Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | সোমবার, ১৩ই মে ২০২৪, ৩০শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com
ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ

ইবি প্রক্টরিয়াল বডির হাতে একের পর এক শিক্ষক-শিক্ষার্থী লাঞ্ছিত

প্রকাশিত: ২৫ এপ্রিল ২০২১, ০০:৫৫

আজাহার ইসলাম, ইবি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রক্টরিয়াল বডির দ্বারা একের পর এক শিক্ষক-শিক্ষার্থী লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এসব ঘটনা প্রক্টরিয়াল বডি ক্ষমতার অপব্যবহার করছে বলে মনে করছেন সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ফলে বারবার প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে প্রক্টরিয়াল বডি।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, গত দুইবছরে একজন প্রক্টরসহ চার সহকারী প্রক্টরের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ উঠেছে। গত বছরের ৩০ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের লেকচারার হাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে থাপ্পড় মেরে দাঁত ফেলে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। ওই ছাত্রী ভাইয়া বলে সম্বোধন করায় তিনি এমন কথা বলেছেন বলে অভিযোগ করেছিলেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। পরে ওই ছাত্রী সংশ্লিষ্টদের বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন।

এদিকে গত ৩ নভেম্বর সদ্য সাবেক প্রক্টর ও আইসিটি বিভাগের প্রফেসর ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণের বিরুদ্ধে তুই তুকারি করে ৬ জন শিক্ষার্থীকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীকে থাপ্পড় মারাসহ শিক্ষার্থীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে এবছরের গত ১ জানুয়ারি আল-ফিকহ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের এক শিক্ষককে সবজি বাগান পরিচর্যার সময় হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল ব্যবস্থাপনা বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর এমএম নাসিমুজ্জামানের বিরুদ্ধে। তিনি সেসময় সহকারী প্রক্টরের দায়িত্ব পালন করছিলেন। পরে অভিযোগ প্রমাণ পেয়ে এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দাবির প্রেক্ষিতে নাসিমুজ্জামানকে সহকারী প্রক্টর পদ থেকে অব্যহতি দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক সহকারী প্রক্টর ও ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে ঘুরতে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রয়োজনীয় কাজেও শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এলে তাদের ক্যাম্পাস থেকে চলে যেতে বলেন। এছাড়া তিনি শিক্ষার্থীদের চুরি, ছিনতাই ও ডিবি পুলিশের ভয় দেখান বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া শফিকুলের বিরুদ্ধে সম্প্রতি আবাসিক কমিটির এক মিটিংয়ে এক সিনিয়র প্রফেসরকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছিল। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সর্বশেষ গতকাল শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) আম পাড়াকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের লেকচারার আরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে এক শিক্ষার্থীকে থাপ্পড় মারার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিন্দার ঝড় উঠেছে। এতে ‘আম পাড়া কর্মসূচি’ নামে অভিনব প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে ইবি ছাত্র ইউনিয়ন সংসদের সাধারণ সম্পাদক জিকে সাদিক ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, ‘প্রক্টরের দায়িত্ব শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দেওয়া। ইবির প্রক্টরিয়াল বডি এক্ষেত্রে প্রতিবারই ব্যর্থ হচ্ছে। একজন প্রক্টরের আচরণ পুলিশের মত হলে শিক্ষার্থীরা তাদের থেকে কী শিখবে? এটা এক প্রকার অনাধিকার চর্চা। অতি পেশাদারিত্ব দেখাতে গিয়ে উল্টো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে বসে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, ‘ কিছু কিছু যায়গায় সহকারী প্রক্টরদের আচরণ খারাপ হয়েছে। কেউ প্রক্টরিয়াল বডির দায়িত্বে থেকে নিজের খেয়ালখুশি মতো আচরণ করবে এটা কাম্য নয়। আশা করি এর পুণরাবৃত্তি হবেনা।’

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, ‘গতকালের ঘটনা নিয়ে প্রক্টরিয়াল বডিকে বসতে বলেছিলাম। তাদের কাছে লিখিত প্রতিবেদন চেয়েছি। ছেলে মেয়েরা আম পাড়বেই। সর্বোচ্চ বকাঝকা করা যায়। তাইবলে এমন আচরণ উচিত না। এটা শিক্ষকসম্মত আচরণ নয়।’

প্রক্টরিয়াল বডির আচরণ সম্পর্কে জানতে চাইলে ভিসি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অতীত আমি জানিনা। এগুলো নিয়ে আমরা সর্বোচ্চ কারণ দর্শাই বা যতটুক সম্ভব করি। আমি আসার পর বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে। আমি যখনই কোন অভিযোগ পেয়েছি, সাথে সাথে সংশ্লিষ্টদের ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছি।’

ঢাকা, ২৪ এপ্রিল (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এআই


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ