ইবি লাইভ : হাসানুর রহমান সাদ্দাম। পড়াশোনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মচারীর ঘরে জন্ম নিয়ে ওই ছাত্র ধীরে ধীরে মাদকের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে তিনি মাদক সাপ্লাই ও পাচারের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে ওঠেন। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্পটে মাদক সরবরাহকারীদের মধ্যে তার নাম সর্বপ্রথম চলে আসে। একসময় তিনি নিজেকে ক্যাম্পাসে ‘মাদক সম্রাট’ হিসেবেই পরিচয় দিতে থাকেন। ধীরে ধীরে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন তিনি। মাদকের জন্য ছাত্রীকে প্রকাশ্যে পেটানোরও নজির রয়েছে তার। এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হলেও তিনি পেশা ও নেশা ছাড়েননি। মাদক সেবন ও ব্যবসার অভিযোগে বেশ কয়েকবার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেও অদৃশ্য ক্ষমতাবলে ছাড়াও পেয়ে যান। আবারো ক্যাম্পাসে এসে মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন তিনি।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের আলোচিত সেই ‘মাদক সম্রাট’কে অবশেষে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোববার (১৩ মে) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক এলাকা থেকে মাদক সেবনরত অবস্থায় তাকে আটক করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে মামলা দায়ের করে কুষ্টিয়া আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
থানা সূত্র জানায়, মদপানে মাতাল অবস্থায় ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। বেশকিছু দিন ধরে সাদ্দাম মাতাল অবস্থায় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে প্রকাশ্যে মাতলামি, শিক্ষার্থীদের কাছে টাকা দাবিসহ শিক্ষার্থীদের নামে বিভিন্ন ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য করতে শোনা গেছে।
জানা যায়, মাদক সেবন ও ক্যাম্পাসে সরবরাহকরণসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে তার নামে। ইতিপূর্বে একই অভিযোগে বেশ কয়েকবার তাকে আটক করা হলেও তার বাবা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারি হওয়ার সুবাদে প্রশাসনের যোগসাজসে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে সাদ্দাম মাদক বিক্রয় সিন্ডিকেটের সদস্য।
এ বিষয়ে ইবি থানার ওসি রতন শেখ বলেন, মাদক সম্রাট হাছানুর রহমান সাদ্দামকে আটক করা হয়েছে। তাকে মামলা দিয়ে কুষ্টিয়া কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে।
জানা গেছে, গেল বছরের ১০অক্টোবর তাকে বিদেশী মদসহ মদ্যপ অবস্থায় আটক করে ইবি থানা পুলিশ। ২০১৫ সালের দিকে নেশা করার টাকা না দেয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেশিয়ামের পেছনে প্রকাশ্যে এক ছাত্রীকে বেদম প্রহার করে। এর দায়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে সাময়িক বহিষ্কার করে। সর্বশেষ গত ২মে শবে-বরাতের রাতে অতিরিক্ত মাদক সেবনের মাতল হয়ে ক্যাম্পাসের জিয়া মোড় এলাকায় মাতলামী এবং বিভিন্ন শিক্ষার্থীকে নানা হুমকি এবং মারধর করার অভিযোগ রয়েছে। এসময় সাদ্দাম এক শিক্ষার্থীকে তার ব্যবহৃত মোবাইল ছুড়ে মারে। একই সময় চায়ের দোকানে অবস্থান নেয়া আইন বিভাগের প্রফেসর ড. শাহজাহান মন্ডলকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। পরে মাতাল অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্স যোগে বাড়ি পাঠিয়ে দেন শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা হালিম। হাছানুর রহমান সাদ্দাম নিজেকে প্রকাশ্যে মাদক সম্রাট হিসেবে দাবি করে থাকেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। তার বাড়ি লক্ষীপুর গ্রামে।
ঢাকা, ১৫ মে (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//সিএস
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: