ইবি লাইভ: টানা দুইবার মেয়াদ পূর্ণ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সদ্য সাবেক প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. শাহিনুর রহমান। গত ২২ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় বারের মতো মেয়াদ পূর্ণ করেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি হিসেবে পথচলার ৮ বছর কেমন ছিল তা নিয়ে একান্ত সাক্ষাৎকারে নানা বিষয় তুলে ধরেছেন ড. শাহিনুর রহমান।
প্রফেসর ড. শাহিনুর রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য কর্তাব্যক্তিদের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃশ্যমান উন্নয়ন এবং শিক্ষার্থীদের উন্নয়নে কাজ করার চেষ্টা করেছি সবসময়। ৮ বছরের পথচলায় তিনজন দক্ষ উপাচার্য পেয়েছি। তাদের সাথে কাজ করে অত্যন্ত আনন্দ পেয়েছি। আরো আনন্দের বিষয় হলো যুগের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিভিন্ন বিভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চাকরির ক্ষেত্রে অনেক ভালো করছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকটা বিভাগ যেন সেশনজট মুক্ত থাকে সেজন্য আমরা সবসময় চেষ্টা করেছি। নিজেরা শ্রেণিকক্ষে ক্লাস নেওয়ার পাশাপাশি অন্য শিক্ষকদের অনুপ্রাণিত করেছি। তারা যেন বিভাগগুলো সেশনজটমুক্ত রাখে। এ বিশ্ববিদ্যালয় পুরোপুরি সেশনজটমুক্ত হয়েও গিয়েছিল প্রায়। তবে করোনা মহামারির কারণে একটু থমকে গেছে। তবে সেটাও কাটিয়ে উঠার চেষ্টা চলছে।’
সদ্য বিদায়ী প্রো-ভিসি শিক্ষার্থীদের বিষয়ে বলেন, ‘আমরা সকলেই আলাদা আলাদা মানুষ। শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীদেরকে শ্রেণিকক্ষে বা শ্রেণিকক্ষের বাইরে অনুপ্রেরণা দেওয়ার চেষ্টা করি। প্রতিটি শিক্ষার্থীর একটি বড় শক্তি আছে। তা হলো তাদের মেধা ও মনন অত্যন্ত শাণিত। একটি টার্গেটের সামনে রেখে যদি তার ধৈর্য্য, সহনশীলতা নিয়ে পড়াশোনা করে। তাহলে শিক্ষার্থীরা হতাশ হবেনা বলে আমি বিশ্বাস করি।’
তিনি আরো বলেন, ‘১০ বছর প্রাতিষ্ঠনিক শিক্ষা গ্রহণ করে যা শেখা যায় না, তার থেকে অনেক বেশি শেখা যায় এক বছরের বিভিন্ন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে। সকল অভিজ্ঞতামূলক কাজকে লেখাপড়ার সাথে সমন্বয় করে একজন শিক্ষার্থীকে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত জ্ঞানকে মনুষত্বের জায়গায় কাজে লাগানো যাবে না ততক্ষণ শিক্ষার মূল বহিঃপ্রকাশ ঘটবে না। আর এভাবেই দেশপ্রেম ও সংস্কৃতিবোধ তৈরি হবে। আমি বিশ্বাস করি মনুষত্যবোধ ও মানুষকে ভালোবাসার মধ্য দিয়ে আমাদের শিক্ষার্থীরা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরে এসব শিক্ষা অর্জন করে দেশের ও দশের সেবা করবে। দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তাহলেই আমরা শিক্ষক হিসেবে সার্থক।’
প্রাপ্তি ও প্রত্যাশার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি প্রশাসনিক ও অধ্যাপনার জায়গা এ দুটোকে আলাদা করছি না। কারণ আমি সবসময় শ্রেণিকক্ষেই পাঠদান করেছি। আমি নিজেকে সবসময় অধ্যাপক হিসেবেই ভেবেছি। প্রশাসনিক দায়িত্বও আমাকে সেই মনোভাব থেকে সরতে পারেনি। শিক্ষক হিসেবে আমি সবসময় চাই যেকোন মূল্যে আমাদের এই বিশ্ববিদ্যালয়টি আবাসিক হোক। আর সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থীর যেন প্রাতিষ্ঠানিক ই-মেইল আইডি থাকে।’
প্রসঙ্গত, প্রফেসর ড. শাহিনুর রহমানকে ২০১৩ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি হিসেবে নিয়োগ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর। এরপর ২০১৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ফের দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগ পান তিনি।
প্রো-ভিসি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার আগে তিনি খুলনা, জগন্নাথ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন। তিনি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ বোর্ডের বিশেষজ্ঞ সদস্য এবং পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (বিসিএস) নিয়োগ বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়াও তিনি মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন, ইংরেজি বিভাগের সভাপতি এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে ২ মেয়াদে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বর্তমানে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে অধ্যাপনার পাশাপাশি সমাজ কল্যাণ বিভাগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
ঢাকা, ০২ মার্চ (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: