খুলনা লাইভ: খুলনায় নিখোঁজ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মুসলিম ছাত্রীকে ফুসলিয়ে ধর্মান্তরিত করে ‘লিভ টুগেদারে’র অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয় ওই ছাত্রীকে মাদকের নেশায় আসক্ত করায় সে অনেকটা হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে বলে পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন।
ধর্মান্তরিত ছাত্রী রিপা (ছদ্মনাম) বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সময় বর্ণমালা নামে একটি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হন। এসময় ওই সংগঠনের সদস্যদের প্ররোচনায় রিপা ধর্মান্তরিত হন। রিপার নাম দেয়া হয় স্বরস্বতী সিন্ধু নিষাদ। বিষয়টি রিপার পরিবারের সদস্যরা জানতে পেরে তাকে উদ্ধার করে বাসায় নিয়ে যায়।
এদিকে মানবাধিকার সংগঠনের পরিচয় দিয়ে বুধবার ওই ছাত্রীকে পরিবারের সদস্যদের কাছে থেকে তুলে নিয়ে যেতে চাইলে বিষয়টি প্রকাশ পায়। এসময় পুলিশ সদস্যরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। যদিও তারা বিষয়টি বুঝতে পেরে পরে চলে গেছেন।
রিপার পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, তাদের মেয়েকে জোর করে ধর্মান্তরিত করা হয়েছে। এবার বাড়ি নিয়ে এসেও শান্তি মিলছে না। মানবাধিকার সংগঠনের পরিচয় দিয়ে তাদের মেয়েকে ওরা নিয়ে যেতে যাচ্ছে। এবিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপও কামনা করেছেন তারা।
জানা গেছে, শনিবার সকালে খুলনা নগরীর গল্লামারী পুলিশ বক্সের সামনে থেকে দীর্ঘদিন নিখোঁজ ছাত্রী রিপাকে উদ্ধার করে তার পরিবারের সদস্যরা। চট্টগ্রামের এশিয়ান ওমেন্স ইউনিভার্সিটিতে অধ্যায়নকালে ‘বর্ণমালা’ নামের একটি সংগঠনের প্ররোচনায় চার পারা কোরআনের রিপাকে ধর্মান্তরিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের সদস্যদের। এসময় বোমনাথ নামে এক যুবকের সঙ্গে লিভ টুগেদারে লিপ্ত হয় ওই ছাত্রী।
খুলনার বটিয়াঘাটা গার্লস কলেজের লেকচারার রিপার মা বলেন, এইচএসসি পাশের পর চট্টগ্রামের এশিয়ান ওমেন্স ইউনিভার্সিটিতে ‘ইনফরমেশন এন্ড টেকনোলজি’ বিষয়ে অনার্সে ভর্তি হয় আমার মেয়ে। এর কিছুদিন পর অসৎ সঙ্গে মিশে সাবজেক্ট পরিবর্তন করে ‘বাংলা’য় ভর্তি হয় সে; যা আমাদের অজানা ছিল।
তবে রিপার অসংলগ্ন কথা-বার্তায় বুঝতে পারি সে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। পরে তাকে বুঝিয়ে বাড়ি নিয়ে এসে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা: এস.এম ফরিদুজ্জামানকে দেখাই। চিকিৎসা শেষ না করেই কিছুটা সুস্থ হয়ে পুনরায় সে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যায়।
এরপর থেকে তিন বছর আমাদের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। পরে সেখানে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, আমার মেয়ে রিপা হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছে। সে ‘বর্ণমালা’ নামের সংগঠনে যুক্ত হয়ে বোমনাথ নামের এক ছেলের সাথে ‘লিভ টুগেদার’ করছে। সেখানে অনেক চেষ্টা করেও তাকে আনতে ব্যর্থ হই আমরা। অসহায় হয়ে খালি হাতে ফিরে আসি আমি।
পরে বাড়ি থেকে আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে রিপাকে উদ্ধার করতে গেলে তার আর সন্ধান পাওয়া যায়নি। গত শনিবার কলেজে যাওয়ার সময় বোমনাথের সঙ্গে আমার মেয়েকে দেখতে পেয়ে তাকে উদ্ধার করে বাসায় নিয়ে আসি। এখন আমার মেয়েকে প্ররোচিত করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
বোমনাথ সরকার সাংবাদিকদের জানান, আমরা ইউটিউবে লী ও ত্রিশূল নামের দু’টি চ্যানেলে কাজ করি। এখানে ধর্মীয় বিশ্বাসের কোন জায়গা নেই। বয়সপ্রাপ্ত ও শিক্ষিত একটি মেয়েকে কেন আটকে রাখা হবে বলুন? ওকে যদি জোর করে ধর্মান্তরিত করে থাকি তাহলে এখন ওরা তাকে মুসলমান করে নিক।
সোনাডাঙ্গা থানার ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের ইনচার্জ এস আই ফারজানা ববি বলেন, মানবাধিকার সংগঠন ব্লাস্ট মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছিল, একটি প্রাপ্তবয়স্ক মেয়েকে আটকে রাখা হয়েছে। ওই মর্মে আমরা তার বাসায় গিয়েছিলাম। পরে বিষটি বুঝতে পেরে ও উর্ধতন কর্মকর্তাদের পরামর্শে আমরা ফিরে আসি।
ঢাকা, ০৫ সেপ্টেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: