ইবি লাইভ: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের এক ছাত্রীকে হয়রানিকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের হুমকি দিয়েছে প্রক্টর প্রফেসর ড. মাহবুবর রহমান। রবিবার আন্দোলনের দ্বিতীয় দিনে এ ঘটনা ঘটে। এসময় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর পরিচয় পত্র কেড়ে নেয় প্রক্টর।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা যায়, ছাত্রীকে হয়রানিকারী অভিযুক্ত শিক্ষক সঞ্জয় কুমারের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দিনের মত মানববন্ধন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এরপর তারা র্যালি নিয়ে বিভিন্ন অনুষদ ঘুরে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদে গেলে ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনকারীদের বাধা দেয়।
এর কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন প্রক্টর ড. মাহবুবর রহমান। এসময় তিনি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বহিরাগত বলে উল্লেখ করলে ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং প্রক্টরের সামনেই কয়েকজনকে মারধরও করে।
পরে বিভাগের অন্যান্য শিক্ষকরা এসে শিক্ষার্থীদের শান্ত করে। এরপর বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীর পরিচয় পত্র জব্দ করে তাদের বিরেুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেন প্রক্টর।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানায়, ‘প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এই বিভাগে এ ধরনের সমস্যা লেগেই রয়েছে। এখানে ছাত্রীরা নিরাপদ মনে করেনা এবং ভয়ে কারো বিরুদ্ধে মুখ খুলতে পারেনা। যদি কেউ কিছু বলে তাকে হয়রানি করা হয়। যার সর্বশেষ উদাহরণ আমাদের বোন চুমকির (ছদ্মনাম) মানসিক বিপর্যয়। আমরা অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার চাই। কিন্তু প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে আমাদের হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। তাহলে তারা আসলে কিসের পক্ষে?’
এ বিষয়ে প্রক্টর ড. মাহবুবর রহমান বলেন, ‘ক্যাম্পাসে কয়েকজন শিক্ষার্থী অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করলে প্রক্টরিয়াল বডি তাৎক্ষণিক ভাবে সেখানে উপস্থিত হয়। তিনি আরো বলেন ‘আমরা তাদের ভিডিও ও ছবি তুলে রেখেছি। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
জানা যায়, এর আগে রুহুল আমীন নামের বিভাগের অন্য আরেক শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্যে জড়িত থাকার দায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাময়িক শাস্তি ভোগ করেছেন। একইসাথে তার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারি ও চেক জালিয়াতির অভিযোগে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। এছাড়া আব্দুল হালিম নামের আরেক শিক্ষকের বাসভবনের আলমারি থেকে এক ছাত্রীকে আপত্তিকর অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয়রা উত্তম মাধ্যম দিয়ে বিষয়টির সমাধান করেন।
তবে আব্দুল হালিম ও রুহুল আমিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রক্টর প্রফেসর ড. মাহবুবর রহমানের আস্থাভাজন হওয়ায় তারা কৌশলে ছাড় পেয়ে যায়। এছাড়া বর্তমানে অভিযুক্ত সঞ্জয়ও প্রক্টরের অনুগত শিক্ষক হওয়ায় তিনিও পার পেয়ে যেতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন প্রতিশীল শিক্ষক নেতারা।
প্রসঙ্গত, ফিন্যান্স এ্যন্ড ব্যাংকিং বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর সঞ্জয় কুমার সরকারের দ্বারা ভয় ভীতি ও হয়রানির আতঙ্কে মানসিকভাবে বিকার গ্রস্থ হয়ে পড়ে উক্ত বিভাগের ও খালেদা জিয়া হলের আবাসিক ছাত্রী চুমকি। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষা বর্ষের ছাত্রী। হয়রানির ও বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকির ফলে ওই ছাত্রী এখন মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে।
ওই ছাত্রীর বাবা জানায়, ‘আমার মেয়ের অবস্থার অবনতি হয়েছে। তাকে শ্যামলির একটি মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা চিকিৎসা চলছে।’
ঢাকা, ০৮ জুলাই (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: