ইবি লাইভ: নানান বাধা উপেক্ষা করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) কোটা প্রজ্ঞাপনের দাবিতে মানববন্ধন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। কোটা বাতিলের ঘোষণা অতি শীঘ্রই প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন তারা। ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’র ব্যানারে মানববন্ধন করেন তারা।
মানববন্ধনের প্রাক্কালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের হুমকি-ধামকি ও বাধার সম্মুখীন হন তারা। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেট সংলগ্ন মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব চত্বরের পাদদেশে এ মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বুধবার বেলা সাড়ে বারোটায় মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিবের সামনে আন্দোলনকারীরা মানববন্ধন করতে গেলে এসময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহিনুর রহমান শাহিন ও সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা হালিম তাদের বাধা দেয়।
আন্দোলনে অংশগ্রহনকারী একাধিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, তাদেরকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। বিভিন্ন হলে অবস্থানকারী শিক্ষার্থীরা এর আগে যারা কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করেছে তাদেরকেও ভয়-ভীতি দেখানো হচ্ছে। বলা হচ্ছে তারা যেন মানববন্ধনে অংশগ্রহন না করে।
শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহিনুর রহমান শাহিন ও সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা হালিম এসে প্রক্টরকে তাদের ছবি তুলে রাখতে বলেন।
এসময় শাখা সভাপতি শাহিন তাদের প্রত্যেকের ছবি দেখে চৌদ্দগুষ্ঠি উদ্ধার করার হুমকি দেয়।
এর আগে আন্দোলনকারীদের সড়ক অবরোধ থেকে ফিরিয়ে আনতে গিয়ে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা পূরণ করেনি। গত ১২ই এপ্রিল আন্দোলনে অংশ নেয়ায় ২২ শিক্ষার্থীকে হল থেকে নামিয়ে দেয় ছাত্রলীগ। পরে বিভিন্ন চাপে পড়ে তাদের আবার ফিরিয়ে আনা হয়। এর আগে আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিয়ে বাধা দেয় ইবি ছাত্রলীগের নেতারা।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা হালিম ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, আমি আর সভাপতি শাহিন ভাই মানববন্ধনের ওখানে প্রক্টরের কাছে চিঠি দিতে গিয়েছিলাম। আমরা কোন হুমকি দেইনি।
মানববন্ধনে প্রায় দেড় শতাধিক ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী ছাত্রলীগের টেন্টে অবস্থান করে এবং শিক্ষার্থীদের গতিরোধ করে । এদিকে মানববন্ধন শেষে করে শিক্ষার্থীরা র্যালি নিয়ে যেতে চাইলে এসময় প্রক্টর ও ছাত্রলীগের বাধার মুখে পড়েন তারা।
পরে তারা আবার ঐ একই স্থানে মানববন্ধন করে। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমানকে আন্দোলকারীদের শনাক্তকরণে মোবাইলে ছবি তুলতে দেখা যায়।
তিনি মানববন্ধনে আগত শিক্ষার্থীদের ভিডিও ফুটেজ ধারণ করেন তার ব্যক্তিগত স্মার্টফোনে। প্রক্টর বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও সে বাধা উপেক্ষা করে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন চালিয়ে যান শিক্ষার্থীরা।
এদিকে ছাত্রলীগের ভয়ে মানববন্ধনে খুব অল্পসংখ্যক শিক্ষার্থীকে অংশগ্রহন করতে দেখা যায়। মানববন্ধনে আন্দোলনকারীরা দাবি করেন, মহান জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে কোটা সংস্কারের যে যুগান্তকারী ঘোষণা দিয়েছেন তা দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করতে হবে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের যদি কোন বাধা ও হয়রানি করা হয় বাংলার ছাত্রসমাজ ঐক্যবদ্ধভাবে তার দাঁতভাঙা জবাব দিবে বলে ঘোষণা দেন তারা।
এছাড়া আগামীতে কেন্দ্র থেকে যখনই কোন ঘোষণা আসবে তখনই সে ঘোষণা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতিও দেন আন্দোলনকারীরা।
ঢাকা, ৯ মে (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিএসসি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: