ইবি লাইভ: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদভুক্ত ‘এফ’ ইউনিটের দুইটি বিভাগের ১০০ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল নিয়ে হৈচৈ শুরু হয়েছে। চলছে নানামুখি আলোচনা ও সমালোচনা। ক্যাম্পাসসহ সারা দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে চলছে তোলপাড়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক সিনিয়র শিক্ষকই সিন্ডিকেটের এ সিদ্ধান্তকে ভুল বলছেন। আবার কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও টুইটারে নানান মন্তব্য করছেন এর বিরুদ্ধে। তারা শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।
বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অ্যসিসট্যান্ট প্রফেসর আবু হেনা মোস্তফা জামাল তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘একটি ছাত্রও যদি মেধা দিয়ে চান্স পেয়ে থাকে তার ভর্তি কেন বাতিল হবে। যাদের গাফিলতি ছিল, যারা অপরাধী তারা শাস্তি পাক ঠিক আছে। কিন্তু ভর্তি বাতিল গ্রহণযোগ্য নয়।
তিনি আরও বলেন, আমি প্রশাসনের নীতি নির্ধারণীতে কাজ করেছি। সিন্ডিকেটের এ সিদ্ধান্ত অমানবিক এবং ইমমেচুইড। তদন্তে যেসব ছাত্র-ছাত্রী অবৈধ পন্থায় ভর্তি হয়েছে তাদের ভর্তি বাতিল হোক, সবার নয়। আমি ছাত্রদের আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করছি।’
সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্তের পর থেকেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন ভর্তি বাতিল হওয়া ১০০ শিক্ষার্থী। ৭ মার্চ তারা ক্যাম্পাসে আন্দোলন শুরু করেন। কিন্তু প্রক্টর প্রফেসর মাহবুবর রহমান তাদের কৌশলে ক্যাম্পাসে থেকে বের করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে আন্দোলনকারী একাধিক শিক্ষার্থী। এমনকি পরবর্তীতে আন্দোলনের উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধ করেছেন।
নিষেধ অমান্য করে ক্যাম্পাসে ঢুকলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকিও দিয়েছেন বলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন। পরে তারা বাধ্য হয়ে কুষ্টিয়া শহরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ওই ইউনিটে ভর্তি হওয়া আফসানা মিলি এবং মল্লিকা নামের দুই শিক্ষার্থী।
ওই ইউনিটে ভর্তি হওয়া একাধিক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসলাইভকে জানিয়েছেন, তাদের একটি প্রতিনিধিদল পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট করার জন্য ঢাকায় পৌঁছেছে এবং রিটের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন। আদালতের পরবর্তী কার্যদিবসের দিন তারা রিট করবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও মুসলিম বিধান বিভাগের এক সিনিয়র প্রফেসর বলেন, আইনি সহায়তা নিলে ফলাফল শিক্ষার্থীদের পক্ষে যাবে।
তিনি বলেন, জারজ সন্তান হত্যার কোনো বিধান নেই। কারণ সে পাপী নয়, পাপী তার জন্মদাতা এবং গর্ভধারিণী। সুতরাং যারা প্রশ্ন পেয়ে ভর্তি হয়েছে দোষী তারা নয়, যারা প্রশ্ন ফাঁস করেছে তারাই অপরাধী।
ওই প্রফেসর আরও বলেন, পরীক্ষার হলে উত্তর করার জন্য যে প্রশ্ন সরবারহ করা হয় তাকেই প্রশ্নপত্র বলে। কিন্তু পরীক্ষা শুরুর আগে কেউ প্রশ্ন পেলে তাকে প্রশ্নপত্র বলা যায় না। তা হলো তথ্য। তথ্য ফাঁসকারীই মূল অপরাধী।
জানাগেছে শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবে দাবী পূরণ না হওয়া পর্যন্ত।
ঢাকা, ০৯ মার্চ (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এএম
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: