ইবি লাইভ: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বিভিন্ন খাতে বর্ধিত ফি বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার দুপুর ১টা পর্যন্ত প্রশাসন ভবন ঘেরাও করে প্রশাসন ভবন গেটে অবস্থান নেয়।
ভিসি প্রফেসর ড. রাশিদ আসকারী বলেন, ‘অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সঙ্গতি রেখে ফি বৃদ্ধি করা হয়েছে। আর যেটা করা হয়েছে সেটা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের স্বার্থেই করা হয়েছে।’ ফি কমানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, আপাতত এ বিষয় নিয়ে কিছু ভাবছিনা। কেননা এটা একটা মিমাংসিত বিষয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মাহবুবর রহমান জানান, ‘এ আন্দোলনটা যথাযথ প্রক্রিয়ায় হচ্ছে না। এক বছর পরে হঠাৎ কেনো এ আন্দোলনের উদয় হলো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী বেলা ১২টায় প্রশাসন ভবনের সামনে প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মানববন্ধন শুরু হয়। মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা প্রশাসন ভবন ঘেরাও করে শ্লোগান দিতে থাকে।
এসময় সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মাহবুবর রহমান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আন্দোলন থামানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে প্রক্টর ঘটনাস্থল থেকে চলে গেলে শিক্ষার্থীরা প্রশাসন ভবনের গেটে অবস্থান নিয়ে শ্লোগান দিতে থাকে। পরে দুপুর ১টার দিকে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে আন্দোলন সমাপ্ত করে শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমাদের ওপর টাকার বোঝা চাপিয়ে প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করার পায়তারা করছে। এক বছরের ব্যবধানে ভর্তি ফিসহ সব ফি তিন গুন বাড়িয়ে দেওয়ায় মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা চালানো অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে। যতক্ষণ না আমাদের দাবি মেনে নেওয়া না হয় ততক্ষণ আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে সেশন চার্জ, হল চার্জ, সেমিস্টার পরীক্ষায় ফি বৃদ্ধি এবং পরিবহন খাতে তিন গুন ফি বৃদ্ধিসহ নামে-বেনামে খাতের প্রতিবাদে গত ১৫ অক্টোবর থেকে আন্দোলন করে আসছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল সাড়ে ১১টায় দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। সেখানে তারা বিভিন্ন খাতে বর্ধিত ফি বাতিলের দাবিতে শ্লোগান দিতে থাকে। আন্দোলনের একপর্যায়ে তারা ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের ষোঘণা দিয়ে প্রশাসন ভবনের গেটের সামনে গিয়ে অবস্থান নেয়।
এসময় ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক তাদের সাথে একাত্ত্বতা ঘোষনা করেন। আন্দোলন চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা তাদেরকে শান্তিপূর্ণ ভাবে দাবি আদায়ের আহ্বান করেন। পরে দুপুর দেড়টার দিকে আন্দোলনকারীরা আগামী রবিবারের মধ্যে তাদের দাবি মানা না হলে সোমবার থেকে কঠোর আন্দোলনের হুমকি দিয়ে কর্মসূচি আজকের মত শেষ করে।
ছাত্রলীগের একাত্ত্বতার বিষয়টি হাস্যকর আখ্যায়িত করে প্রশাসনিক এক কর্তাব্যক্তি বলেন, ফি বৃদ্ধির সময় ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের সাথে কথা বলেই এটা করা হয়েছিল।’
এবিষয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি শাহিনুর রহমান বলেন,‘ আমাদের সাথে কথা হয়েছিল কিন্তু এত বৃদ্ধি করা হবে সে বিষয়ে আমাদের অবহিত করা হয়নি।’
ঢাকা, ২৩ অক্টোবর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: