ইবি লাইভ : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ছাত্র চলে গেছেন না ফেরার দেশে। নাজমুল হাসান নামে ওই ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে পড়াশোনা করতেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন ছেড়ে ভয়ংকর পথ বেছে নিয়েছেন তিনি। শুক্রবার রাত পৌনে ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদ্দাম হোসেন হলের ২২৯ নং কক্ষে সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তিনি। আত্মহত্যার আগে তিনি ফেইসবুকে আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন- ‘একটা রিক্সা (রিকশা) চাই, শৈশব ও কৈশোরে ফিরে যাবার (যাওয়ার) জন্য’। এটাই তার লাস্ট ফেইসবুক স্ট্যাটাস। মৃত্যুর কয়েক ঘন্টা আগে তিনি ওই স্ট্যাটাস লিখে গেছেন। এই ছাত্রটি আর কোনদিন ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেবে না। থেমে গেছে তার ফেইসবুক এক্টিভিটি। থেমে গেছে জীবনের চাকা।
জানা গেছে, নাজমুলের বাড়ি সাতক্ষীরা জেলার তালা থানার বারাত নামক গ্রামে। তার বাবার নাম আব্দুল মালেক গাজী এবং মাতা রোকেয়া বেগম। তার সহপাঠীরা জানায়, নাজমুল হাই প্রেসারের রোগী। বেশ কিছুদিন ধরে সে অসুস্থ্যতার মধ্যে ছিল। প্রতিদিন সে ১২টি করে ট্যাবলেট সেবন করত এবং সবসময় বিষণ্ণতা ও হতাশার মধ্যে থাকতো।
নাজমুলের বন্ধু নাদিম, সাগর, আব্দুল্লাহ তার আত্মহত্যার বিষয়ে জানায়, দুর্গা পূজার ছুটিতে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় নাজমুলের রুমমেটরা সবাই বাড়িতে গেছে। এর মধ্যে নাজমুল গত কয়েকদিন ধরে একা রুমে থাকে। আমরা তাকে বিভিন্ন সময় বাইরে ঘুরতে যাওয়ার কথা বললেও সে যেতে তেমন রাজি হত না এবং সবসময় হতাশার মধ্যে থাকতো। শুক্রবার সন্ধ্যায় নাদিমকে ফোন করে তার রুমে আসতে বলে নাজমুল। পরে নাদিম নাজমুলের রুমে গিয়ে দেখে রুম ভেতর থেকে বন্ধ করা। এরপর নাদিম নাজমুলকে কয়েকবার ডাকার পরও কোন সাড়া না পেয়ে সে রুমের দরজা ধাক্কা দিতে থাকে।
একপর্যায়ে পাশের রুমের কয়েকজন শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে রুমের দরজা ভাঙ্গার চেষ্টা করে। এরপর দরজা ভেঙ্গে রুমে ঢুকে তারা দেখে নাজমুলের গলায় ফাঁস দেওয়া। এরপর তারা তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যায়। পরে মেডিকেল সেন্টারে কর্মরত ডাক্তার বদিউজ্জামান তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢাকা, ২০ অক্টোবর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//সিএস
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: