কাণ্ডে জ্ঞানহীন কিছু শিক্ষার্থীর কর্মকাণ্ডে আমি হতবাক।’
ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জেমস এক কমেন্টে লিখেছেন, বিচার তো উপযুক্ত ছিল। তার মত মানসিকতার লোক কিভাবে সহকারী প্রক্টর হিসেবে শিক্ষার্থী দের জন্য মঙ্গলজনক হতে পারে? মাননীয় উপাচার্য মহোদয় সঠিক পদক্ষেপই নিয়েছেন বলে মনে করি। তার এই দ্রুত পদক্ষেপ এর প্রশংসা করতে হয়।’
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী অনিল মো. মমিন লিখেছেন, ‘এরা কি স্বপ্রণোদিত তেলবাজ নাকি নিয়োগকৃত তা বুঝতে পারছি না। নিম্ন স্বাক্ষরকারীদের কাউকে চিনলে একটু মেনশন দিবেন। তৈলাক্ত মুখখানা দেখার খুব ইচ্ছে।’
আব্দুল্লাহ আল মুকিত নামে সাবেক এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘এগুলো কেমন সিগনেচার: ডিজিটাল নাকি ওয়েট সিগনেচার? এভাবে প্যাড, সিগনেচার ব্যাবহারের অনুমোদন কি আছে? এদেরকে কারণ দেখানোর নোটিশ দেওয়া উচিত।’
ঢাকা, ২ মে (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: